খুলনায় প্রধানমন্ত্রীর জনসভা আজ


বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা দেশব্যাপী চতুর্থ দফার অবরোধের দ্বিতীয় দিনে আজ খুলনায় হতে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা। নগরীর সার্কিট হাউজ ময়দানে দুপুর ৩টায় মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন তিনি। জনসভায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলা থেকে ১০ লাখ নেতাকর্মী যোগ দেবেন বলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩ মার্চ খুলনায় রাজনৈতিক সফরে এসেছিলেন। ওই সময় তিনি একই স্থানে জনসভায় যোগ দিয়েছিলেন। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর প্রধানমন্ত্রীর খুলনায় জনসভা উপলক্ষ্যে নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। সমগ্র নগরী নতুনরূপে সেজেছে। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে লেখা ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো। সরকারি অফিসগুলোতে রাতের বেলায় নানান রংয়ের আলোকসজ্জা করা হয়েছে। এদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনসভা স্থলসহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। আর সাদা ও পোশাকধারী পুলিশের নজরদারিসহ নৌপথে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সবমিলে তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জনসভাকে কেন্দ্র করে। জানা যায়, দুপুর ১২টায় প্রধানমন্ত্রী তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে খুলনার উদ্দেশে হেলিকপ্টারে রওয়ানা দেবেন। খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে নির্মিত হেলিপ্যাডে অবতরণ করবে তাকে বহনকারী হেলিকপ্টার। দুপুর ১টায় সাকির্ট হাউজে বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করবেন। নামাজ ও মধ্যাহ্ন বিরতির পর খুলনা জেলার ২৪টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। বেলা ৩টায় তিনি আওয়ামী লীগের জনসভায় যোগদান করবেন এবং সাড়ে ৪টার পর হেলিকপ্টারে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর খুলনায় আগমন উপলক্ষ্যে ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা এবং পার্শ^বর্তী এলাকার সংসদ সদস্যরা খুলনায় পৌঁছেছেন। জনসভার স্থলে পার্শ্ববর্তী ভৈরব নদীর জেলাখানা ঘাট এবং রূপসা ঘাটে অতিরিক্ত ফেরির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সার্কিট হাউজ মাঠে নৌকা ও পদ্মা সেতুর আদলে নির্মাণ করা হয়েছে ৯০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪০ ফুট প্রস্থ মঞ্চ। প্রায় ৪০০ অতিথি মঞ্চে বসার ব্যবস্থা থাকবে। মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও কেসিসি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক গণমাধ্যমকে জানান, সমাবেশের সময় সার্কিট হাউজ মাঠে থাকবেন নারীকর্মীরা। পুরুষ নেতাকর্মীরা থাকবেন মাঠের চারপাশের সড়কগুলোতে। মাঠ ছাড়াও নগরীর কাস্টমস ঘাট থেকে শিববাড়ী মোড়, জেলখানা ঘাট, সদর থানার মোড়, হাদিস পার্ক ও হাজি মুহসীন রোডে মাইক দেওয়া হবে। শিববাড়ী মোড়সহ বেশ কয়েকটি স্থানে এলইডি মনিটরে দেখানো হবে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ। এছাড়া বাগেরহাট, পিরোজপুর ও গোপালগঞ্জ থেকে যেসব পুরুষ নেতাকর্মী আসবেন তারা রূপসা ঘাটে নেমে ফেরিতে পার হবেন। এজন্য রূপসা ঘাটে ৫টি ফেরি দেওয়া হচ্ছে। আর নারী কর্মীদের বহনকারী বাস নগরীর নতুন বাজার পর্যন্ত আসবে। এছাড়া জেলখানা ঘাটে ৩-৪টি ফেরি দেওয়া হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহের নেতাকর্মীর জন্য সকালে একটি স্পেশাল ট্রেন খুলনায় আসবে। বিএনপির অবরোধেও কোনো অসুবিধা হবে না। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাধা দেওয়ার সাহস তারা রাখে না। নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল রানা জানান, জনসভায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলার ১০ লাখ মানুষের সমাগম ঘটানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ওইদিন নগরীর রাজপথে নেতাকর্মীর ঢল নামবে। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) কমিশনার মোজাম্মেল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে কেন্দ্র করে খুলনায় তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পার্শ্ববর্তী জেলা পুলিশের সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে। হাইওয়েগুলোতে নির্বিঘ্নে যাতায়াতের জন্য হাইওয়ে পুলিশ নিরাপত্তা দেবে। নগরীতে র‌্যাবের টহল থাকবে। তবে প্রয়োজন হলে বিজিবি মোতায়েন করা হবে। তিনি বলেন, সার্কিট হাউজসহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। সেগুলো মনিটরিং করা হচ্ছে। এছাড়া জনসভাস্থলসহ বিভিন্ন স্থানে পোশাকে এবং সাদা পোশাকে পুলিশ কাজ করবে। জনসভার কাছেই ভৈরব নদী। সেখানে নৌপুলিশের টহল থাকবে। সব মিলিয়ে নির্বিঘ্নে সাধারণ মানুষ যেন জনসভায় আসতে পারে এবং নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারে সেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।