গণতন্ত্র ফেরানোর মুক্তির আন্দোলন চলবে: মির্জা আব্বাস


দীর্ঘ সাড়ে তিন মাস কারাবন্দি থাকার পর সোমবার মুক্তি পেয়েছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান। এ সময় কারাফটকে তাকে ফুল দিয়ে বরণ করেন আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। এ সময় সেখানে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। তাদের উদ্দেশে মির্জা আব্বাস বলেন, গণতন্ত্র ফেরানোর মুক্তির আন্দোলন যেভাবেই হোক চলবে। এখনো অনেক নেতাকর্মী কারাগারে আছেন, অনেককে সাজা দিয়েছে। প্রথমে তাদেরকে মুক্তি দিতে হবে। পানি ছাড়া যেমন মানুষ বাঁচে না, তেমনি কর্মী ছাড়া দলও বাঁচবে না। কারাগারে চিকিৎসার অপ্রতুলতার কারণে নেতাকর্মীরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, সরকারকে বলব- তাদেরকে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এর আগে বৃহস্পতিবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীও একই কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান। এ নিয়ে তিন হেবিওয়েট নেতাসহ অন্তত ১৬ জন কেন্দ্রীয় নেতা মুক্তি পেলেন। ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষের পর ৩১ অক্টোবর মির্জা আব্বাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর তার বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্টন থানায় ছয়টি, রমনা থানায় চারটি এবং ঢাকা রেলওয়ে থানায় একটি মামলা হয় বলে আইনজীবী মহিউদ্দিন চৌধুরী জানান। গত ২১ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক আদেশে মির্জা আব্বাসের জামিন আবেদন গ্রহণ করে আইনানুযায়ী তা নিষ্পত্তি করতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দেন। এর আগে সর্বশেষ রোববার প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় রাজধানীর রমনা থানায় করা মামলায় মির্জা আব্বাস জামিন পান। আইনজীবী মহিউদ্দিন চৌধুরী জানান, সব ক’টি মামলায় জামিন হওয়ার পর বিকালে জামিননামা কারাগারে পৌঁছানোর পরেই মির্জা আব্বাস মুক্ত হন। মুক্তির সময় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ফটকে ছিলেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মির্জা আব্বাসের সহধর্মিনী আফরোজা আব্বাস, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুন রায় চৌধুরীসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সেখান থেকে সরাসরি মির্জা আব্বাস তার শাজাহানপুরের বাসায় যান। জানা গেছে, মহাসচিব মির্জা ফখরুল, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও আমির খসরু, যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্নাসহ অনেক নেতাকর্মী জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। তবে এখনো কারাগারে আছেন ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল আলম, বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপনসহ অন্তত ১৫ জন কেন্দ্রীয় নেতাসহ অনেকে। গত বছরের ২৮ অক্টোবরে ঢাকায় মহাসমাবেশ পণ্ডের পর মহাসচিবসহ দুই স্থায়ী কমিটির সদস্য ছাড়াও সারা দেশের অন্তত ২৬ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। ওই দিনের পর থেকে ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পরদিন পর্যন্ত বিএনপি হরতাল, অবরোধ, অসহযোগ ও গণসংযোগ কর্মসূচি পালন করে দলটি।