অনুমোদনই নেই ৬১ শতাংশের


রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) আওতাধীন এলাকায় গড়ে ওঠা এক থেকে বহুতলবিশিষ্ট প্রায় ৫ লাখ ১৭ হাজার ভবন রয়েছে। এর মধ্যে ৩ লাখ ১৭ হাজার অর্থাৎ ৬১ দশমিক ৩২ শতাংশ ভবনের কোনো অনুমোদন নেই। তবে নির্ধারিত জরিমানার মাধ্যমে এসব ভবনের বৈধতা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে নির্মাণাধীন অবৈধ ভবনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অভিযান শুরু হয়েছে। প্রয়োজনে এসব ভবন মালিকদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হবে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের। আরও জানা গেছে, প্রতিবছরে প্রায় ২০ হাজার নতুন ভবন নির্মিত হচ্ছে। এর মধ্যেও অনুমোদিত ভবনের সংখ্যা প্রায় ৯ হাজার। বাকি প্রায় ১১ হাজারের বেশি ভবন অনুমোদন ছাড়াই গড়ে উঠছে। পাশাপাশি সেমিপাকা অবৈধ স্থাপনা রয়েছে ১৬ লাখের বেশি। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে নগর পরিকল্পনাবিদদের অভিমত-অনুমোদন ছাড়া গড়ে ওঠা অবৈধ ভবনগুলো রাজধানীর দুর্যোগ ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। এসব ভবনে ভূমিকম্প, অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও নিরাপত্তার বিষয়গুলো উপেক্ষিত থাকছে। মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পে এসব দুর্বল কাঠামোর ভবনগুলো ধসে পড়বে। অগ্নিপ্রতিরোধ ব্যবস্থা না রাখায় ভবনগুলো অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। অপরিকল্পিত ও অবৈধ এসব ভবন রাজধানী ঢাকাকে বসবাসের অযোগ্য করে গড়ে তুলছে। তাদের মতে, রাজউকের প্রধান কাজ নগর পরিকল্পনা প্রণয়ন, উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ করা। রাজউকের যে সক্ষমতা রয়েছে, তা দিয়ে এ দুটি কাজ যথাযথভাবে করলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। কিন্তু রাজউক থেকে সরে গিয়ে আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়নে মনোযোগী হয়ে পড়েছে। প্লট, ফ্ল্যাট নির্মাণে মনোযোগী হয়েছে। রাজউকের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের ব্যাপারে মনোযোগী হতে হবে। রাজউক সূত্রে জানা যায়, রাজউকের আওতাধীন এলাকায় ভবনের প্রকৃত সংখ্যা কত, তার সঠিক তথ্য নেই নিজেদের কাছে। তবে ২০২২ সালে গেজেটভুক্ত হওয়া রাজউকের বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার (ড্যাপ) জরিপের তথ্যমতে, রাজউক এলাকায় প্রায় ২১ লাখ ৪৫ হাজার ভবন রয়েছে। এর মধ্যে ১ তলা থেকে বহুতলা ভবন রয়েছে ৫ লাখ ১৭ হাজার। এসব ভবনের মধ্যে মাত্র ২ লাখের অনুমোদন রয়েছে, বাকি প্রায় ৩ লাখ ১৭ হাজার ভবনের কোনো অনুমোদন নেই। পাশাপাশি ১৬ লাখের বেশি সেমিপাকা ভবনও অবৈধ। ড্যাপের জরিপে দেখা যায়, ২০০৬ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর গড়ে প্রায় ৯৫ হাজার স্থাপনা গড়ে উঠেছে। ওই সময়ে রাজউক থেকে অনুমোদন নেওয়া হয়-৪ হাজার ১৪৭টি। সে হিসাবে ওই ১০ বছরে নির্মিত স্থাপনার ৯৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ অবৈধ। যদিও পরের সময়ে অনুমোদিত ভবনের সংখ্যা আরও বেড়েছে। বর্তমান সময়ের অবৈধ ভবন অনুমোদিত ভবনের চেয়ে কিছুটা বেশি। সম্প্রতি রাজউকের তৎপরতা বেড়েছে, এ ধারা অব্যাহত থাকলে অনুমোদিত ভবনের চিত্র আরও বাড়বে বলে মনে করছেন তারা। কোথায় কত অবৈধ ভবন : রাজউকের আওতাধীন এলাকা ১ হাজার ৫২৮ বর্গকিলোমিটার। এর মধ্যে রয়েছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ৩০৫ বর্গকিলোমিটার, সাভার উপজেলা, কেরানীগঞ্জ উপজেলা, নারায়ণগঞ্জ, ভুলতা, গাউছিয়া। গাজীপুরের অংশবিশেষ রাজউকের আওতায় ছিল; সম্প্রতি তা গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (গাউক) আওতায় পড়েছে। রাজউক সূত্র বলছে, ঢাকার দুই সিটির ৮০ ভাগ ভবন অনুমোদন নিয়েই নির্মাণ করছে। আর ২০ ভাগ ভবন নির্মাণ অনুমোদন ছাড়াই হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। ঢাকার দুই সিটির বাইরের এলাকার প্রায় ৯০ ভাগ ভবনই অনুমোদন ছাড়াই নির্মিত হয়েছে। নতুন করে চাপাচাপি শুরু হওয়ায় ১০ ভাগ ভবন অনুমোদন প্রক্রিয়ার আওতায় এসেছে। রাজউক সূত্র আরও বলছে, দুই সিটির ভেতর যেসব স্থানে অবৈধ ভবন রয়েছে সেগুলো হচ্ছে-ডেমরা, বসিলা, ঢাকা উদ্যান, কামরাঙ্গীরচর, সারুলিয়া, নাসিরাবাদ, ডুমনি, উত্তরখান, দক্ষিণখান, হরিরামপুর, ভাটারা, বাড্ডা, পুরান ঢাকা সরু সড়ক এলাকা। আর ঢাকার দুই সিটির বাইরে সাভার, কেরানীগঞ্জ, ভুলতা, গাউছিয়া ও নারায়ণগঞ্জ এলাকায় শত শত ভবন অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে। রাজউকের কোনো ধরনের অনুমোদন ছাড়াই হাউজিং প্রকল্পের নামে কেরানীগঞ্জে অর্ধশত আবাসিক এলাকা গড়ে উঠেছে। সেখানে এখন বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। মডেল কেরানীগঞ্জের-ঘাটারচর এলাকার লেকসিটিতে প্রায় ৩০টি ১০ তলার বেশি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে ফ্ল্যাট বিক্রিও চলছে দেদার। কোনো ধরনের সক্ষমতা না থাকলে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ভবনের অনুমোদনপত্র দেখিয়ে ব্যাংক ঋণও পাচ্ছেন। হাউজিং প্রকল্প হিসেবে দেখিয়ে উঁচু দামে প্লট বিক্রি করছে। এসব দেখেও ‘নীরব দর্শক’-এর ভূমিকায় রয়েছে রাজউক। বৈধতা দেওয়ার উদ্যোগ : দায়িত্ব অবহেলার কারণে রাজউকের আওতাধীন এলাকায় হাজার হাজার অবৈধ ভবন ও স্থাপনা গড়ে উঠেছে। প্রকাশ্যে এসব গড়ে উঠলেও রাজউক নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে চলেছে। এখন রাজউক সেসব ভবন বৈধ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। রাজউকের সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা জানান, হাজার হাজার অবৈধ ভবন ভেঙে ভবন নির্মাণকাজ শৃঙ্খলায় আনা রাজউকের পক্ষে সম্ভব নয়। এজন্য অবৈধ ভবনগুলোকে বৈধ করে দিতে চায় রাজউক। এজন্য ড্যাপের প্রস্তাব রয়েছে। তার আলোকে একটি নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে। বিষয়টি নগর কমিটিতেও আলোচনা হয়েছে। তারা জানান, অবৈধ ভবনকে বৈধ করতে চারটি ক্যাটাগরি করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে রাজউক। যারা জাতীয় বিল্ডিং কোড অনুসরণ করে ভবন নির্মাণ করেছে, তারা স্বল্প পরিমাণ জরিমানা দিয়ে ভবনের অনুমোদন পাবে। আর যাদের বিল্ডিং অনুমোদন ও নির্মাণ আইন লঙ্গণের হার বেশি থাকবে তাদের জরিমানার পরিমাণ বেশি হবে। পাশাপাশি জলাশয় ভরাট করে নির্মাণ করা ভবন বা অনেক বেশি নিয়ম লংঘন করা হলে সেখানে কোনো ধরনের নিয়ম অনুসরণ করা হবে না। নগর পরিকল্পনাবিদদের অভিমত : জানতে চাইলে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাবেক সভাপতি ও নগর পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ ফজলে রেজা সুমন বলেন, রাজউকের সদিচ্ছার অভাবে হাজার হাজার অবৈধ ভবন নির্মিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান দায়িত্ব রাজধানী এলাকার পরিকল্পনা প্রণয়ন ও উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ করা; কিন্তু রাজউক সেদিকে মনোযোগ দেয়নি। বরং হাউজিং প্রকল্প বাস্তবায়নে বেশি মনোযোগী ছিল। প্রকাশ্যে হাজার হাজার অবৈধ ভবন গড়ে উঠলে সেসব নিয়ন্ত্রণে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তিনি বলেন, ঢাকার দুই সিটি এলাকার ৮০ ভাগ ভবনের কাগজে-কলমে অনুমোদন রয়েছে। বাস্তবেও সেসব নিয়ম লংঘন করে নির্মিত হচ্ছে। আর এটা রাজউকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে ভবন নির্মাতাদের অবৈধ সমঝোতার মাধ্যমে হচ্ছে। ফ্লোর এরিয়া রেশিও (এফএআর), ফায়ার সিস্টেম ও নিরাপত্তার নিয়মগুলো মানা হচ্ছে না। এতে ভবনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে। ঢাকার কয়েকটি অগ্নিদুর্ঘটনার পর সেসব বিশ্লেষণে বাস্তব চিত্রও বেরিয়ে এসেছে। তিনি জানান, রাজউকের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের কাঠামো দিয়ে সঠিক লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে না। আমলাতান্ত্রিক ও অকারিগরি পরিচালনা থেকে রাজউককে মুক্ত করতে হবে। সেখানে জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞদের দায়িত্ব দিতে হবে। তাহলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। নইলে রাজউক এলাকায় অবৈধ ভবনের সংখ্যা বাড়তে থাকবে। আর এভাবে চলতে থাকলে রাজধানী শহর এলাকাকে কোনোভাবেই বাসযোগ্য রাখা সম্ভব হবে না। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক ও নগর পরিকল্পনাবিদ শেখ মুহাম্মদ মেহেদী আহসান বলেন, রাজউকের ব্যর্থতার কারণে হাজার হাজার অবৈধ ভবন দেশের রাজধানী শহর এলাকায় গড়ে উঠেছে। এসব নিয়ন্ত্রণের সব ধরনের আইনগত ক্ষমতা দেওয়া থাকলেও আইনের প্রচার ও বাস্তবায়ন না হওয়ায় তা কার্যকর হচ্ছে না। তিনি বলেন, সম্প্রতি রাজউক অবৈধ প্রতিষ্ঠানগুলোকে বৈধতা দেওয়ার একটি নীতিমালা প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে। সেখানে মতামত দিতে আমাকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। ওই সভায় আমি সব অবৈধ ভবন ও স্থাপনার মালিককে চিঠি দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলাম, এটা করলে তারা চাপে থাকবে; রাজউকের এটা করা উচিত। তবে এই পরামর্শ শুনে ওই সভায় রাজউকের প্রতিনিধিরা বলছিলেন, এত বিশাল সংখ্যা, এটা কীভাবে করা সম্ভব। অবৈধ ভবন নির্মাণ বন্ধ করতে হলে নির্মাতাদের চিহ্নিত করে তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। তাদের প্রতি আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। রাজউকের এসব বিষয়ে তেমন কোনো আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। কর্তৃপক্ষ যা বললেন : রাজউক চেয়ারম্যান (সচিব) মো. আনিছুর রহমান মিঞা বলেন, রাজউক এলাকায় অনেক অবৈধ ভবন গড়ে উঠেছে, এটা সত্য। তবে নতুন করে অবৈধ ভবন নির্মাণ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এজন্য নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। রাজউকের জনবল ঘাটতি অনেকাংশে কমেছে; যে কারণে অভিযান পরিচালনার সংখ্যা বেড়েছে। তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে নিয়ম না মেনে রাজউক এলাকায় হাজার হাজার ভবন গড়ে উঠেছে। যেখানে মানুষ বসবাস করছে। সেসব ভবন ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন। এজন্য নির্মিত ভবনগুলো যাচাই-বাছাই করে জরিমানা দিয়ে অনুমোদন দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সে বিষয়ে নগর কমিটির সভায়ও ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। এমন উদ্যোগ নিতে পারলে আর এখনকার তৎপরতা অব্যাহত থাকলে সামনের দিনগুলোতে অবৈধ ভবন নির্মাণ শূন্যের কোঠায় নেমে আসবে। তিনি জানান, রাজউক এলাকায় পৌরসভা, উপজেলা, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণের অনুমোদন দিতে পারে না। এরপরও সাভার, কেরানীগঞ্জসহ আশপাশের এলাকায় এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে। সেসব সংস্থাকেও চিঠি দেওয়া হয়েছে। আপাতত নতুন করে আর কোনো ভবনের অনুমোদন তারা দিচ্ছে না বলে আমরা জেনেছি। তারপরও রাজউকের অনুমোদন ছাড়া কেউ ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করলে তা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে; মামলা দেওয়া হচ্ছে। অন্য কোনো সংস্থা অনুমোদন দিলেও তা অবৈধ হিসাবে বিবেচিত হবে। প্রয়োজনে আমরা অবৈধ ভবন নির্মাতাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করব। জানতে চাইলে রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, অবৈধ ভবন নগরের ঝুঁকি তৈরি করছে। বিভিন্ন সময়ে রাজউক এলাকায় অবৈধ ভবন গড়ে উঠেছে। সেসব চাইলে ভেঙেও ফেলা যাচ্ছে না; এজন্য দৃষ্টান্তমূলক জরিমানায় বৈধতা দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণের চিন্তাভাবনা চলছে। সেটা হলেও অবৈধ ভবনগুলো রাজউকের আওতায় আসবে। তখন নতুন করে অন্যরা অবৈধ ভবন তৈরির সাহস দেখাবে না। তিনি বলেন, রাজউকের বর্তমান চেয়ারম্যানের নির্দেশনায় অবৈধ ভবন নির্মাণের বিরুদ্ধে বিশেষ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কেরানীগঞ্জে কয়েকদিন ধরে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। সব এলাকায় অভিযান অব্যাহত থাকবে। কেননা রাজউক রাজধানী ও আশপাশের এলাকাকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে চায়। অবৈধ ভবনের নির্মাতাদের বিরুদ্ধে রাজউক অবস্থান আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় কঠোর। সবাইকে আইন মেনে ভবন নির্মাণ করতে হবে। নইলে তাদের ভবন ভেঙে দেওয়া হবে, জরিমানা করা হবে।