উপচে পড়া ভিড়, বিক্রির ধুম


সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শনিবার সন্ধ্যায় বইমেলায় যেদিকে চোখ যায় শুধু মানুষ আর মানুষ। বইপ্রেমী পাঠকরা ঘুরে বেড়িয়েছেন স্টলে স্টলে। কিনেছেন প্রিয় লেখকের নতুন বই। এদিন বিক্রি হাসি ফুটিয়েছে প্রকাশকদের ঠোঁটে। আগামী দিনেও এ ধারাবাহিকতা থাকবে বলেই আশা করছেন তারা। অন্বেষা প্রকাশনীর প্রকাশক শাহাদাত হোসেন বলেন, মানুষ যেমন এসেছেম তেমন বইও বিক্রি হয়েছে। এতটা সত্যিই আশা করিনি। আজব প্রকাশের প্রকাশক সংগীতশিল্পী জয় শাহরিয়ার বলেন, শুক্রবার দর্শনার্থীর তুলনায় বিক্রি কম ছিল। সেই তুলনায় শনিবার যারা এসেছেন তাদেরই বেশিরভাগই বই কিনেছেন। বই উন্মোচন মঞ্চে আনুশা চৌধুরীর মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক বই ‘ভয়হীন জীবনের খোঁজে’ প্রকাশনা অনুষ্ঠিত হয়। বইটি প্রকাশিত হয়েছে স্বপ্ন ’৭১ প্রকাশন থেকে। মোড়ক উন্মোচন করেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও মনোশিক্ষাবিদ মোহিত কামাল, অভিনেত্রী শম্পা রেজা ও যমুনা বিল্ডার্স লিমিটেডের হেড অব ব্র্যান্ড অ্যান্ড মার্কেটিং শরিফুল ইসলাম তারেক। বইমেলার দশম দিনে মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায় এবং চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। বেলা ১টা পর্যন্ত ছিল শিশুপ্রহর। অমর একুশে উদযাপনের অংশ হিসেবে বেলা ১০টায় বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে শিশু-কিশোর সংগীত প্রতিযোগিতার প্রাথমিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিচারক ছিলেন শিল্পী ইয়াকুব আলী খান, চন্দনা মজুমদার এবং সুমন মজুমদার। বিকালে বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় জন্মশতবার্ষিক শ্রদ্ধাঞ্জলি : সুচিত্রা মিত্র শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাইম রানা। আলোচনা করেন আহমেদ শাকিল হাসমী ও অণিমা রায়। সভাপতিত্ব করেন মফিদুল হক। লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কবি ও অনুবাদক জিল্লুর রহমান, কথাসাহিত্যিক পলাশ মজুমদার, শিশুসাহিত্যিক আহমেদ রিয়াজ ও প্রাবন্ধিক মোতাহার হোসেন মাহবুব। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি দিলারা হাফিজ, চঞ্চল আশরাফ ও রনজু রাইম। আবৃত্তি করেন অনিমেষ কর, কাজী বুশরা আহমেদ তিথি, মিজানুর রহমান সজল মুস্তাক আহমেদ। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পুঁথিপাঠ করেন ফকির আবুল হাশেম। সংগীত পরিবেশন করেন কিরণ চন্দ্র রায়, তপন মজুমদার, অনাবিল ইহসান, রুশিয়া খানম, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস, জামাল দেওয়ান ও সাগর দেওয়ান। এদিন বইমেলায় নতুন বই এসেছে ১৫২টি। এর মধ্যে ছায়াবীথি থেকে প্রকাশ হয়েছে সাঈদ আহমেদের ‘ক্ষতচ্ছড়া’, কথাপ্রকাশ থেকে আহসান হাবীবের ‘লাস্ট বয়’, একই প্রকাশনী থেকে রেজানুর রহমানের ‘আব্দুল মজিদ তার বউকে ভালোবাসে’, ঐতিহ্য থেকে আবদুল মান্নান সৈয়দের ‘কাজী নজরুল ইসলামবিষয়ক সাক্ষাৎকার’ ও অদিতি ফাল্গুনীর অনুবাদে গেব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের ‘দ্য অটাম অব দ্য প্যাট্রিয়ার্ক’। ডিএমপির বিশেষ ট্রাফিক নির্দেশনা : বইমেলা উপলক্ষ্যে বিশেষ ট্রাফিক নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। শনিবার ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ছুটির দিনগুলোর বিকালে এবং অন্যান্য দিন সন্ধ্যায় অত্যধিক যানবাহনের চাপ পরিলক্ষিত হওয়ায় নাগরিকদের উল্লিখিত সময়ে শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা পরিহার করে এ ট্রাফিক রুটগুলো অনুসরণ করতে অনুরোধ করা হচ্ছে-১. যেসব যানবাহন ব্যবহারকারী ভিআইপি রোড হয়ে মতিঝিল, গুলিস্তান অথবা পুরান ঢাকার দিকে যেতে চান তারা বিকল্প রোড হিসেবে শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী সরণি (সাতরাস্তা-মগবাজার-কাকরাইল মসজিদ) ব্যবহার করতে পারবেন। ২. যারা মিরপুর রোড-এলিফ্যান্ট রোড ব্যবহার করে মতিঝিল, গুলিস্তান অথবা পুরান ঢাকার দিকে যেতে চান তারা মিরপুর রোডে নিউমার্কেট-আজিমপুর-পলাশী-চানখাঁরপুল এলাকা ব্যবহার করে গন্তব্যে যেতে পারবেন। ৩. যেসব যানবাহন পুরাতন হাইকোর্ট মোড়-দোয়েল চত্বর হয়ে নীলক্ষেত-নিউমার্কেট, আজিমপুর অথবা এলিফ্যান্ট রোডের দিকে যেতে চায় তারা সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল-নিমতলী-শহীদুল্লাহ হল ক্রসিং-শহিদ মিনার-পলাশী হয়ে যেতে পারবে। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় নির্ধারিত পার্কিং এলাকা ছাড়া যানবাহন পার্কিং নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।