ডেঙ্গুর ক্রিটিক্যাল পিরিয়ডে সচেতনতা জরুরি: ডা. এবিএম আবদুল্লাহ


ডেঙ্গু জ্বর সাধারণত পাঁচ থেকে ছয় দিন থাকে। তারপর সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায়। কখনো কখনো দুই বা তিন দিন পর আবার জ্বর আসতে পারে। জ্বর কমে গেলে অনেক রোগী এমনকি অনেক চিকিৎসকও মনে করেন রোগ সম্পূর্ণ ভালো হয়ে গেছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, ডেঙ্গু জ্বরে মারাত্মক সমস্যা হওয়ার সময় এটাই। এ সময় প্লাটিলেট কাউন্ট কমে যায় এবং রক্তক্ষরণসহ নানারকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই জ্বর কমে যাওয়ার পরবর্তী কিছু দিনকে বলা হয় ‘ক্রিটিক্যাল পিরিয়ড’। এ সময় সবারই সচেতন থাকা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি বলে মনে করেন ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ। ডা. এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, ডেঙ্গু জ্বরে সাধারণত বেশি পরীক্ষার প্রয়োজন হয় না। সিবিসি ও প্লাটিলেট কাউন্ট করলেই যথেষ্ট। এক-দুই দিনের জ্বরে ডেঙ্গু এনএস-১ এন্টিজেন এবং চার থেকে ছয় দিন পর এন্টিডেঙ্গু অ্যান্টিবডি করা যেতে পারে। প্লাটিলেট কাউন্ট চার বা পাঁচ দিন পর কমতে শুরু করে। তাই জ্বর শুরুর চার-পাঁচ দিন পর রক্ত পরীক্ষা করা উচিত। অনেকেই দিনে দু-তিনবার, এমনকি একই সঙ্গে একাধিক ল্যাবরেটরি থেকে প্লাটিলেট কাউন্ট করে থাকেন, যা অপ্রয়োজনীয়। সাধারণত প্লাটিলেট কাউন্ট চার বা পাঁচ দিন পর থেকে কমতে শুরু করে। তাই জ্বর শুরুর চার বা পাঁচ দিন পর রক্ত পরীক্ষা করা উচিত। এর আগে পরীক্ষা করলে তা স্বাভাবিক থাকে বিধায় রোগ নির্ণয়ে যেমন বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। ডেঙ্গু যেহেতু ভাইরাসজনিত কারণে হয়, তাই উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া হয়। যেমন- জ্বর হলে প্যারাসিটামল-জাতীয় ওষুধ এবং এর সঙ্গে প্রচুর পানি ও শরবতজাতীয় তরল খাবার খাওয়ানোই যথেষ্ট। খেতে না পারলে বা অন্য কোনো প্রয়োজনে শিরাপথে স্যালাইন বা গ্লুকোজ ইত্যাদি দিতে হবে। তবে বমি হলে বা একেবারেই খেতে না পারলে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা উচিত। জ্বর বা ব্যথা কমানোর জন্য শুধু প্যারাসিটামল-জাতীয় ওষুধই যথেষ্ট, এসপিরিন বা অন্য কোনো ব্যথানাশক ওষুধ কোনোভাবেই খাওয়া যাবে না, এতে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়বে। মনে রাখতে হবে, ডেঙ্গুর সঙ্গে অন্য ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগও থাকতে পারে, যেমন- টাইফয়েড ফিভার বা অন্য কোনো ইনফেকশন, যার জন্য অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হতে পারে। সেক্ষেত্রে চিকিৎসক প্রয়োজন মনে করলে অ্যান্টিবায়োটিক দিতে পারেন।