রাজধানীতে তীব্র যানজট, ভোগান্তি চরমে


গতকাল যানজটের পর আজ মঙ্গলবারও রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে সকাল থেকে তীব্র যানজট। যানজটের কারণে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন নগরবাসী। মোহাম্মদপুর থেকে বিজয় সরণি মাত্র সাড়ে তিন কিলোমিটারের পথ। স্বাভাবিক সময়ে বাসে করে এই পথ পাড়ি দিতে সময় লাগতো সর্বোচ্চ ১০ মিনিট। কিন্তু ভয়াবহ যানজটের কারণে আজ সময় লেগেছে এক ঘণ্টার মতো। সেখান থেকে নতুনবাজার মাথাভাঙ্গা থানার সামনের সড়কে আসতে সময় লেগেছে আরও সোয়া এক ঘণ্টা। সবমিলিয়ে মোহাম্মদপুর থেকে নতুনবাজার আসতে দুই ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে। কথাগুলো বলছিলেন একটি বায়িং হাউসের কর্মী মাসুম আহম্মেদ। শুধু মাসুম নন, তার মতো মঙ্গলবার সকালে যারা রাজধানীতে বের হয়েছিলেন এভাবেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা পথে আটকে থাকতে হয়েছে তাদের। ১০ মিনিটের পথ যেতে ঘাম ছুটেছে। দুপুর গড়াতে চললেও এখনো সেই যানজটের চিত্র কাটেনি। সাড়ে ১১টার দিকে মিরপুর-১ থেকে বিজয় সরণী হয়ে গুলশানে এসেছেন করিম হোসেন। গুলশানে নাভানা টাওয়ারে সামনের সড়কে তার সঙ্গে কথা হচ্ছিল। করিম বলেন, সকাল নয়টায় বের হয়েছি। এখন সাড়ে ১১টা বাজে। আগে যেখানে আসতে আমার বড়জোর ৪৫ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা লাগতো। আজ সেখানে আড়াই ঘণ্টা লেগে গেল। তার কথা শেষ না হতেই আরেক বলছিলেন, আমিও মিরপুর থেকে এসেছি। কিন্তু জাহাঙ্গীর গেটের এসে বাস থেমে যায়। বাধ্য হয়ে সেখান থেকে মহাখালী হেঁটে এসেছি। তারপর সেখান থেকে আবারও আরেকটি বাসে গুলশান এলাম। মিরপুর থেকে প্রতিদিন পল্টনে অফিস করেন নাছরিন। অন্যদিন তার ঘণ্টা খানেক লাগতো। কিন্তু আজ ছিল পুরাই ব্যতীক্রম। সকাল ৯টায় বাসা থেকে বের হয়ে তার অফিস পৌঁছতেই সময় লেগেছে তিন ঘণ্টা। এই পথে শুধুমাত্র শাহবাগ থেকে পল্টন যেতে সময় লেগেছে এক ঘণ্টা। মঙ্গলবার সকাল থেকে নগরজুড়ে তীব্র্র যানজট লক্ষ্য করা গেছে। নগরীর প্রতিটি সড়কে ছিল যানবাহনের জট। বিশেষ করে উত্তরা থেকে মহাখালী, পল্টন থেকে কুড়িল, মিরপুর থেকে ফার্মগেট, বিজয় সরনী থেকে মহাখালী এবং মহাখালী থেকে সাতরাস্তা পর্যন্ত ছিল ভয়াবহ যানজট। প্রতিটি সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে ছিল যানবাহন। ফলে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদেরও এই অবস্থা সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিশেষ করে বিজয় সরণী টু জাহাঙ্গীর গেট যেতে অনেকের ঘাম ছুটেছে। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ভবনের সামনে গেলেই থমকে যাচ্ছে প্রতিটি যানবাহন। ঘণ্টা ছাড়া কোনো বাস ছাড়ছে না। বিশেষ করে উত্তরগামী বিভিন্ন সড়কগুলোতে এই যানজটের মাত্রাটা বেশি লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়াও বাড্ডার প্রগতি সরণির দুই লেন, রামপুরা, রমনার সার্কিট হাউজ রোড, কাকরাইলের সড়কে বাড়তি যানবাহনের চাপ রয়েছে। ট্রাফিক বিভাগ জানিয়েছে, আজ সড়কে যানবাহনের চাপ বেশি হওয়ায় এমন হচ্ছে। তাছাড়া রোজার কারণে মানুষের রাস্তায় নামার সময় বদলেছে। সকালের বদলে ৯টার পর থেকে চাপ পড়ছে সড়কে। একযোগে মানুষ গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নামায় চাপটা ভয়াবহ হয়েছে। ডিএমপির ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগের শেরে বাংলা নগর এলাকার সহকারী পুলিশ কমিশনার তারেক সেকান্দার বলেন, আগারগাঁও থেকে ছেড়ে আসা যানবাহনগুলো ওখানে এসে চাপে পড়ছে। তাছাড়া বিজয় সরণীর সিগন্যালের চাপ তো থাকেই। ডিএমপির ট্রাফিক মহাখালীর সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল হোসেন বলেন, মহাখালী গাউসুল আজম মসজিদের ওখানে রাস্তা কাটা ছিল। যে কারণে কাল বেশ তালগোল পাকিয়েছিল। তবে লাভ রোডে চাপ আছে।