সরকারি হাসপাতালেই শুরু হচ্ছে চিকিৎসকদের ‘প্র্যাকটিস’, ফি ৫০০ টাকা


সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা দায়িত্ব পালনের বাইরে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও প্রাইভেট চেম্বারে প্র্যাকটিস করে থাকেন। ডাক্তারদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসের কারণে সরকারি হাসপাতালে রোগীরা সঠিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন-এমন অভিযোগ বারবার উঠেছে। এখন থেকে চিকিৎসকরা নিজ কর্মস্থলেই প্র্যাকটিস করতে পারবেন। এই সুযোগ দিয়ে রোগী প্রতি ৫০০ টাকা ফি নির্ধারণ করেছে সরকার। আগামী ৩০ মার্চ থেকে পাইলট প্রকল্প হিসেবে কয়েকটি হাসপাতালে এই কার্যক্রম শুরু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সোমবার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন মন্ত্রী। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, সবার সঙ্গে আলোচনা করে আগামী ৩০ মার্চ থেকে পাইলট প্রকল্প হিসেবে ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস শুরু করব। চিকিৎসকরা প্রাতিষ্ঠানিক প্র্যাকটিস এখন করবেন সরকারি হাসপাতালেই। প্রথমে আমরা কয়েকটি জেলা হাসপাতালে এই কার্যক্রম শুরু করব। ১০টি জেলা হাসপাতালে এবং ২০টি উপজেলায় এই কার্যক্রম শুরু হবে। আমরা দেখব, সেখানে কেমন কার্যক্রম চলছে। সেখানে যদি কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকে, আমরা সেটা সংশোধন করে পর্যায়ক্রমে ৫০০টি উপজেলা এবং ৬৪ জেলায় বাস্তবায়ন করব। মন্ত্রী জানান, বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চিকিৎসকরা সরকারি হাসপাতালে চেম্বার করবেন। সপ্তাহে দুদিন আপাতত এই কার্যক্রম চলবে। তাদের এই সেবা দেওয়ার জন্য সম্মানি নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই সম্মানির একটি অংশ চিকিৎসক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী এবং আরেকটি অংশ হাসপাতাল পাবে। তিনি বলেন, পাশাপাশি ছোটখাটো সার্জারি, টেস্টের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সেখান থেকেও খরচের অংশ হাসপাতাল পাবে। আপাতত আমরা এভাবেই কাজটি শুরু করতে যাচ্ছি। এই সেবার যুক্তিকতা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত চিকিৎসকরা সরকারি হাসপাতালে সেবা দেন। তারপর সিনিয়র চিকিৎসকরা হাসপাতালে থাকেন না। এরপরেও অনেক মানুষের চিকিৎসা পরামর্শ ও টেস্টের প্রয়োজন হয়। চিকিৎসক না থাকায় অনেক মানুষের কষ্ট হয়, আমরা সেই কষ্ট লাঘবের জন্য এই দ্বিতীয় শিফট চালু করেছি। জাহিদ মালেক জানান, এই সেবার জন্য অধ্যাপকের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০০ টাকা। এর মধ্যে ৪০০ টাকা চিকিৎসক পাবেন, সেবার সহায়তাকারী পাবেন ৫০ টাকা এবং হাসপাতাল পাবে ৫০ টাকা। এছাড়া সহযোগী অধ্যাপক বা সিনিয়র কনসালটেন্টের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০০ টাকা, যার ৩০০ টাকা চিকিৎসক পাবেন। সহকারী অধ্যাপক বা জুনিয়র কনসালটেন্ট, বা পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রিধারী চিকিৎসকের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০০ টাকা, যার ২০০ টাকা চিকিৎসক পাবেন। এমবিবিএস বা বিডিএস বা সমমনা ডিগ্রিধারী চিকিৎসকদের ফি ২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, এর মধ্যে ১৫০ টাকা চিকিৎসক পাবেন। মন্ত্রী আরও জানান, এছাড়া লোকাল এনেস্থেশিয়া প্রয়োগে ছোট সার্জারির ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ ফি ৮০০ টাকা এবং সার্জারির ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ ফি ১ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ সময় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মো. খুরশিদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির উপস্থিত ছিলেন।