কলকাতায় চিকিৎসককে ধর্ষণ-হত্যাকাণ্ডে মামলা নিল সুপ্রিমকোর্ট


ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে এক নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় উত্তাল পুরো দেশ। প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন হাজারো মানুষ। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ঘটনার তদন্ত শুরু করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। তবে এবার স্বতঃপ্রণোদিতভাবে সেই মামলার ভার নিল দেশটির সুপ্রিমকোর্ট। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের তিন বিচারপতির বেঞ্চে এ মামলার শুনানি হবে। বৃহস্পতিবার সুপ্রিমকোর্টের দুই আইনজীবী উজ্জ্বল গৌঢ এবং রোহিত পান্ডে প্রধান বিচারপতিকে একটি চিঠি লিখে এ বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ নেওয়ার আর্জি করেন। সেই চিঠিতে গত ১৪ আগস্ট মধ্যরাতে আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাণ্ডবের কথা উল্লেখ করে দাবি করা হয়, প্রমাণ লোপাট করতেই পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। আদালত সূত্রে জানা গেছে, সোমবার আদালত বন্ধ থাকায় মঙ্গলবার শুনানির দিন ধার্য করা হয়। এ দিন শীর্ষ আদালত খুললেই প্রথমে এই মামলার শুনানি হবে। প্রধান বিচারপতি ছাড়া বেঞ্চে থাকবেন বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্র। আর জি করের পুরো বিষয়টির ওপর নজর রাখতেই সরাসরি মামলা হাতে নিয়েছেন দেশের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। এ ঘটনায় তদন্তের গতিপ্রকৃতি, হাসপাতাল ও রাজ্যের ভূমিকা খতিয়ে দেখবেন শীর্ষ আদালত। এ ছাড়া কর্মস্থলে নারীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়েও শুনানি করতে পারেন সর্বোচ্চ আদালত। হাইকোর্টে ওই ঘটনা নিয়ে করা জনস্বার্থ মামলার সঙ্গে যুক্ত এক আইনজীবী জানিয়েছেন, সুপ্রিমকোর্ট নিজে ওই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ নিয়েছেন। ফলে আপাতত সেখানে সিবিআই তদন্তসহ পুরো বিষয়টি নিয়ে শুনানি হবে। এদিকে চিকিৎসক ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডে ভারতজুড়ে এখনো প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ চলছেই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ১৮ আগস্ট থেকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত এক সপ্তাহের জন্য আর জি করসহ পাশের বেলগাছিয়া ও শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড় এলাকায় জমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বলা হয়েছে, ওই এলাকায় পাঁচজন বা তার বেশি মানুষের জমায়েত করা যাবে না। অন্যদিকে সিবিআই এ ঘটনার তদন্তের জন্য হাসপাতালের সদ্য পদত্যাগী অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। শুক্রবার বেলা ৩টা থেকে তাকে সিবিআই দপ্তরে এনে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। উল্লেখ্য, ৯ আগস্ট কলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। পরের দিন ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সেমিনার হল থেকে তার ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে ভারতজুড়ে জ্বলছে বিক্ষোভের আগুন।