পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা করেছে ছাত্রদল নেতা, ফুটেজ আছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
অনলাইন নিউজ ডেক্স
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, বিএনপির সঙ্গে সংঘর্ষ চলাকালে ডিউটিরত অবস্থায় পুলিশ সদস্যকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে এক ছাত্রদল নেতা। তার ফুটেজ আমাদের কাছে আছে।
শনিবার সন্ধ্যায় বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলায় হতাহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ দাবি করেন।
এ সময় পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের একটি মিছিল যাচ্ছিল সেই মিছিলে বিএনপি অ্যাটাক (আক্রমণ) করেছে। ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটের সামনে গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। একজন পুলিশ সদস্যকে নৃশংসভাবে ছাত্রদলের এক নেতা চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। তাদের আগে থেকেই এইসব পরিকল্পনা ছিল ২০১৪ সালের মতো। পুলিশ খুব শান্তভাবে সব মোকাবিলা করেছে। কাল তারা (বিএনপি) হরতাল ডেকেছে গাড়িতে ভাঙচুর করবে, আগুন ধরাবে। তাদের শক্ত হাতে দমন করা হবে।
পুলিশ মহাসমাবেশ পণ্ড করেছে বলে বিএনপির দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, বিএনপির সমাবেশ কোথায় পণ্ড করা হলো? আমরা তো দেখলাম প্রধান বিচারপতির বাসায় তারা হামলা চালিয়েছে। এরপর তাদের ওখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওরা ঘোষণা করেছিল— নাইটিঙ্গেল ও আরেকটি এলাকার কথা বলেছিল। এর বাইরে তারা আসবে না বলেছিল। পুলিশ তো সেই নাইটিঙ্গেলের ভেতরে ঢোকেনি। এখানে পণ্ড হলো কী করে? ওরা হামলা করেছে।
‘টিয়ারগ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড মেরে মহাসমাবেশ পণ্ড করে দিয়েছে পুলিশ’- বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা তো এটা বলবে। তারা পুলিশ মেরে ফেলেছে, এখন এটা বলবে না? তারা আরও কতকিছু বলবে। এইটা তো স্বাভাবিক।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, আপনারা দেখেছেন বিএনপি আগামীকাল হরতাল ডেকেছে। তারা গাড়ি পোড়াচ্ছে। যারাই রাস্তায় গাড়ি পোড়াবে, অবরোধ করবে, ভাঙচুর করবে অগ্নিসংযোগ করবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
রাজধানীর বিজয়নগর-কাকরাইল-রমনা এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের জেরে দলটির মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে গেছে। দুপুরে সংঘর্ষের সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে পুলিশের ওপর। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে বিভিন্ন অলিগলি ও রাস্তায় ক্রমাগত রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়তে দেখা যায় পুলিশকে। এতে নয়াপল্টন-বিজয়নগর-কাকরাইল এলাকা পুরো ফাঁকা হয়ে যায়। বিএনপির সঙ্গে সংঘর্ষে একজন পুলিশ সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন, আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে পুলিশের এক সদস্য নিহত হয়েছেন। বিকাল ৪টার দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তাৎক্ষণিকভাবে নিহত পুলিশ সদস্যের নাম জানা যায়নি। তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মারধরে তার ইউনিফর্ম ছিঁড়ে গেছে।
ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, নিহত ওই পুলিশ সদস্য দৈনিক বাংলা মোড় এলাকায় দায়িত্বরত ছিলেন। বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে তিনি আহত হয়েছিলেন।
ডিএমপির উপকমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেন বলেন, ‘ওই পুলিশ সদস্যের মাথায় কোপানো হয়েছে।’
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, মৃত অবস্থাতেই ওই পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। তার মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে। আমরা ইসিজি করার পর নিশ্চিত হয়ে তাকে মৃত ঘোষণা করেছি।’
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।