বিতর্কিত অনেকেই বাদ গুরুত্ব দক্ষতা স্বচ্ছতায়
অনলাইন নিউজ ডেক্স
বিতর্কিত মন্ত্রীদের অনেকেরই স্থান হয়নি নয়া মন্ত্রিসভায়। এর মধ্যে অর্থ, বাণিজ্য, স্বাস্থ্য, পররাষ্ট্র এবং ভূমি মন্ত্রণালয় উল্লেখযোগ্য। এদের কারও কাজে বা কথায় সরকার বিব্রত হয়েছে। আবার বিদেশেও সম্পদ পাওয়া গেছে। গুরুত্বপূর্ণ এসব মন্ত্রণালয়ে এসেছে নতুন মুখ। এদের অনেকের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ, দক্ষতায়ও এগিয়ে। তবে এদের মূল্যায়নের জন্য সময় দিতে হবে, কাজকর্ম দেখতে হবে। নতুন মন্ত্রিসভা নিয়ে সঙ্গে একান্ত আলাপকালে দেশের বিশিষ্টজন ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন। তাদের মতে, কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় এই মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে-দক্ষতা ও যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, দলের প্রতি আনুগত্য এবং বর্তমানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারবে এমন সক্ষমতা। এছাড়া যাদের বাদ দেওয়া হয়েছে, ওইসব মন্ত্রণালয়ে পরিবর্তন দরকার ছিল। যারা কথা বলেছেন তারা হলেন-সাবেক সিনিয়র সচিব আবু আলম মো. শহিদ খান, সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ূন কবির এবং সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।
জানতে চাইলে সাবেক সিনিয়র সচিব আবু আলম মো. শহিদ খান বৃহস্পতিবার বলেন, নতুন মন্ত্রিসভা নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো কঠিন। অন্তত ৬ মাস দেখতে হবে। তিনি বলেন, ৩৭ জনের মন্ত্রিসভা। এর মধ্যে নতুন যুক্ত হয়েছেন ১৪ জন। পুরনো তালিকা থেকে ৩০ জন বাদ পড়েছেন। তিনি বলেন, বাদ পড়ার এই তালিকাটা একটু দীর্ঘ। অর্থ, বাণিজ্য, স্বাস্থ্য, পররাষ্ট্র এবং ভূমিসহ কয়েকটি মন্ত্রণালয় নিয়ে সমালোচনা ছিল। সেখানে পরিবর্তন এসেছে। কারও কারও কাজ বিতর্কিত ছিল। বিদেশে সম্পদ পাওয়া গেছে। আবার কারও কথায় সরকার বিব্রত হয়েছে। এদের বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে নতুন যারা এসেছেন তাদের কাজকর্ম আরও দেখতে হবে।
সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বলেন, নতুন-পুরোনো মিশেল মন্ত্রিসভা। আমার ধারণা ৩ থেকে ৪টি বিষয় সামনে রেখে এই মন্ত্রিসভা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে রয়েছে-অতীতে যারা দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন। দ্বিতীয়ত, দলের জন্য নিবেদিত, তৃতীয়ত, অনেক দিন থেকে রাজনীতিতে আছেন, তাদের পুরস্কৃত করেছেন। এছাড়া সামনে অনেকগুলো নতুন চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এই চ্যালেঞ্জ যারা মোকাবিলা করতে পারবেন, এসব বিষয়ও বিবেচনায় রয়েছে। সামনে কী ধরনের চ্যালেঞ্জ আছে এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের নির্বাচন একটি আন্তর্জাতিকীকরণ হয়েছে। এই নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। এর মধ্যে বিভিন্ন দেশের সরকার, নাগরিক সমাজ এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম অনেক কথা বলছে। ফলে এটি দেশের ভাবমূর্তির একটি বিষয়। এসব বিষয় যারা মোকাবিলায় দক্ষতা দেখাতে পারে এমন ব্যক্তিকে সরকার বিবেচনায় রেখেছেন বলে আমার ধারণা। সরকারের সামনে দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হলো দেশের ভেতরে অর্থনীতির অবস্থা ভালো নয়। এই পরিস্থিতি দক্ষতার সঙ্গে সামাল দিতে হবে। তৃতীয় বিষয় হলো-ভূরাজনীতি। বাংলাদেশ নিয়ে ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানসহ অনেক দেশের স্বার্থ রয়েছে। এখানে বাংলাদেশ কীভাবে ভারসাম্য বজায় রেখে কাজ করবে, সেটি বড় বিষয়। মন্ত্রিপরিষদ গঠনে এসব বিবেচনায় আছে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচনটা একতরফা হয়েছে। এখানে প্রধান বিরোধী দল অংশ নেয়নি। ফলে এর বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। তবু একটা মন্ত্রিসভা করতে হয়েছে। সেখানে আমরা দেখেছি, কিছু নতুন মুখ ও ভালো মানুষ যুক্ত হয়েছে। যাদের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের রাজনীতির সঙ্গে একটি জাদুর কাঠি জড়িত আছে। এখানে মন্ত্রী বা এমপি হওয়া সোনার হরিণ পাওয়ার মতো। দুর্ভাগ্য হলো আমাদের সংসদে ব্যবসায়ীদের আধিক্যের কারণে রাজনীতিটা ব্যবসায় পরিণত হয়েছে।
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।