ট্রেনের টিকিট যেন লটারি অনলাইনে জটিলতা
অনলাইন নিউজ ডেক্স
ঈদযাত্রার সব টিকিট অনলাইনে দেওয়ায় উত্তরবঙ্গগামী এবং ময়মনসিংহ হয়ে চলা ট্রেনের টিকিট এখন অনেকটা হয়ে পড়েছে লটারি পাওয়ার মতো। ভাগ্য ভালো হলে মেলে। গতকাল সোমবার দেওয়া হয় আগামী ২০ এপ্রিলের ট্রেনের টিকিট। আগের দিনগুলোর মতো গতকালও এ অঞ্চলের ট্রেনের টিকিট ফুরিয়ে যায় মিনিটের মধ্যে। বাকি কিছু গন্তব্যের টিকিট দিনভর মিললেও পড়তে হয়েছে অনলাইন জটিলতায়।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২২ এপ্রিল ঈদুল ফিতর। গতকাল নির্বাহী আদেশে ২০ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। এর আগের দিন শবেকদরের ছুটি। সেই হিসাবে ঈদের ছুটি শুরু হচ্ছে ১৮ এপ্রিল অফিস শেষে। ১৮ এবং ১৯ এপ্রিলের টিকিট আগেই দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিক্রি হবে ২১ এপ্রিলের টিকিট। এর মধ্য দিয়ে শেষ হবে ঈদযাত্রার আগাম টিকিট কেনার ‘অনলাইন যুদ্ধ’। তবে অবিক্রীত সাপেক্ষে ট্রেন যাত্রার ১৫ মিনিট আগ পর্যন্ত কেনা যাবে টিকিট। এদিকে অনলাইনে সব টিকিট বিক্রি হওয়ায় এ বছর ভিড় নেই স্টেশনে। তবে সামাজিক যোগাযোগের নানা মাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে যাত্রীদের ভোগান্তির খবর। আরিফুর শান্ত নামে একজন যাত্রী রেলওয়ে ফ্যান ফোরামের কমেন্টের ঘরে নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ঢাকা-পঞ্চগড় রুটের ‘একতা এক্সপ্রেস’, ‘দ্রুতযান এক্সপ্রেস’ কিংবা ‘পঞ্চগড় এক্সপ্রেস’-এর চারটি টিকিটের জন্য চার দিন চেষ্টা করেও পাননি। রোববার রাত ৩টায় দেখেন, পর্যাপ্ত টিকিট দেখাচ্ছে রেলের ওয়েবসাইটে।
তিনি আরও লিখেছেন, ওয়েবসাইটে ঢুকতে দুটি মোবাইল ফোন এবং একটি ল্যাপটপ থেকে ঠিক সকাল ৭টা ৫৯ মিনিট ৫৯ সেকেন্ডে তিনজন মিলে ক্লিক করেন। একটি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রবেশ করতে পারলেও, বাকি দুটি ব্যর্থ হয়। ওই দুটিকে ‘কিউ’-এ রাখা হয়। তিনি একতার এসি চারটি টিকিট খালি দেখতে পান। কিন্তু ক্লিক করে দেখেন ‘বুক নাউ’ অপশনটি কাজ করছে না। উত্তরবঙ্গগামী ট্রেনগুলোর আরও বহু যাত্রী একই অভিযোগ জানিয়েছেন। অনেকেই ‘বুক নাউ’ করতে পারলেও ‘সিট সিলেকশন’ করতে পারেননি। আবার কেউ তা পারলেও পারচেজ অপশন পর্যন্ত গিয়ে টাকা পরিশোধ করতে পারেননি। তাই টিকিট পাননি। এর জবাবে ট্রেনের টিকিট বিক্রির দায়িত্বে থাকা সহজ-সিনোসিস-ভিনসেন্ট জেভির ভাইস প্রেসিডেন্ট যুবায়ের হোসেন বলেন, যে টিকিট ওই যাত্রী বুক করার চেষ্টা করছিলেন, একই সময়ে হয়তো আরও ৫০০ জন একই চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। আগে আসা ৫০০ জনের ক্লিক প্রসেস করার পর তিনি সুযোগ পাবেন। সে কারণেই ‘বুক নাউ’ তাঁর জন্য কার্যকর ছিল না। যিনি আগে আসবেন, তাঁর ক্লিক আগে প্রসেস হবে।
পদ্মা সেতু চালুর পর দক্ষিণবঙ্গগামী ট্রেনের টিকিটের চাহিদা কমেছে। তবে এই রুটের টিকিটের জন্যও অনলাইন জটিলতায় ভুগতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন একাধিক যাত্রী। জহিরুল ইসলাম নামের এক যাত্রী জানিয়েছেন, সকাল ৮টা থেকে তিন ঘণ্টার চেষ্টায় তিনটি টিকিট পেয়েছেন। কিন্তু বারবার বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। কখনও বুক নাউ অপশন কাজ না করায়, আবার কখনও পেমেন্ট ফেল হওয়ায়। তবে আগের দিনগুলোর ধারাবাহিকতায় গতকালও রাত ৮টার সময় চট্টগ্রাম এবং সিলেট রুটের ট্রেনের এক-দুটি করে টিকিট অবিক্রীত দেখা গেছে।
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।