বিএনপি বর্জন করলেও প্রার্থী হবেন আরিফ
অনলাইন নিউজ ডেক্স
সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচন বিএনপি বর্জন করলেও ফের প্রার্থী হবেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। দল থেকে প্রার্থী হলে বহিষ্কারের খক্ষ নামে তাই পদত্যাগ করেই প্রার্থী হবেন তিনি। এ ব্যাপারে পরামর্শ নিতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করতে লন্ডনে গেছেন তিনি। রোববার দেখা করার কথা থাকলেও অজানা কারণে তা হয়নি। তবে সোমবার দেখা করার কথা ছিল। হাইকমান্ডের কাছ থেকে গ্রিন বা রেড যে সিগন্যালই পান না কেনম নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর মোটেও ইচ্ছা নেই আরিফের। বৃহস্পতিবার তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
সিলেট ও লন্ডনে মেয়র আরিফের আত্মীয়স্বজন, দলের একান্ত সহকর্মী ও মেয়রের ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে আলাপ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের দাবি, সিটি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর প্রায় দেড় ডজন প্রার্থী মাঠে থাকলেও নির্বাচনি পালে হাওয়া লাগেনি শুধু আরিফের অনুপস্থিতির কারণে। তিনি দেশে ফেরামাত্রই সিসিকের নির্বাচনি মাঠের চিত্র একেবারে পালটে যাবে।
এর আগেও দলের বাইরে নাগরিক কমিটির প্রার্থী হয়ে ২০১৩ সালে বিজয়ী হয়েছিলেন আরিফুল হক চৌধুরী। তবে সেই নির্বাচনে সমর্থন ছিল বিএনপির। এবারও একইভাবে দলের বাইরে থেকে প্রার্থী হতে চান তিনি। এবারও সহযোগিতা চান বিএনপির। এজন্যই তিনি লন্ডনে দলের হাইকমান্ডের কাছে ছুটে গেছেন।
এদিকে মেয়র আরিফ দেশে ফেরার আগেই তাকে প্রার্থী করার সব প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। তিনি দেশে ফিরলে বিমানবন্দরে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, শ্রমজীবী ও পেশাজীবীসহ প্রায় অর্ধশত সংগঠনের ব্যানারে তাকে স্বাগত জানানোর প্রস্তুতিও চলছে। এসব সংগঠনের পক্ষ থেকে নির্দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার জোর দাবি তোলা হবে। বলা হবে-প্রয়োজনে দল ত্যাগ করতে, কিন্তু নগরবাসীকে নয়।
অপরদিকে জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ ব্যক্তিরা আরিফের ঘনিষ্ঠ না হলেও মহানগরীর তৃণমূলের বৃহৎ অংশই আরিফের সঙ্গে আছেন। তারাও চান যে কোনো মূল্যে আরিফ যেন প্রার্থী হন। নতুবা সরকারবিরোধী আন্দোলন দূরে থাক, মহানগরীতে দাঁড়াতেই পারবে না বিএনপি। সম্প্রতি দেশব্যাপী কর্মসূচি পালিত হলেও সিলেটে পুলিশের আপত্তির কারণে বিএনপির কর্মসূচি পণ্ড হওয়ার বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে সিলেট বিএনপিতে। তাদের মতে, বিএনপির কোনো মন্ত্রী, এমপি তো নেই-ই, এ অবস্থায় বিভাগীয় নগরীতে ফ্ল্যাগধারী নেতা একমাত্র মেয়র আরিফুল হক। নির্বাচনে অংশ না নিয়ে মেয়র পদটিও হারিয়ে ফেললে সরকারবিরোধী আন্দোলন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এসব ইস্যু মাঠে মারা যাবে। পদ হারালে ব্যক্তি আরিফের যে পরিমাণ ক্ষতি হবে তার চেয়ে অনেকগুণ বেশি মাশুল দিতে হবে বিএনপিকেই।
এ বিষয়ে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সঙ্গে সরাসরি কথা কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি হোয়াটসআপের কল রিসিভ করেননি। দলীয় ও ঘনিষ্ঠজনরাও কথা বলছেন নাম প্রকাশ না করার শর্তে। সিলেট পৌরসভাকে সিটি করপোরেশন ঘোষণা করা হয় ২০০২ সালে। প্রথম নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী হিসাবে বিজয়ী হয়েছিলেন বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। ২০০৮ সালে কারাগারে থাকা অবস্থায়ও কামরান বিজয়ী হন। ২০১৩ সালের ১৫ জুনের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন বিএনপি সমর্থিত নাগরিক কমিটির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। ‘পরিবর্তন’ আওয়াজ তুলে আরিফুল হক চৌধুরী ৩৫ হাজার ১০০ ভোটের ব্যবধানে কামরানকে হারিয়েছিলেন। ২০১৮ সালেও মেয়র নির্বাচিত হন আরিফ। এবারের নির্বাচন হবে তার জন্য হ্যাটট্রিক।
এবার সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হতে মাঠে রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা আসাদ উদ্দিন আহমদ, অধ্যাপক জাকির হোসেন, মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, আজাদুর রহমান, এটিএম হাসান জেবুল, সাবেক মেয়র কামরানের পুত্র ডা. আরমান আহমদ শিপল ও মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক। এর বাইরে সম্প্রতি লন্ডন থেকে এসে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী মেয়র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণায় মাঠ গরম করছেন।
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।