স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশন করার কথা ভাবছি: তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা


দলবাজি না করে নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে দেশের জন্য কাজ করতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের মধ্যে দলাদলি চাই না, মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার চর্চা হোক। স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশন করার কথাও ভাবছি। দায়িত্ব পাওয়ার পর রোববার তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে এসে কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরিচিত হন নাহিদ। পরে সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। নাহিদ ইসলাম বলেন, স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশনের রূপরেখা কী হবে তা সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করব। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত এবং আহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দেশ দেন নাহিদ। বিদায়ি হাসিনা সরকারের বাধার কারণে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের যেসব ছবি-ভিডিও প্রকাশ করা হয়নি, তা ব্যাপকভাবে প্রচারের নির্দেশ দেন। তথ্য উপদেষ্টা বলেন, এখনো হাসপাতালে নিহত ও আহত বহু মানুষ রয়েছে- যাদের পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যাপক প্রচার পেলে তাদের চিনতে স্বজনদের সহজ হবে। হতাহতদের সঠিক সংখ্যা জানতে তিনি সাংবাদিকদের সহযোগিতা চান। উপদেষ্টা বলেন, সেন্সর বোর্ডে আটকে থাকা যেসব ছবি বাজারে আসেনি আইনগত বাধা না থাকলে সেগুলো দ্রুত রিলিজ করা হবে। সেন্সর বোর্ড দ্রুততার সঙ্গে পুনর্গঠন করব। সেন্সর বোর্ড না থাকার যে দাবি, সেটিও আলোচনা করে যৌক্তিকতা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেব। আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে আমার ছবি যত কম প্রচার করা যায়। অনেকে এখন ব্যক্তিগত বিরোধের জের ধরে কারও বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে। এ বিষয়ে আপনারা কী ভাবছেন- জানতে চাইলে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘যারা অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না, তাদের যেন কোনো ধরনের শাস্তি দেওয়া না হয়, সে বিষয়ে আমাদের নির্দেশনা রয়েছে। মামলাগুলো হলেও সেগুলো সুস্পষ্ট তদন্তের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সে বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়কে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া আছে।’ গণমাধ্যমকর্মী আইনটি দীর্ঘদিন ঝুলে আছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে নাহিদ বলেন, এটি আমি দেখব। সাগর-রুনী হত্যার বিচার সরকার দ্রুত চাইছে জানিয়ে তিনি বলেন, এটা নিয়ে কোনো ধরনের প্রহসন, টালবাহানা চাচ্ছি না। তিনি বলেন, নিবর্তনমূলক আইন, যেগুলো গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য অন্তরায়- সেগুলো পুনর্বিবেচনা করতে হবে। নাহিদ ইসলাম বলেন, সব মন্ত্রণালয়ের একটা কাঠামোগত সংস্কারের কথা ভাবছি। যাতে দীর্ঘমেয়াদে এর সুফল আসে। বিভিন্ন আইনের পরিবর্তন, সাংবাদিকদের বেতনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীনে যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, সেগুলো আধুনিকায়ন করা হবে। ডিএফপি এবং পিআইবিতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপদেষ্টা বলেন, আমরা তো বলেছি যে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতির স্থান এখানে দেখতে চাই না। প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে দাঁড় করাতে হবে। তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, আমাকে স্যার ভাবার দরকার নেই। আমাকে স্যার বলারও দরকার নেই। আমি আপনাদের সরকার হিসাবে এখানে এসেছি। আমি জনগণের পক্ষ থেকে এসেছি। জনগণের দাবি-দাওয়া নিয়ে এসেছি। একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে এসেছি। এখন আমি আপনাদের কাছে সেই সহযোগিতাটা কামনা করছি।