ঈদের পর কেমন আন্দোলন হবে, ধারণা দিল গণতন্ত্র মঞ্চ


ঈদের পর আন্দোলন আরও তীব্র হবে বলে জানিয়েছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। তারা বলেন, রোজার মাস বলে আন্দোলন তীব্র করতে পারছেন না। ঈদ যাবে, মানুষ ঢাকায় ফিরবে। আবারো রাজপথে মিছিল শুরু হবে। সরকারের বুকে কাঁপন ধরে যাবে। এমন আন্দোলন হবে শুধু দেশ নয়, বিশ্বের বিবেক জেগে উঠবে। বর্তমান সরকারকে চলে যেতে বাধ্য করা হবে। সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে গণতন্ত্রের মঞ্চের নেতারা এসব কথা বলেন। ‘প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ও সাংবাদিক শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা, র‌্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যু এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে’ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। মঞ্চের অন্যতম নেতা ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সরকার ভয়ে আছে। কারণ, ধীরে ধীরে সর্বস্তরের মানুষ প্রতিবাদী হচ্ছে। এই সরকারের হাতে দেশ নিরাপদ নয়। এ সরকার মানুষকে ভোট দিতে দেয় না। তারা রাজনীতিকদের নির্যাতন করে। এখন পর্যন্ত নির্যাতন ও গ্রেফতার চালু রয়েছে। মান্না বলেন, তিনি (শেখ হাসিনা) যতদিন ক্ষমতায় আছেন ততদিন পর্যন্ত তার অধীনে ভোটে যাব না। রোজা ও ঈদের পর চিন্তাভাবনা করে রাজপথে আন্দোলনে নামবে গণতন্ত্র মঞ্চ। মান্না বলেন, আগামীতে আন্দোলন ছাড়া কোনো মুক্তি নেই। আন্দোলনের মাধ্যমে বিজয় অর্জন করতে পারলে মুক্তি পাব; না হলে এই সরকার জনগণের টুঁটি চেপে ধরবে। ওরা পকেট কেটেছে, লুট করেছে। এর পর মানুষের জীবনের ওপর হামলা করবে। বিজয়ের পথে লড়াই শুরু করে নিশ্চয়ই জয়যুক্ত হব। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সরকার প্রচণ্ডভাবে নার্ভাস। সরকার খুবই টেনশনে। এক সপ্তাহ গেলে আরেক সপ্তাহ কিভাবে যাবে, রোজার মাসের পরে বাংলাদেশে কী হবে এসব নিয়ে সরকার গভীর উৎকণ্ঠার মধ্যে আছে। সাইফুল হক প্রশ্ন করেন, ২০১৪ সালের একতরফা নির্বাচন, ২০১৮ সালে রাতের ভোটে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়নি? মামলা না হতেই সুলতানা জেসমিনকে আটকের পর র‌্যাবের হেফাজতে তার মৃত্যুর কারণে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়নি? গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, মানুষ যখন খেতে পায় না, তখন ক্ষমতাসীনেরা বিলাসী জীবনযাপন করে। দেশে ৮০ ভাগ মানুষের কাছে স্বাধীনতা মানে হচ্ছে, মাছ, মাংস, চালের স্বাধীনতা। সরকার যে মাথাপিছু আয়ের কথা বলে, তার সঙ্গে সাধারণ মানুষের জীবনের বাস্তবতার কোনো মিল নেই। দমন-পীড়নের জন্য সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ সময় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে ‘গণবিরোধী আইন’ আখ্যা দেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী হাসনাত কাইয়ুম। তিনি বলেন, সরকার গণবিরোধী আইন করতে সংবিধান, সংসদকে ব্যবহার করছে। গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, আওয়ামী লীগ বিদেশি গণমাধ্যমে টাকা ঢেলে দেশের উন্নয়ন প্রচার করছে। এসব দেখে হতাশ হওয়া যাবে না। বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, মোশাররফ হোসেন, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ কায়সার, ভাসানী অনুসারী পরিষদের হাবিবুর রহমান রিজু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির আকবর খান, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাধনা মহল প্রমুখ।