চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে বিপজ্জনক ৩৩৪ কনটেইনার


চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছে বিপজ্জনক ৩৩৪ কনটেইনার। এর মধ্যে ৪৮টি ধ্বংসযোগ্য, নিলামযোগ্য ২৮৬ কনটেইনার। বিপজ্জনক এসব কনটেইনারের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর বিস্ফোরণোন্মুখ অবস্থায় রয়েছে। তাই অতিরিক্ত সতর্ক ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। এ ছাড়া ২০ বছরের পুরোনো কনটেইনার অখালাসকৃত থাকায় তৈরি হয়েছে জট। এতে প্রতি বছর প্রায় ৭৩০ কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। ধারণক্ষমতার বেশি কনটেইনার আটকে থাকায় বন্দরের হ্যান্ডেলিং কার্যক্রমও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। তাই দ্রুত নিলাম ডেকে জট দূর করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দ্বারস্থ হয়েছে কর্তৃপক্ষ। এনবিআর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, নিলাম প্রক্রিয়ার ধীরগতির কারণে প্রায় ১৫ থেকে ২০ বছরের পুরোনো কনটেইনারও বন্দরে পড়ে আছে। এ সংখ্যা প্রায় ৮ হাজার, যা বন্দরে সংরক্ষণ সক্ষমতার প্রায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ। এ ছাড়া মাত্রা অতিরিক্ত কনটেইনার জট তৈরি হওয়ায় প্রতিদিন প্রায় ২ কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। জটের অন্যতম কারণ হিসেবে নিলামের কথা বলছে কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি করতে এনবিআরের মতামত চেয়েছে তারা। এদিকে বিপজ্জনক ৩৩৪ কনটেইনার নিয়ে বিপাকে রয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এসব বিপজ্জনক কনটেইনারের কারণে বাড়তি নিরাপত্তা নিতে হচ্ছে। ইয়ার্ডের বড় অংশজুড়ে নিলামের কনটেইনার পড়ে থাকায় নতুন কনটেইনার সংরক্ষণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ইয়ার্ডে এখন প্রায় আট থেকে দশ হাজার নিলামযোগ্য কনটেইনার পড়ে আছে। এর মধ্যে তিনশর বেশি বিপজ্জনক। এসব কনটেইনারে দাহ্য পদার্থ রয়েছে। ধ্বংসযোগ্যও রয়েছে কিছু, যা দ্রুত ধ্বংস করা উচিত। এ কারণে কর্তৃপক্ষকে প্রতিনিয়ত বাড়তি সতর্কতা নিতে হচ্ছে। এসব কনটেইনারের কারণে বন্দরের হ্যান্ডেলিং কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ওমর ফারুক বলেন, নিলামে ধীরগতির কারণে এমনটি হচ্ছে। এই জট নিরসনে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ও এনবিআরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বন্দরের কার্যক্রমে গতি আনতেও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে ৫৩ হাজার ৫১৮ কনটেইনার সংরক্ষণ করা যায়। সাধারণত আমদানি করা পণ্য ত্রিশ দিন হওয়ার পর নিলামযোগ্য হয়ে যায়। কিন্তু নিলামে দীর্ঘসূত্রতার কারণে বছরের পর বছর জমে আছে নিলামযোগ্য এসব কনটেইনার। এসব কনটেইনার পড়ে না থাকলে বছরে আরও প্রায় ১ লাখ টিইউএস কনটেইনার বেশি হ্যান্ডেলিং করা যেত। এ বিষয়ে জানতে এনবিআরের শুল্ক নীতির দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য হোসেন আহমদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পরে তার মোবাইলে বিষয়টি উল্লেখ করে খুদেবার্তা পাঠালেও সাড়া মেলেনি।