ঈদ ‘ইত্যাদি’ সাজানো হলো যেভাবে
অনলাইন নিউজ ডেক্স
প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদ আনন্দের সঙ্গে দর্শকদের জন্য বাড়তি আনন্দ নিয়ে আসছে হানিফ সংকেতের ‘ইত্যাদি’। এবার পুরো আয়োজন ধারণ করা হয়েছে মিরপুর শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে।
এবারও শুরুটা হচ্ছে- ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ গানটি দিয়ে। গত তিন দশক ধরেই হাজার হাজার মানুষ নিয়ে ঢাকায় ও দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন আঙ্গিকে এই গানটি পরিবেশন করে আসছে।
একসময় এই গানটি অবহেলিত থাকলেও এখন ঈদের সময় সব চ্যানেলেই এই গানটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করা হয়। নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণের ধারাবাহিকতায় এবারে এই গানটি পরিবেশন করবেন প্রখ্যাত নজরুলসংগীত শিল্পীদের সঙ্গে এই প্রজন্মের প্রায় ৩৫ জন শিল্পী।
এছাড়াও নৃত্যে-ছন্দে-আনন্দে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী একই রকম পোশাক ও রঙবেরঙের উপকরণ নিয়ে এই গানের চিত্রায়ণে অংশ নিয়েছেন। সবার সম্মিলিত বর্ণিল পরিবেশনা ও হাজার হাজার দর্শকের অংশগ্রহণে পুরো স্টেডিয়ামে এক উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়েছিল। গানটির সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদি।
এবারের ‘ইত্যাদি’তে গাইবেন এই প্রজন্মের ক’জন জনপ্রিয় শিল্পী। ‘জীবনের সব সুখ’ শিরোনামে বাপ্পা মজুমদারের সঙ্গে একটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন ইমরান মাহমুদুল। ‘রঙে রঙে রঙিন হবো’ শিরোনামে আরেকটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তাহসান খান এবং তাসনিয়া ফারিণ।
এবারের আসরে ফোক ও আধুনিক এই দুই ধারার সমন্বয়ে তৈরি একটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন প্রয়াত সংগীতশিল্পী খালিদ হাসান মিলুর দুই সন্তান প্রতীক হাসান ও প্রীতম হাসান। গানটিতে এই দুই ভাইয়ের সঙ্গে অংশ নিয়েছেন ৮ জন তরুণ বিট বক্সার।
এবারের নাচের বিষয় সেকাল আর একালের বিয়ে। নাচটি পরিবেশন করেন দেশের খ্যাতিমান নৃত্যজুটি শিবলী মোহাম্মদ ও শামীম আরা নিপা। তাদের সঙ্গে ছিলেন দেড় শতাধিক নৃত্য ও অভিনয়শিল্পী। নাচটির সংগীত পরিচালনা করেছেন আকাশ মাহমুদ।
দুটি ভিন্ন বিষয় নিয়ে বক্তব্যধর্মী মিউজিক্যাল ড্রামা দেখা যাবে এবার। একটিতে চার জন অভিভাবকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন শহীদুজ্জামান সেলিম, আজিজুল হাকিম, সাবেরী আলম ও আল মামুন। আরেকটি মিউজিক্যাল ড্রামায় স্বামী-স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইন্তেখাব দিনার ও সারিকা সাবরিন।
একটি মজাদার নাটিকায় অংশ নিয়েছেন মীর সাব্বির ও নাসির উদ্দিন খান। এই দুই অভিনেতার মনোজ্ঞ ও রসালো অভিনয়ে ফুটে উঠেছে বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়ার বিভিন্ন সমস্যা।
তথাকথিত ভাইরাল সেলিব্রেটিদের বিভিন্ন কার্যকলাপ নিয়ে ‘ইত্যাদি’র মঞ্চে দর্শকদের সামনে নির্মিত একটি নাটিকায় অভিনয় করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কজন নাট্যপ্রেমী শিক্ষার্থী, আর এই পর্বটি পরিচালনা করেছেন তানিয়া আহমেদ।
শুধু প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে অনুষ্ঠান ধারণই নয়-প্রায় দুই যুগ ধরে ‘ইত্যাদি’তে বিদেশি নাগরিকদের দিয়েও আমাদের লোকজ সংস্কৃতি, বিভিন্ন গ্রামীণ খেলাধুলা, ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে নিয়মিতভাবে তুলে ধরা হচ্ছে। এবারও থাকছে পর্বটি।
প্রতিবারই ‘ইত্যাদি’র দর্শক নির্বাচন প্রক্রিয়া থাকে ভিন্ন রকম। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ব্যতিক্রমী উপকরণের মাধ্যমে নির্বাচিত ৩ জন দর্শকের মুখোমুখি হয়েছেন বরেণ্য অভিনেতা আবুল হায়াত।
এবারের ঈদেও রয়েছে নাতি আর নানি, শোনা যাবে নাতির ভুল ধরার বাণী। এছাড়াও রয়েছে ঈদকে ঘিরে ডজনখানেক বিদ্রূপাত্মক রসালো নাট্যাংশ। দান-অনুদানে অনিয়ম, সংগীতের সেকাল-একাল-ক্রান্তিকাল, ঘুষ-অন্যায় নাকি অন্য আয়, অপাত্র-সুপাত্র এবং বিয়ের ভালো-মন্দ ও ভূত-ভবিষ্যৎ, কাপড়ে মাপের ফাঁপরে পড়ে, প্রেমিক-প্রেমিকা নাকি স্বামী-স্ত্রী কারা সুখী, জীবনের গল্প নিয়ে নাটকে আটক নায়কসহ বিভিন্ন বিষয়ে আরও কয়েকটি নাট্যাংশ রয়েছে।
‘ইত্যাদি’র নিয়মিত অভিনয় শিল্পীদের পাশাপাশি এসব পর্বে অভিনয় করেছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় অভিনয় শিল্পীরা। শিল্প নির্দেশনা করেছেন যথারীতি মুকিমূল আনোয়ার মুকিম। পরিচালকের সহকারী হিসাবে ছিলেন রানা সরকার ও মামুন মোহাম্মদ।
‘ইত্যাদি’ রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। নির্মাণ করেছে ফাগুন অডিও ভিশন, স্পন্সর করেছে কেয়া কসমেটিকস লিমিটেড। ঈদের বিশেষ ইত্যাদি একযোগে বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে প্রচারিত হবে ঈদের পরদিন রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর।
ডোনেট বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।