বৈদেশিক ঋণের খরচ বাড়াতে ৪ নির্দেশনা


চলমান সংকট মোকাবিলায় বৈদেশিক ঋণ ও অনুদানের অর্থ আছে এমন প্রকল্পের বাস্তবায়ন বাড়াতে চার নির্দেশনা দিয়েছে পর্যালোচনা কমিটি। বুধবার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে এ কমিটির বৈঠক হয়। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ৩৬ জন সিনিয়র সচিব ও সচিব অংশ নেন। সভায় অংশ নেওয়া দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সভায় বৈদেশিক সহায়তার (ঋণ ও অনুদান) ২৭৯টি প্রকল্পের অবস্থা খতিয়ে দেখা হয়। এগুলোর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি প্রকল্পে ধীরগতি বিরাজ করছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে কমিটির পক্ষ থেকে দেওয়া নির্দেশনাগুলো হলো- প্রথমত, প্রকল্পের গতি বাড়িয়ে বৈদেশিক অর্থের খরচ বাড়াতে তৎপর হতে হবে। দ্বিতীয়ত, প্রকল্প বাস্তবায়ন পর্যায়ে কোথাও সমস্যা হলে প্রয়োজনে মুখ্য সচিবের হস্তক্ষেপ কামনা করা যাবে। তৃতীয়ত, প্রকল্প পরিচালক নিয়োগে কোনোভাবেই দেরি করা যাবে না। চতুর্থত, প্রকল্পে প্রস্তুতি কার্যক্রম আগেভাগেই করে রাখতে হবে। যেমন- ক্রয় পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন পরিকল্পনা ইত্যাদি কাজগুলো করা থাকলে প্রকল্পের বাস্তবায়ন সহজ হয়। ওই কর্মকর্তা আরও জানান, সার্বিকভাবে বৈদেশিক সহায়পুষ্ট প্রকল্পে কোনো সমস্যা আছে কি না- সেটি দেখা হয়েছে। সেগুলো দ্রুত সমাধানের বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। প্রকল্পের গতি বাড়িয়ে বৈদেশিক অর্থের ব্যয় বাড়াতে ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়। সূত্র জানায়, গত ২৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় পরিকল্পনা কমিশনের সভা। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বৈদেশিক অর্থায়নপুষ্ট প্রকল্পগুলোর অর্থায়ন যথাযথভাবে ব্যবহারের বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি ত্রৈমাসিক ভিত্তিকে অগ্রগতি খতিয়ে দেখবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম বৈঠকটি আজ অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে আরও যে দুটি বিষয় আলোচনা হয়, সেগুলো হলো- গ্রিন অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট ডেভেলপমেন্ট (জিসিআরডি) নীতিমালার আলোকে প্রকল্প নির্ধারণ এবং প্রজেক্ট প্ল্যানিং সিস্টেম (পিপিএস) সফটওয়্যারের মাধ্যমে অনলাইনে প্রকল্প প্রক্রিয়াকরণ। আইএমইডি সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো বৈদেশিক সহায়তা থেকে ব্যয় করেছে ২৮ হাজার ৩৮৪ কোটি টাকা বা ৩০ দশমিক ২০ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে ব্যয় হয়েছিল ২৯ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা বা ৩১ দশমিক ৩৫ শতাংশ। তুলনা করলে দেখা যায়, এখন পর্যন্ত এ অর্থবছর কম ব্যয় হয়েছে ৭৭১ কোটি টাকা। এদিকে চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে এডিপি বরাদ্দ দেওয়া আছে ৯৪ হাজার কোটি টাকা। আগামী ১২ মার্চ অনুষ্ঠেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে উত্থাপন হতে যাওয়া সংশোধিত এডিপিতে কমছে সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা। এমন পরিস্থিতিতে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হলো।