চার দিনের সফরে পাবনায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি


রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন আজ রোববার চতুর্থবারের মত চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে নিজ জেলা পাবনায় যাচ্ছেন। রাষ্ট্রপতির আগমনকে ঘিরে পাবনায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। রাষ্ট্রপতির আগমনে শুভেচ্ছা ও স্বাগত জানিয়ে আলোক সজ্জা, বিলবোর্ডসহ নানা রঙে সাজানো হয়েছে পাবনা শহরের বিভিন্ন স্থান।এছাড়া ব্যাপক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। রাষ্ট্রপতির প্রটোকল অফিসার মো. মামুনুল হক স্বাক্ষরিত সফরসূচি থেকে জানা গেছে, ৯ জুন দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে ঢাকা থেকে রাষ্ট্রপতি হেলিকপ্টারযোগে পাবনায় পৌঁছাবেন। সেখান থেকে সার্কিট হাউসে পৌঁছে গার্ড অব অনার শেষে বিশ্রাম নেবেন এবং রাত্রিযাপন করবেন। পরদিন ১০ জুন বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে পাবনার সরকারি চাকরিজীবিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন এবং সার্কিট হাউসে রাত্রিযাপন করবেন। এরপর ১১ জুন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পাবনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করবেন এবং সার্কিট হাউসে রাতযাপন করবেন। রাষ্ট্রপতি পরদিন ১২ জুন দুপুর ১টা ৪০ মিনিটের দিকে পাবনা থেকে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন। বঙ্গভবনের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্রপতি এবারে বেশি কর্মসুচি রাখেননি। তারপরও শহরের বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বিনোদন পার্ক সংলগ্ন নিজ বাড়িসহ তার সম্ভাব্য আড্ডার জায়গাগুলোতে তিনি হয়তো যেতে পারেন-এজন্য সেগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট প্রতিঠানগুলোর কর্তৃপক্ষও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রেখেছেন।রাষ্ট্রপতি সর্বশেষ জানুয়ারি মাসে পাবনায় আসেন এবং সেবার তার পুরোনো আড্ডাস্থল পাবনা প্রেস ক্লাব, মিডিয়া সেন্টার, পাবনা ডায়াবেটিক সমিতি, লক্ষী মিষ্টান্ন ভান্ডারে যান। এছাড়া পিতামাতার কবর জিয়ারতসহ নিজ বাড়িতেও কিছু সময় কাটান। এবারে এসব জায়গা তার সফরসূচিতে নেই। রাষ্ট্রপতির ঘনিষ্ঠ বাল্যবন্ধু এবং পাবনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর শিবজিত নাগ বলেন, সাহাবুদ্দিন বন্ধুবৎসল এবং ছোটবেলা থেকেই আড্ডা প্রিয়। কাজেই কর্মসূচিতে না থাকলেও তিনি ইচ্ছা করলে তার স্মৃতিময় জায়গাগুলোতে যেতে পারেন। তিনি বলেন, বহুমুখি প্রতিভা এবং প্রজ্ঞার জীবন্ত কিংবদন্তী পাবনা সফরে আসলেই আমাদের আবেগের শেষ থাকেনা। এবারও আমরা আগোপ্লুত। এদিকে পাবনার গর্বিত সন্তান রাষ্ট্রপতির সফরকে কেন্দ্র করে বরাবরের মতই জেলাজুড়ে চলছে আনন্দ উৎসব। রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানিয়ে পাবনা শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যানার-ফেস্টুন টাঙাচ্ছেন নেতাকর্মীরা। দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সাহাবুদ্দিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত বছর প্রথম পাবনায় সফরে আসলে তাকে ১৬ মে সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ মাঠে স্মরণকালের বৃহত্তম নাগরিক সংবর্ধনা দেয়া হয়। পরে রাষ্ট্রপতি আরো দু’বার নিজ জেলা সফরে আসেন। রাষ্ট্রপতির আরেক বাল্যবন্ধু পাবনা ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বেবী ইসলাম বলেন, রাষ্ট্রপতি এর আগে সফরে এসে বহুল কাঙ্খিত পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। এটি তার প্রচেষ্টায় আলোর মুখ দেখে। রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপে পাবনার ঐতিহাসিক ইছামতি নদী সংস্কার ও উন্নয়ন প্রকল্প আলোর মুখ দেখেছে এবং দেড় হাজার কোটি টাকার বেশী ব্যয় বরাদ্দে সে প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। তিনি আমাদের আশা আকাঙ্খার প্রতীক। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা পাবনায়। তিনি স্মাতক এবং এলএলবি পড়েছেন পাাবনায়। পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি পাশ করেন। পাবনায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং আওয়ামীলীগ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। রেড ক্রিসেন্ট এর জেলা সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে পাবনায় সাংবাদিকতা করেন। ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত পাবনা প্রেস ক্লাবের তিনি ২২তম সদস্য। ছাত্ররাজনীতিসহ নানা সমাজসেবা কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত ছিলেন।