মামলাজট কমাতে বিচারক ও আদালত বাড়ানোর পরিকল্পনা


আইন, বিচার ও সংসদবিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, মামলাজট কমানোর লক্ষ্যে বিচারকের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং নতুন আদালত প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের বিচারক সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টিও সরকারের বিবেচনায় রয়েছে। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে এম আবদুল লতিফের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। মন্ত্রী এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, অধস্তন আদালতে বিভিন্ন পদমর্যাদার ৩৫৯টি বিচারকের পদ সৃজন করা হয়েছে। আদালতসমূহ যাতে সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে পারে সেজন্য ১৯৯৯টি সহায়ক পদ সৃজন করা হয়েছে। অপরদিকে ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে চারদলীয় বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে মাত্র ২৫টি বিচারকের পদ এবং ১৩৩টি সহায়ক জনবলের পদ সৃজন করা হয়। ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত অধস্তন আদালতে মোট ১,৪২৬ জন বিচারক (সহকারী জজ) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পক্ষান্তরে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত চারদলীয় বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে অধস্তন আদালতে মাত্র ১৯০ জন বিচারক নিয়োগ করা হয়েছিল। আইনমন্ত্রী বলেন, ষোড়শ বিজেএস’র মাধ্যমে ১০৪ জন বিচারক নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন সুপারিশ প্রদান করছে। আরও ১০০ জন বিচারক নিয়োগ পরীক্ষার প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের বিচারক সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে। হাইকোর্ট বিভাগ থেকে কিছু বিচারপতিকে আপিল বিভাগে নেওয়া হবে: বিরোধী দলের চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, খুব শিগগির হাইকোর্ট বিভাগ থেকে কিছু বিচারপতিকে আপিল বিভাগে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে। পাশাপাশি বিচারপতি নিয়োগের জন্য একটা আইনও করা হবে বলেও জানান তিনি। মন্ত্রী বলেন, বিচারপতি নিয়োগের জন্য সংবিধানে একটি আইন করার কথা বলা আছে। চলতি সংসদে বিচারপতি নিয়োগের জন্য আইন আনা হবে। এর আগে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, অনেক মামলা নিষ্পত্তি করা যাচ্ছে না-কারণ প্রয়োজনের তুলনায় বিচারক সংখ্যা কম। আপিল বিভাগে এমন কোনো নিয়ম আছে কিনা যে, ৭ জনই বিচারক থাকবেন, এটাকে আর বাড়ানো যায় কিনা। জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, আপিল বিভাগে ৭ জন বিচারপতি থাকতে হবে, সংবিধানে এমন কোনো বিধান নেই। এক সময় ১১ জন বিচারপতিও ছিলেন। খুব শিগগিরই হাইকোর্ট বিভাগ থেকে কিছু বিচারপতি আপিল বিভাগে নেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতি উদ্যোগ নেবেন। একই ভাবে হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতি বাড়ানোর উদ্যোগও রাষ্ট্রপতি নেবেন বলে আমার বিশ্বাস। আর তৃতীয়ত আমরাও হাইকোর্টের বিচারপতি নিয়োগে সংবিধানে যে আইন করার কথা, সেই আইনটার একটা ড্রাফট করেছি। বিচারপতি নিয়োগের জন্য আমরা একটা আইন এই সংসদে নিয়ে আসব। বাড়িভাড়াসংক্রান্ত নতুন আইনের পরিকল্পনা নেই: নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, বাড়িভাড়াসংক্রান্ত নতুন কোনো আইন প্রণয়ন করার পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই। তবে যে আইন আছে, প্রয়োজনে সেই আইনের বিধানগুলো পর্যালোচনা করা হবে। আইনমন্ত্রী বলেন, ভাড়াটিয়াদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত এবং বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের মধ্যে সংঘাত নিরসনের জন্য বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯১ বর্তমানে বিদ্যমান রয়েছে।