সে সময় হাসপাতাল থেকে কাগজপত্র সরিয়ে ফেলার নির্দেশ ছিল: উপদেষ্টা


আন্দোলনের সময় সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাওয়া মানুষের তালিকা সরিয়ে ফেলার কথা জানিয়ে বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, যেসব হাসপাতাল থেকে কাগজপত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, যারা নির্দেশ দিয়েছেন এবং যারা কাগজপত্র সরিয়েছেন তাদের সবার ব্যাপারে তদন্ত হচ্ছে এবং দোষীদের শাস্তি দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে তিনি জানান। উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, জুলাই আন্দোলনে শহিদ বলেন, আহত বলেন, তাদের তালিকা করতে গিয়ে এই বিষয়টি আমাদেরকে ভোগাচ্ছে। তিনি বলেন, সে সময় হাসপাতালগুলো থেকে কাগজপত্র সরিয়ে ফেলার একটা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। অনেক কাগজপত্র সরিয়ে ফেলার কারণে আমরা অনেক জায়গা থেকে তথ্য পেলেও হাসপাতাল থেকে ক্রসচেক করার সুযোগ পাচ্ছি না। ফলে আমাদের কাছে ভেরিফায়েড লিস্ট ছাড়াও আরেকটা লিস্ট আছে। সেটাকে মাঠ পর্যায়ে থেকে যাচাই বাছাই করে আনতে হচ্ছে। রিজওয়ানা বলেন, বৈঠকে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিভিন্ন উদ্বেগের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একটা অংশ থেকে আট দফা দাবি জানান হয়েছিল। সেই আট দফা দাবি নিয়ে তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করা হচ্ছে। সরকার এসব দাবি বিবেচনায় নিচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা তাদেরকে আশ্বস্ত করতে চাই যে নতুন এই বাংলাদেশে ধর্মীয় পরিচয়ে কারও অনিরাপদ বোধ করার কোনো কারণ নেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে অভিযোগ করে এই বিষয়টি নিয়েও বৈঠকে আলোচনার কথা জানান রিজওয়ানা। এ নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত না হলেও সবাইকে ‘অপপ্রচারের’ বিষয়ে আরো সতর্ক হওয়ার অনুরোধও করেন রিজওয়ানা। তিনি বলেন, আমরা বাকস্বাধীনতায় কোনো রকম হস্তক্ষেপ করছি না, এটা আমাদের নীতিগত অবস্থান। যা বলতে চাচ্ছেন সবই বলছেন, সবই লিখছেন। কিন্তু স্যোশাল মিডিয়ার একটা বিষয় আমাদের নজরে এসেছে। উপদেষ্টা বলেন, প্রোপাগান্ডা করার উদ্দেশ্যে তথ্য বিকৃতি করা হচ্ছে, কিছু মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হচ্ছে, সেগুলো বুস্ট করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, ‘মিথ্যা’ কোনো বিষয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আনবেন না। উদাহরন দিয়ে তিনি বলেন, একজন খেলোয়াড়ের ছবি ও আমার ছবি দিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকের নাম ও লোগো ব্যবহার করে বলা হচ্ছে যে, ওমুক খেলোয়াড় আমাকে বলেছে যে আমি যেন পর্দা করি। কিন্তু ওই খেলোয়াড়ও কিছু বলেনি, ওই পত্রিকায়ও এই ধরনের সংবাদ ছাপেনি। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম বলেন, কেবিনেট মিটিংয়ের পর উপদেষ্টাদের আলোচনায় আরেকটি বিষয় উঠে এসেছে। জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে শহিদ পরিবারগুলোকে ৩০ লাখ টাকা করে দেওয়া হবে। পরবর্তীতেও যারা এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবেন তাদেরকেও একই পরিমাণ টাকা দেওয়া হবে। আহতদের পুনর্বাসনের জন্যও উদ্যোগ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।