জাবির ধর্ষণকাণ্ডে ইউজিসির কমিটি গঠন
অনলাইন নিউজ ডেক্স
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ধর্ষণের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গৃহীত পদক্ষেপ ও সার্বিক বিষয়ে পর্যালোচনা করতে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ধর্ষণের ঘটনায় কী ব্যবস্থা নিয়েছে এবং কেন এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটছে- সেটি খতিয়ে দেখবে এই কমিটি। কমিটির সদস্যরা বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করবেন।
অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা এবং জিআরএস সফটওয়্যার বিষয়ক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউজিসি চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর এ কমিটি গঠনের কথা জানান।
বুধবার ইউজিসিতে দিনব্যাপী এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কমিশনের সচিব ড. ফেরদৌস জামান।
কর্মশালায় প্রফেসর আলমগীর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানিসহ অনিয়মের অভিযোগগুলোর নিখুঁতভাবে পর্যালোচনা ও প্রতিকারে পদক্ষেপ গ্রহণে ইউজিসি শিগগিরই উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন একটি সেল গঠন করবে। এখানে দক্ষ কর্মকর্তাদের পদায়ন করা হবে। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়ম ও নিপীড়নের ঘটনা ঘটলে এই সেল তদারকি করবে এবং তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের ঘটনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যৌন হয়রানিসহ নানা অপকর্মে দৃশ্যমান ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হয়েছে। এ ছাড়া এসব অপরাধের বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা ও অপরাধীদের প্রশ্রয়ের কারণে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি ঘটনা রোধ করা সম্ভব হয়নি।
ড. আলমগীর বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণ ঘটনা আমাদের মর্মাহত করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের মতো জঘন্য ঘটনা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়। কেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ঘটনা ঘটছে, তা খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
আবাসিক সুবিধা নিশ্চিত না করে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কিভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হচ্ছে এবং অছাত্ররা দিনের পর দিন কিভাবে হলে থাকছেন- সেটিও খতিয়ে দেখা দরকার বলে তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, ক্যাম্পাসে ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির অভিযোগ নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ হলেই কেবল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অরাজক পরিস্থিতি তৈরি, শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়।
ড. আলমগীর দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানিসহ যেকোনো অপরাধের ঘটনা দ্রুত আমলে নেওয়া, এটিকে গুরুতর অপরাধ হিসেবে দেখা, ক্যাম্পাস নিরাপদ রাখা এবং লিঙ্গ বৈষম্য রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
ড. ফেরদৌস জামান যৌন হয়রানি বন্ধে প্রতিরোধ কমিটি শক্তিশালীকরণ ও মনিটরিং জোরদার করার পরামর্শ দেন। এ ছাড়া সব ধরনের হয়রানি বন্ধে নৈতিক শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
ইউজিসির উপ-পরিচালক ও অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থার ফোকাল পয়েন্ট মৌলি আজাদের সঞ্চালনায় কর্মশালায় কমিশনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।