সামাজিক নিরাপত্তায় বরাদ্দ বৃদ্ধি ১০ হাজার কোটি টাকা


২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে সুবিধাভোগীর সংখ্যা বাড়াতে ১০ হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বাজেটে এ প্রস্তাব করেন তিনি। এ সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, সামাজিক নিরাপত্তামূলক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আগামী অর্থবছরে এক লাখ ৩৬ হাজার ২৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা গত অর্থবছরে ছিল এক লাখ ২৬ হাজার ২৭২ কোটি টাকা। তিনি বলেন, প্রতিবন্ধীদের স্বার্থ এবং অধিকার সুরক্ষায় আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আগামী অর্থবছর প্রতিবন্ধী ভাতাপ্রাপ্তদের সাংখ্যা বর্তমানে ২৯ লাখ থেকে বৃদ্ধি করে ৩২ লাখ ৩৪ হাজার জনে উন্নীত করা হবে। এছাড়া প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের উপবৃত্তির হার বিদ্যমান ৯৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০৫০ টাকায় উন্নীত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, আগামী অর্থবছরে উপকারভোগীর সংখ্যা ১৫ লাখ ৪ হাজার ৮০০ জন থেকে ১৬ লাখ ৫৫ হাজার ২৮০ জনে উন্নীতকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিদায়ী অর্থবছরে ৫৮ লাখ ১ হাজার প্রবীণকে মাসিক ৬০০ টাকা হারে মোট চার হাজার ২০৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয় জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী অর্থবছরে সুবিধাভোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি করে ৬০ লাখ এক হাজার জনে উন্নীত করা হবে। যার জন্য ৪ হাজার ৩৫১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মাহমুদ আলী বলেন, দেশে বর্তমানে ২৫ লাখ ৭৫ হাজার বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারী ভাতা পাচ্ছেন। সেই সংখ্যা ২৭ লাখ ৭৫ হাজার জনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেজন্য এক হাজার ৮৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে বর্তমানে মোট ৬ হাজার ৮৮০ জনকে ভাতা দেওয়া হচ্ছে। আগামী অর্থবছরে মোট ১২ হাজার ৬২৯ জনকে ভাতার আওতায় আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। বেদে জনগোষ্ঠীর জন্য ভাতা প্রদান কার্যক্রম চলমান থাকবে। তিনি বলে, আগামী অর্থবছরে সমাজের অনগ্রসর অন্যান্য জনগোষ্ঠীর ৯০ হাজার ৮৩২ জনকে ভাতার আওতায় আনা হবে। হিজড়া, বেদেসহ সকল অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে শিক্ষা উপবৃত্তি চলমান থাকবে। এ অর্থ বছরে বাজেটে ভর্তুকি ও প্রণোদনা বাবদ মোট ৮৮ হাজার ২৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী, যেখানে বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এর পরিমাণ ৮৬ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকা। তার মানে ভর্তুকি ও প্রণোদনা বাবদ আগের চেয়ে ১৭২০ কোটি টাকা বেশি বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। বাজেটে সম্পদের ব্যবহার বিবরণীতে দেখা যায়, সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণ খাতে ভর্তুকি ও প্রণোদনা বাবদ এবার বরাদ্দ রাখা হয়েছে পাঁচ হাজার ২৬৭ কোটি টাকা। এই বরাদ্দ বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট থেকে ২৩৬ কোটি টাকা কম; ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বরাদ্দ রাখা হয় ৫ হাজার ৫০৩ কোটি টাকা।