ভাঙচুর কিংবা কাজ না হলে কারখানা বন্ধ রাখা যাবে: বিজিএমইএ


পোশাক শ্রমিকরা কাজ না করলে অথবা কাজ না করে কারখানা থেকে বের হয়ে গেলে কিংবা কারখানা ভাঙচুর করলে শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারায় কারখানা কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধ রাখতে পারবেন বলে জানিয়েছে বিজিএমইএ। আজ রোববার রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান এ কথা বলেন। তিনি বলেন, যত দিন না শ্রমিক ভাঙচুর বন্ধ হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারছে, তত দিন পর্যন্ত কারখানা কর্তৃপক্ষ শিল্প ও সম্পদ রক্ষায় কারখানা বন্ধ রাখতে পারবেন। বিজিএমইএ সভাপতি আরও বলেন, বহিরাগতদের হাত থেকে শিল্প ও সম্পদ রক্ষা করার সাংবিধানিক অধিকার প্রত্যেক উদ্যোক্তার রয়েছে। গার্মেন্টস খাতের বিভিন্ন বিষয়ে দীর্ঘ বক্তব্যে ফারুক হাসান বলেন, যেহেতু বর্তমানে পোশাক খাতে অনেক কারখানায় কাজ কম, ক্রেতারা নতুন করে কার্যাদেশ দেওয়া বন্ধ রেখেছেন, সেহেতু নতুন নিয়োগ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। পরিস্থিতি অনুকূলে এলে আবার নতুন নিয়োগ দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, ব্যাংক দেনা, কার্যাদেশ বাতিল বা যে কোনো কারণে কারখানা বন্ধ হয়ে গেলেও মালিককে মজুরি পরিশোধ করতে হয়। এখন কাজ কম থাকায় কারখানাগুলোকে নতুন নিয়োগ না দিতে বলা হয়েছে। এ মুহূর্তে নতুন নিয়োগ কারখানাগুলোর ওপর বাড়তি বোঝা সৃষ্টি করবে। কোনো কারখানার কাজ বেশি থাকলে যে কারখানায় কাজ কম, সেখান থেকে কাজ করিয়ে নেবে। এতে করে কম কাজের কারখানাগুলোকে সাহায্য করা হবে এবং কারখানাগুলোর কাজের মধ্যে ভারসাম্য আসবে। যে ওভার ক্যাপাসিটি বা অতি সক্ষমতার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা কিছুটা প্রশমিত হবে। এ সময় ফারুক হাসান অভিযোগ করেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে তৈরি পোশাক শিল্প নিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে। এতে শিল্প ও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এ ধরনের কার্যক্রম দেশদ্রোহিতার শামিল বলে আখ্যা দেন তিনি। ফারুক হাসান বলেন, ইপিলিয়ন কারখানায় তিনজন মারা গেছে বলে যে কথা প্রচারিত হয়েছে, যা মোটেও সত্য নয়। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। যারা এ ধরনের অপতৎপরতায় লিপ্ত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি প্রসঙ্গে ফারুক হাসান বলেন, আমরা গত ৩১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দিয়েছিলাম, সরকার নতুন যে বেতন কাঠামো ঘোষণা করবে, আমরা পোশাকশিল্পের সব উদ্যোক্তা সেটিই মেনে নেব, শিল্পে যত প্রতিকূলতাই থাকুক না কেন। আমরা ঘোষিত মজুরি মেনে নিয়েছি। যত কষ্টই হোক, এই মজুরি বাস্তবায়ন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, যদিও বর্তমান প্রেক্ষাপটে পোশাকশিল্পের বাস্তবতায় এই মজুরি বাস্তবায়ন করা অনেক উদ্যোক্তার জন্যই অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হবে।