তবে কি ইমরান আউট, নওয়াজ ইন?


পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতা ইমরান খান এখন কুখ্যাত অ্যাটক কারাগারে আছেন। তোশাখানার মামলায় ইসলামাবাদের আদালত শনিবার তাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। রায় ঘোষণার পর লাহোরের জামান পার্ক থেকে গ্রেফতার করা হয় তাকে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি বলছে, ইমরান খান কারাগারে আটক থাকার কারণে তার দল পিটিআই এখন নিশ্চিহ্ন হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে। ইতোমধ্যে দেখা গেছে, ইমরান খানকে গ্রেফতারের পরও পিটিআই সমর্থকরা নীরব। শনিবার তাকে আটক করার পর জোরালো কোনো আন্দোলনই হয়নি। এর ফলে পাকিস্তানের রাজনীতিতে পিটিআইয়ের কোণঠাসা হওয়ার শঙ্কা আরও বেড়েছে। একদিকে কোণঠাসা ইমরান খান, অন্যদিকে দেশে ফেরার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে নওয়াজ শরিফের। লন্ডন থেকে শিগগিরই দেশে ফিরবেন তিনি। কয়েক দিন আগে এ কথা জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। শাহবাজ শরিফ আরও বলেন, তার দল (পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ) ফের নির্বাচনে জিতলে নওয়াজ শরিফ প্রধানমন্ত্রী হবেন। অর্থাৎ একদিকে ইমরান খানের অধ্যায় সমাপ্তির দিকে, অন্যদিকে নওয়াজ শরিফের নতুন অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রিত্ব হারানোর পর থেকেই ইমরান যেন ঠোঁটকাটা হয়ে ওঠেন। প্রতিনিয়ত সেনাবাহিনীর নেতৃত্বের সমালোচনা করতে থাকেন। মে মাসে ইমরান গ্রেফতার হওয়ার পর সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ভবনে হামলা চালান তার সমর্থকরা। এরপর নড়েচড়ে বসে সেনাবাহিনী। শুরু হয় ইমরানের সমর্থকদের ধরপাকড়। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। তোলা হয় সামরিক আদালতে। এ ব্যাপারে ওয়াশিংটনের উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, ‘আমি মনে করি, সেনাবাহিনী কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। তারা এই নৃশংস কৌশলগুলো ব্যবহার করার কারণে ইমরান খানের সমর্থকরা মাঠে নামতে ভয় পাচ্ছে।’ এ বছরই হবে পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন; কিন্তু ইমরান খান তিন বছরের সাজায় কারাগারে। সুতরাং ইমরান খান যদি আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন, তাহলে তার দলের ভবিষ্যৎ কী হবে, সেটিই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী অতীতে বিবিসিকে বলেছিলেন, তিনি নির্বাচিত হন কিংবা না হন; পিটিআই টিকে থাকবে এবং ধীরে ধীরে উন্নতি করবে। তবে এটি বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে। পিটিআইয়ের জন্ম ও বেড়ে ওঠা ইমরান খানকে ঘিরে। শুধু তা–ই নয়, দলটির লোগোতে ক্রিকেট ব্যাটের প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ইমরান খানের দলের অনেক জ্যেষ্ঠ নেতাই দল ছেড়ে গেছেন। যারা এখনো দলে আছেন, তাদের কেউ কেউ লুকিয়ে আছেন কিংবা গ্রেফতার হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে দলের জন্য কার্যকর রাজনৈতিক প্রচারণা কঠিন হয়ে যাবে।