শেষভাগের জরিপে এগিয়ে ট্রাম্প, হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস


ঘনিয়ে এসেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিনক্ষণ। নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণার পুরো সময় বেশির ভাগ জরিপেই এগিয়ে ছিলেন ডেমোক্রেট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। কিন্তু শেষ ভাগের জরিপে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। চলতি সপ্তাহের জরিপগুলোতে এগিয়ে আছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রে অতিগুরুত্বপূর্ণ অঙ্গরাজ্য অ্যারিজোনায় করা এক জরিপেও এগিয়ে আছেন তিনি। নির্বাচনে ব্যবধান গড়ে দিতে পারে দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলো। তাই ভোটারদের কাছে টানতে সেসব অঙ্গরাজ্যে শেষ মুহূর্তের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন কমলা ও ট্রাম্প। দেশটির তিনটি কলেজ- ফাঙ্কলিন, মার্শাল ও মেরিস্ট এবং সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল পরিচালিত সবশেষ জরিপে ডেমোক্রেট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের চেয়ে এগিয়ে গেছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। এছাড়া মেরিস্ট কলেজের জরিপে অ্যারিজোনায় এক পয়েন্টে ও নর্থ ক্যারোলিনায় দুই পয়েন্টে এগিয়ে গেছেন ট্রাম্পকে। জর্জিয়ায় কমলা ও ট্রাম্প দুজনেরই জনসমর্থন দেখানো হয়েছে ৪৯ শতাংশ করে। অপরদিকে ফ্রাঙ্কলিন ও মার্শাল কলেজের জরিপে পেনসিলভেনিয়ায় ট্রাম্পের সমর্থন ৫০ শতাংশ ও কমলার পক্ষে ৪৯ শতাংশ ভোটার রয়েছেন। ট্রাম্পের জন্য সুখবর নিয়ে এসেছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের জরিপও। তাতে দেখা গেছে, দেশব্যাপী জনপ্রিয়তায় কমলার চেয়ে এগিয়ে আছেন তিনি। ট্রাম্প পেয়েছেন ৪৭ শতাংশ আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা পেয়েছেন ৪৫ শতাংশ জনসমর্থন। এর আগে গেল আগস্টে আরেকটি জরিপ করেছিল সংবাদমাধ্যমটি। সে সময় ট্রাম্পের চেয়ে দুই পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন কমলা। বৃহস্পতিবার ডোনাল্ড ট্রাম্প দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য অ্যারিজোনা ও নেভাদায় একাধিক স্থানে জনসভা করেছেন। আর সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে সঙ্গে নিয়ে জর্জিয়ার আটলান্টায় প্রচারণা চালিয়েছেন কমলা হ্যারিস। ভোটারদের কাছে টানতে শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় এখন ব্যস্ত কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। এদিকে এবারের নির্বাচনে ট্রাম্পকে জেতাতে মরিয়া ধনকুবের ইলন মাস্ক। অক্টোবরের প্রথম ১৫ দিনে আমেরিকা পিএসি বা পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটিকে ৪৪ মিলিয়ন ডলার (৪ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার) দিয়েছেন টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক। আমেরিকা পিএসি রিপাবিলকান পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে কাজ করছে। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত এক নথিতে এ তথ্য উঠে এসেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর- এই তিন মাসে ইলন মাস্ক আমেরিকা পিএসসি গ্রুপকে ৭ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার দিয়েছিলেন। এরপরই অক্টোবরের প্রথম ১৫ দিনে ৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার দেওয়ার খবর এলো। মার্কিন নির্বাচনে যেসব অঙ্গরাজ্যে দুই প্রার্থীর মধ্যে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, আমেরিকা পিএসি সেসব অঙ্গরাজ্যে ভোটারদের ট্রাম্পের পক্ষে আনতে কাজ করছে। দেশটির ফেডারেল নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, এসব রাজ্যে অক্টোবরের প্রথমার্ধে ৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার ব্যয় করেছে পিএসি। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। এদিকে চলছে আগাম ভোট। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বৈশ্বিকভাবে কতটা প্রভাব ফেলবে তা দেখার অপেক্ষায় গোটা বিশ্ব। নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছে। শেষ মুহূর্তের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভোটারদের কাছে টানতে নিরলস পরিশ্রম করছেন দুই প্রার্থীই। বিভিন্ন জনমত সমীক্ষায় জনপ্রিয়তার পারদ ওঠা-নামা করছে দুই প্রার্থীরই। দেশটির রীতি অনুযায়ী অনেক রাজ্যেই শুরু হয়েছে আগাম ভোট। নিজে কেন্দ্রে গিয়ে কিংবা ব্যালটে ভোট দিয়ে তা ডাকযোগে প্রেরণ- এই দুই পদ্ধতির যে কোনো একটিতে ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা। এরই মধ্যে রেকর্ড তিন কোটিরও বেশি নাগরিক আগাম ভোট দিয়েছেন। গেল সপ্তাহে দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোতে আগাম ভোটগ্রহণ শুরু হয়। সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস