রাজধানীর কলাবাগান, বংশাল ও কোতোয়ালি থানায় নাশকতার মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়নসহ বিএনপির ৭৩ নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রোববার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাদের এ কারাদণ্ড দেন। এসব মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ৩৮ জনকে খালাস দেওয়া হয়।
কলাবাগান থানার মামলায় রবিউল ইসলাম নয়নসহ ৪০ জনকে আলাদা তিন ধারায় দেড় বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে তাদের আরও ১৭ দিন বিনাশ্রম কারাভোগ করতে হবে। মামলার তিন ধারার সাজা একসঙ্গে চলবে বলে রায়ে উল্লেখ করেছেন বিচারক। ফলে তাদের ১ বছর কারাভোগ করতে হবে। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলার চার্জশিটভুক্ত অপর ২৬ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। রোববার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী হায়দার এ রায় ঘোষণা করেন।
এ মামলায় কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-মো. সিরাজুল ইসলাম, মো. শাহ আলম সৈকত, মো. জাকির হোসেন, মো. নোমান, মো. এলিন, মো. ওয়াসিউল হাসিব আনিক, পলাশ হাওলাদার, মো. আমিরুল বেপারী চৌধুরী, মো. শফিকুল ইসলাম, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, মো. আলমগীর হোসেন, মো. রিপন আহম্মেদ, মো. আশরাফুল ইসলাম, শাহ পরান, মো. মাহমুদুল হাসান রুম্মান, মো. কামাল, মো. ফারুক, মো. ফরহাদ, মো. ইসমাইল শেখ, মো. জুয়েল, মো. শফিকুল ইসলাম, মো. বাচ্চু মিয়া, মো. রবিউল ইসলাম, মো. মোস্তফা, মো. রুবেল, মো. রুবেল হোসেন, সোহেল, মো. সিদ্দিক, মো. ফয়সাল, মো. শহিদুল, মো. রাসেল, আ. লতিফ, মো. রুবেল, মো. মনির হোসেন, মো. রিয়াজুল হাসান রাসেল, মো. রাজিব হাসান শিবলু, মো. মাহফুজ (চঞ্চল), জসিম রানা জসিম, জোবায়ের হোসেন ও অনুপ চন্দ্র রায়।
মামলার বিবরণে জানা গেছে-২০১৩ সালের ১৩ নভেম্বরে পুলিশের কাজে বাধা ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে এ মামলাটি করে পুলিশ। মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। মামলার বিচার চলাকালে ৬ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।
এদিকে ২০১৮ সালে ঢাকার বংশাল থানায় করা নাশকতার আরেক মামলায় বিএনপির ২৫ নেতাকর্মীকে আলাদা দুই ধারায় ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে দুই ধারায় ৪ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১৪ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শেখ সাদী এ রায় ঘোষণা করেন।
এ মামলায় কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-সোহেল, মো. রাজু, বল্লম বাজু, সিরাজ, মামুন, মো. রনি, মো. মঈন, আজিম, মো. ওমর ফারুক, ইমরানুল হক ওয়াহিদ, মো. মামুনুর রশিদ মামুন, মাসুদ রানা, তাইজুদ্দিন, নাজিবুল্লাহ, মো. শাহজাহান খান, বিল্লাল হোসেন, আমির হোসেন বিপু, স্বপন, সৈয়দ মঞ্জুরুল হক, আরিফুর রহমান, রাজিয়া আলম, মো. জুবায়ের আলম, তাইজু, সাঈদ ও হাজী মো. মাছুম।
মামলার সূত্রে জানা গেছে-২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বংশাল থানা এলাকায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মিছিল বের করে বিএনপি। মিছিল চলাকালে নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় বংশাল থানার এসআই মো. আজাহার হোসেন একটি মামলা করেন। মামলায় পেনাল কোড ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে অভিযোগ আনা হয়। মামলাটি তদন্ত শেষে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১৯ সালের ৩০ জুন বংশাল থানার এসআই মো. আবু সাঈদ চৌধুরী আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। বিচার চলাকালে চার্জশিটভুক্ত ১৫ সাক্ষীর মধ্যে ৩ জন সাক্ষ্য দেন।
অবরোধে নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর কোতোয়ালি থানার আরেক মামলায় বিএনপির ৮ নেতাকর্মীকে দেড় বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-আনোয়ারুল আজিম, হায়দার আলী বাবলা, সুমন হোসেন, শাহিন, আলাউদ্দিন, হীরা, রজ্জব আলী পিন্টু ও সেন্টু। এছাড়াও অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার চার্জশিটভুক্ত ১২ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১ অক্টোবর বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ চলাকালে বাবুবাজারে গাড়ি ভাঙচুর ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগের অভিযোগে মামলা করে পুলিশ। কোতোয়ালি থানার এসআই মো. আব্দুল হাকিম মামলাটি করেন। তদন্ত শেষে একই বছরের ২০ অক্টোবর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। মামলার বিচার চলাকালে আটজন আদালতে সাক্ষ্য দেন।
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।