বাবার জন্যই আমাদের পৃথিবীটা এত সুন্দর
বোরহান উদ্দিন
ইংরেজি বিভাগ, ২য় বর্ষ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
আপনারা কি কখনো মই দেখেছেন? বাবা এবং মই এই শব্দ দুটোর রূপক অর্থ আমার কাছে একি মনে হয়। মানুষ উপরে উঠতে মই ব্যবহার করে; প্রথম ধাপ, দ্বিতীয় ধাপ, তৃতীয় ধাপ এভাবে মই দিয়ে মানুষ তাদের কাঙ্ক্ষিত কাজটি সম্পূর্ণ করে। ঠিক এভাবেই আমি আমার সফলতার শিখরে পৌঁছানোর মই হিসেবে বাবাকে পাই। বাবার কাঁধে ভর দিয়ে পৃথিবী গড়ার স্বপ্ন দেখি। সেই ছোট্ট বোরহানের যতটুকু অর্জন সবকিছুই সম্ভব তার বাবার জন্য। যখন হাঁটতে পারিনি, বাবা হাঁটতে শিখিয়েছে, পড়ে গিয়েছি, হোঁচট খেয়েছি বাবা-ই টেনে তুলেছে। ব্যক্তিগত এই পৃথিবীতে, এখন পর্যন্ত যতবার হোঁচট খেয়েছি, ততবার বাবার কাঁধে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়িয়েছি। বাবার জন্যই আমাদের পৃথিবীটা এত সুন্দর। বাবার ঋণ পার্থিব কোনো কিছু দ্বারা পূর্ণ করা সম্ভব না। বাবা দিবসে সব বাবাদের প্রতি ভালোবাসা ও দোয়া।
বাবার নিখাঁদ ভালোবাসা আমাকে মুগ্ধ করে
মোছা. জেরিন ফেরদৌস
শিক্ষার্থী, রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগ, ঈশ্বরদী সরকারি কলেজ।
বাবা শব্দটি যতখানি সহজ মনে হয় তার থেকে বৃহৎ অর্থ বহন করে। আমার জীবনে বাবা হলেন ছায়াদানকারী বিশাল মহীরুহের স্বরূপ। যিনি নিজের কথা ভাবার আগে পরিবারের সবার কথা ভাবেন। আমার বাবা পেশায় একজন শ্রমিক। আর্থিক অসঙ্গতির কারণে তিনি ভালো করে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেননি। তিনি সরল, পরিশ্রমী এবং নির্ভীক একজন মানুষ।
জীবনের টানাপড়েন কি জিনিস বাবা কখনোই আমাকে উপলব্ধি করতে দেননি। আমি যতই বারবার এলোমেলো ভুলের অভিধানে নিজেকে আবিষ্কার করেছি। বাবা তার শাসনে, বারণে সবসময় সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকেন। আমায় শাসন করলেও বাবার সীমাহীন যত্ন আর নিখাঁদ ভালোবাসা আমাকে মুগ্ধ করে। বাবাকে ভীষণ ভালোবাসি।
বাবা ছিলেন আমার পরিচয়ের পতাকা
তানভীর আহমেদ রাসেল
ফার্মেসি বিভাগ, কুমিলস্না বিশ্ববিদ্যালয়।
বটবৃক্ষের মতো বিশাল দেহ নিয়ে যে সবসময় সন্তানদের ছায়ার তলে আগলে রাখে, পরিশ্রান্ত শরীরে ও সন্তানের দিকে তাকিয়ে প্রশান্তির হাসি দেয়, যে কিনা শ্রদ্ধা, ভক্তি ও ভালোবাসার এক প্রগাঢ় নিকুঞ্জ, জীবনের সবচেয়ে শক্ত খুঁটির পরিচায়ক, হৃদপিন্ডের সবচেয়ে নরম অংশটির অধিকারী, প্রকৃতির সেই অমূল্য সম্পদটির নামই ‘বাবা’।
প্রায় ৭ বছর আজ বাবা নেই। অনেক কিছু থেকেও মনে হয় আমার কিছু নেই। স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে অবিরাম ছুটে চলার মধ্যেও মনে হয় আমার বাস্তবায়িত স্বপ্ন আস্বাদন করার মুহূর্ত নেই। প্রায় মনে হয় এক নড়বড়ে খুঁটির উপর প্রতিটি সেকেন্ড, মিনিট পার করছি। অনেক বিশাল আকাশের নিচে অবস্থান করেও মনে হয় এক শূন্য জগতে অবস্থান করছি। স্বার্থের পৃথিবীতে মনে হয় বাবা ছাড়া সবই সাজানো রঙ্গমঞ্চ। বাবা এমনি এক কৃত্রিম প্রকৃতির উপহার। পৃথিবীতে তারাই অভাগা যাদের বাবা নেই। বাবা একটি শক্ত খুঁটি, বাবা একটি আবেগ, বাবা একটি ভালোবাসা। ভালো থাকুক পৃথিবীর সব বাবা।
আমাকে ক্ষমা করে দিও আব্বু
রায়হান উদ্দিন
শিক্ষার্থী, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম কলেজ।
আমার বাবা নামের সেই বটবৃক্ষটি নেই। আমি বাবা দিবস ছাড়াও সারা বছর খুঁজেও বাবাকে পাই না। বাবা আমাদের সবাইকে ছেড়ে চলে গেছেন। বাবা থাকলে নিজের মধ্যে অনেক সাহস পেতাম। বাবা যখন অসুস্থ ছিলেন তখন কোনো সেবা করতে পারিনি। সেটা আমার মনে আজও যন্ত্রণা দেয়।
আমার যখন এসএসসি পরীক্ষার টেস্ট পরীক্ষা চলছে তখন বাবা অনেক অসুস্থ। প্রায় সময় বাবা আমাকে ডাকত একটু দোয়া পড়ে ফুঁ দিতে। আমি পড়ার জন্য যেতে পারতাম না। আমি বাবার রুমের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় অন্যদিকে ফিরে পড়ার টেবিলে চলে যেতাম। বাবা বলত, নাহিন আমার দিকে দেখতেছো না? অথচ আজ আব্বুকে খুঁজেও পাচ্ছি না। একটু দোয়া পড়ে ফুঁ দিতে, একটুখানি সেবা করতে। আজ বুঝতেছি বাবা থাকলে কি আর না থাকলে কি। প্রতিটা সময় বাবাকে অনুভব করি, খুঁজে বেড়াই। আমাকে ক্ষমা করে দিও বাবা। অনেক ভালোবাসি বাবা।
বাবা সফলতার সোপান
আতিক উলস্নাহ আল মাসউদ
শিক্ষার্থী, আইআইইউসি।
প্রত্যেকের সফলতার পিছনে একটি সংগ্রামী গল্প থাকে। সেই গল্পের নায়ক হলেন বাবা। জীবনের উত্থান-পতনের সঙ্গে গন্তব্যের পথে বাদানুবাদ ঘটে যায়। সফলতার মুকুট পরিধান করতে সব বাধা-বিপত্তি, বৈরিতা ও সংকট থেকে উত্তরণের পিছনে বাবা নামক অনুপ্রেরণা একটি অনিবর্চনীয় শক্তি। জীবনের কঠিন মুহূর্তে সবাই যখন দ্রোহ ও অনুযোগের ফিরিস্তি তোলে বাবারা তখন সন্তানের জন্য মেঘের ছায়া হয়ে যায়। সন্তানের প্রতি বাবাদের মেহনত ও নিঃস্বার্থ কষ্ট সহিষ্ণু অবদানের তুলনা হয় না। ব্রায়ান লারা বলেছেন, ‘আমি যা, পুরোটাই বাবার অবদান।’ সফলতার কাঁটা বিছানো পথকে মসৃণ করতে একমাত্র বাবাদের অনুপ্রেরণা যথেষ্ট। তারা এমন পথের সন্ধান দেন যে পথে অনুপপত্তি ও ব্যত্যয় ঘটে না। আমরা যদি ইতিহাসের পাতায় লক্ষ্য করি, সুলতান মুহাম্মদের কনস্টান্টিনোপল জয়ের পিছনে যে শক্তি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভূমিকা রেখেছে তা হলো দূরদর্শী বাবা সুলতান মুরাদ। এভাবে করে প্রত্যেক সফলতার কেন্দ্রবিন্দু হলো বাবারা।
বাবাকে সবসময়ই ভালোবাসি
আরমান জিহাদ
হিসাববিজ্ঞান বিভাগ, হোসেনপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ।
বাবা মানেই দায়িত্বশীল একজন মানুষ। বটবৃক্ষ যেমন ছায়া দেয় তেমনিভাবে পরিবারের মাথার ওপর বাবা ছায়াদানকারী ব্যক্তি। একটি পরিবারের সাফল্যের পেছনে বাবার একনিষ্ঠ পরিশ্রম, ত্যাগ লক্ষ্য করা যায়। বাবা পরিবারের চাহিদা মেটানোর মাধ্যমে নিজের চাহিদা পূরণ করে। অনেক কিছু করতে ইচ্ছে করলেও বাবা করেন না।
বাবা নিজেকে পরিবারের সুখের জন্য বিলিয়ে দিতে একটুও কার্পণ্য করেন না। বাবাকে কোনোভাবেই সংজ্ঞায়িত করা সম্ভব নয়। বাবা শব্দটি ছোট হলেও বিশাল বড় একটি দায়িত্বের নাম। বাবা দিবসের দিনে নয় বাবাকে সবসময়ই ভালোবাসি। বাবা আমাদের কোনো দিবসকে উপলক্ষ করে ভালোবাসেন না। পৃথিবীর সব বাবারা ভালো ও সুস্থ থাকুন সবসময়।
বাবা মানে শত আবদারের অফুরন্ত ভান্ডার
মিতু রানী দাস
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
বাবা একটি মধুময় ছোট শব্দ। কিন্তু এর মানে বৃহৎ। বাবা মানে শত আবদারের অফুরন্ত ভান্ডার, বাবা মানে শত কষ্টেও সন্তানের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা, বাবা মানে শাসনের আড়ালে থাকা অশেষ ভালোবাসা, বাবা মানে বটবৃক্ষের শীতল ছায়া, বাবা মানে গল্পের পিছনে লুকিয়ে থাকা মহানায়ক। বাবা হচ্ছেন তিনিই যিনি সন্তানের খুশির জন্য নিজের সব খুশি বিসর্জন দিতে পিছু পা হন না। সন্তানের মঙ্গলের জন্য নিজের জীবন দিতেও কুণ্ঠিত হন না। এই বাবা নামক ছায়া যতদিন সন্তানের উপর থাকবে ততদিন সন্তানের কোনো বিপদ হয় না। যিনি রোদ, বৃষ্টি, ঝড়, সব প্রতিকূলতাকে হাসি মুখে সহ্য করে নেন। আমার জীবনে আমার বাবা হলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মহাপুরুষদের একজন। যিনি নিজের সব সুখ, আশা, আকাঙ্ক্ষাকে বিসর্জন দিয়ে আমাদের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করেন। কোনো দিন বলা হয়নি বাবা। অনেক ভালোবাসি তোমাকে বাবা।
কোনো বাবা যেন অবহেলিত না হয় শেষ বয়সে
আল আমিন
বাংলা বিভাগ, চতুর্থ বর্ষ, মকবুলার রহমান সরকারি কলেজ পঞ্চগড়।
বাবা পৃথিবীর সবচেয়ে নিঃস্বার্থ মানুষ। যিনি শুধু আজীবন সন্তানের জন্য দিয়েই যান। বিনিময়ে শুধু সন্তানের সুখ, শান্তি চান। এই তীব্র গরম বা শীত উপেক্ষা শুধু সন্তানের সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য কাজ করেন। বাবার কাছে শিখেছি সরলতা, উদারতা ও সহমর্মিতা। বাবা সাদাকে সাদা কালোকে কালো বলতে তারা শিখিয়েছেন। বাবারা নিজেদের বিলিয়ে দিলেও শেষ বয়সে এসে তারা অনেক সময় হয়ে যান একা এবং নিঃস্ব। শেষ বয়সে সামাজিক নিরাপত্তা, মানবিক মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকুক সব বাবারা। কোনো বাবা যেন অবহেলিত না হয় শেষ বয়সে।
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।