মন্ত্রিসভায় বাড়তে পারে নতুন মুখ


সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে আগামী সপ্তাহেই নতুন সরকার গঠনের প্রস্তুতি চলছে। এ সরকারের মন্ত্রিসভায় নতুন মুখের সংখ্যা বাড়ার সম্ভাবনা আছে। এক বা একাধিকবার নির্বাচিত, বয়সে তরুণ, বৈশ্বিক যোগাযোগ ভালো, প্রশাসনিকসহ নানা কাজে অভিজ্ঞ, তাদের নতুন মুখ হিসাবে মন্ত্রিসভায় টানা হতে পারে। নতুন সরকার নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এমন নেতাদের সামনে আনার চিন্তা করছে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। এর পাশাপাশি পুরোনোদেরও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। সব মিলে নতুন ও পুরোনোর সম্মিলন ঘটিয়ে নতুন সরকারের যাত্রা শুরু হতে পারে মধ্য জানুয়ারির আগেই। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, নির্বাচিত সংসদ-সদস্যদের নামে গেজেট প্রকাশের পর সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হবে। বাংলাদেশ সংবিধানের ৫৬(৩) অনুচ্ছেদ অনুসারে সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতাকে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করবেন। এদিকে নির্বাচন কমিশন সূত্র বলছে, বুধবার বা বৃহস্পতিবারের মধ্যে নবনির্বাচিত সংসদ-সদস্যদের নামে গেজেট প্রকাশ করা হবে। সংবিধানের ৫৫(১) অনুচ্ছেদ অনুসারে, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশে একটি মন্ত্রিসভা থাকবে। রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের পর প্রধানমন্ত্রী সংসদ-সদস্যদের ভেতর থেকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং উপমন্ত্রীর নাম মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠাবেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রধানমন্ত্রীর পাঠানো তালিকার আলোকে নতুন মন্ত্রী হিসাবে শপথ অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য অনুরোধ জানাবেন। বঙ্গভবনের দরবার হলে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করবেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর। সরকার গঠিত হয়েছে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি। অর্থাৎ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ৮ দিন পর সরকার গঠন করা হয়। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি। সরকার গঠন করা হয়েছে ১২ জানুয়ারি। অর্থাৎ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ৭ দিন পর সরকার গঠন করা হয়। আবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর। সরকার গঠন করা হয় ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি। অর্থাৎ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ৮ দিন পর সরকার গঠন করা হয়। তবে এ বছর সরকার গঠনে আগের মতো দীর্ঘ সময় না নেওয়ার সম্ভবানা আছে বলে মনে করেন কেউ কেউ। তাদের মতে, চলতি সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের গেজেট প্রকাশ এবং সংসদ-সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠান সম্পন্ন করে আগামী সপ্তাহের শনিবার মন্ত্রিসভা গঠনের সম্ভাবনা রয়েছে। বিষয়টি সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রীর স্বেচ্ছাধীন। তবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সর্বাবস্থায় প্রস্তুত রয়েছে। সংসদ-সদস্যদের নামে গেজেট প্রকাশের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ সোমবার বলেন, এখনো রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছ থেকে নির্বাচনের অফিশিয়াল ফলাফল পাচ্ছি। আজ (সোমবার) সন্ধ্যা নাগাদ হয়তো সব পেয়ে যাব। তারপর ফলাফল কমিশনের অনুমোদনের জন্য পেশ করা হবে। হয়তো বুধবারের মধ্যে কমিশনের অনুমোদন শেষে গেজেট প্রকাশের জন্য বিজি প্রেসে পাঠানো হবে। এরপর গেজেট প্রকাশে হয়তো সময় লাগবে না। ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ অওয়ামী লীগ ২২২ আসনে জয়লাভ করেছে। জাতীয় পার্টি পেয়েছে ১১টি আসন। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছেন ৬২ আসন। অন্যরা পেয়েছেন ৩টি আসন। সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ-সদস্যদের আস্থাভাজন হিসাবে শেখ হাসিনাকেই প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি। প্রধানমন্ত্রী প্রয়োজনীয়সংখ্যক মন্ত্রীদের নিয়ে সরকার গঠন করবেন।