সবুজের বুক চিরে শত শত অবৈধ পুকুর খনন, ক্ষোভে ফেটে পড়লেন এলাকাবাসী


সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, অবৈধভাবে পুকুর খনন ও মাদকের বিস্তার প্রতিরোধসহ নানাবিধ অনিয়মের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ। রোববার বিকালে চারঘাট-বানেশ্বর মহাসড়কের বিক্ষোভ মিছিলের পর দুপাশে দাঁড়িয়ে মানবপ্রাচীরের মাধ্যমে সর্বসাধারণের ব্যানারে প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করেন উপজেলার শলুয়া ইউনিয়নবাসী। এতে অংশ নেন শত শত মানুষ। এ সময় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, চাঁদাবাজি ও অবৈধ পুকুর খনন বন্ধসহ অনিয়ম রোধে কয়েক দফা দাবি জানানো হয়। এসব অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোরব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন তারা। মানবপ্রাচীর থেকে জানানো হয়, চারঘাট উপজেলা একটি আম প্রধান এলাকা। এ ছাড়া তিন ফসলি উর্বর জমি রয়েছে এ উপজেলায়। এ উপজেলার মানুষ মূলত আমসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবসার পাশাপাশি কৃষির ওপর নির্ভরশীল। তবে গত কয়েক বছর ধরে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে গুটিকয়েক প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের সদস্যরা দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর জুড়ে সবুজের বুক চিরে একের পর এক অবৈধভাবে পুকুর খনন অব্যাহত রাখলেও ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এতে বছর জুড়েই চলে অবৈধ পুকুর খননসহ সস্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। স্থানীয় গ্রামবাসী একাধিকবার স্থানীয় প্রশাসনকে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ দিলেও কোনো প্রতিকার মেলেনি। ফলে আমসহ বিভিন্ন বাগান উজাড় করে তিন ফসলি জমিতে অবৈধভাবে পুকুর খননকাজ চলমান রয়েছে। এতে পুকুরের আশপাশে জলাবদ্ধাতায় ফসল ফলানো দুষ্কর হয়ে উঠছে কৃষকদের। এ ছাড়া চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন দোকান থেকে পণ্য নিয়ে দাম না দেওয়া, জোর করে পণ্য নিয়ে চলে যাওয়া এখন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে এ এলাকায়। প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন সরদহ কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সাহাবুদ্দিন সরকার, কলেজ শিক্ষক আসাদুজ্জামান, ইউপি সদস্য ফিরোজ খান, হলিদাগাছী বাজার কমিটির সভাপতি শিপন আহম্মেদ প্রমুখ। বক্তব্যে বক্তারা বলেন, উপজেলার শলুয়া ইউনিয়নের নাহিদ হাসান, শান্ত ইসলাম, সাব্বির হোসেন, বিদ্যূত আলী, ও রাসেলের নেতৃত্বে একটি সঙ্ঘবদ্ধ দল শলুয়া ইউনিয়নে অবৈধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। তাদের অবৈধ পুকুর খননসহ চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ইউনিয়নবাসী আজ অতিষ্ঠ। তাদের অবৈধ কর্মকাণ্ডে ব্যবসায়ীরাও আজ ভালোভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারছেন না। তারা বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পণ্য নিয়ে পণ্যের দাম না দিয়ে চলে যাচ্ছেন। প্রতিবাদ করলেও নেমে আসে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের খড়গ। তাই অনেকটা অতিষ্ঠ হয়ে সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে গ্রামবাসী প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে। চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন বক্তারা। মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের কথা শিকার করে চারঘাট থানার ওসি এএসএম সিদ্দিকুর রহমান বলেন, চাঁদাবাজি বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিষয়ে কেউ কোনো ধরনের লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে যখাযথ আইনিব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। চারঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদা খানম বলেন, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।