বুয়েটে ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা


বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ক্যাম্পাসে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রবেশের প্রতিবাদে সমাবেশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার বিকালে প্রতিষ্ঠানটির শহিদ মিনারের পাদদেশে সমাবেশ করে তারা এই ঘটনায় জড়িতদের বহিষ্কারসহ ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেন। আর দাবি বাস্তবায়নে ৩০ ও ৩১ মার্চ ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা। সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, গতকাল (বৃহস্পতিবার) মধ্যরাতে একটি বিশেষ রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতা ক্যাম্পাসের মেইন গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করছেন। যেখানে রাত সাড়ে ১০টার পর নিরাপত্তাজনিত কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীদেরই ক্যাম্পাসে ঢোকার অনুমতি নেই সেখানে রাজনৈতিকভাবে সংশ্লিষ্ট বহিরাগতরা মধ্যরাতে ক্যাম্পাসে কিভাবে প্রবেশ করল সেই প্রশ্ন আমাদের। তারা বলেন, রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একের পর এক মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার ক্যাম্পাসের মেইন গেটের সামনে আসতে থাকে। এরপর বিপুলসংখ্যক বহিরাগত ক্যাম্পাসে অনায়াসে প্রবেশ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী সাংগঠনিক রাজনীতি নিষিদ্ধ এবং ক্যাম্পাসে রাতের আঁধারে রাজনৈতিক সমাগম ও বহিরাগতদের আগমন বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদার প্রতি তীব্র অপমান। একই সঙ্গে এটি একটি নিরাপদ ক্যাম্পাস এবং শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠু-স্বাভাবিক শিক্ষার পরিবেশের নিরাপত্তার প্রতি হুমকি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তর কোনোভাবেই এ ঘটনার দায় এড়াতে পারে না।’ সমাবেশ থেকে যে দাবিগুলো তুলে ধরা হয়, সেগুলো হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের সুস্পষ্ট বিধিমালা লঙ্ঘন করে রাজনৈতিক সমাগমের মূল সংগঠক ইমতিয়াজ রাব্বিকে বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার; রাব্বির সঙ্গে বুয়েটের যেসব শিক্ষার্থী জড়িত তাদের বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার; বহিরাগত রাজনৈতিক ব্যক্তি যারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা, তারা কেন, কিভাবে প্রবেশ করার অনুমতি পেল এর ব্যাখ্যা; ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনোরকম হয়রানিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না- এই মর্মে লিখিত প্রতিশ্রুতি। জানা যায়, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি, দপ্তর সম্পাদকসহ অনেকেই বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। তাদের ক্যাম্পাসে আনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন ইমতিয়াজ রাব্বি। ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ার পর বুয়েটে এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে নতুন করে রাজনীতি শুরুর পাঁয়তারা হিসাবে দেখছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।