বাজে বোলিং-ফিল্ডিংয়ে সিরিজ হার বাংলাদেশের


বাজে বোলিং-ফিল্ডিংয়ে সিরিজ হার বাংলাদেশের
বোলিংটা হলো না মনের মতো। ফিল্ডিংয়েও একের পর এক হয়েছে সুযোগ হাতছাড়া। দিন শেষে দিতে হলো এর চরম মূল্য। মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে ভালো সংগ্রহ পেয়েও রহমানউল্লাহ গুরবাজের সেঞ্চুরি ও আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের অপরাজিত ফিফটিতে বড় ব্যবধানে হেরে সিরিজও হারাল বাংলাদেশ। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজ নির্ধরণী তৃতীয় ওয়ানডেতে ৫ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। স্লো ও টার্নিং উইকেটে আফগানিস্তান ২৪৫ রানের লক্ষ্য পূরণ করে ১০ বল হাতে রেখেই। জয়ের জন্য যখন ৫ রান দরকার তখন শরীফুল ইসলামকে ছক্কায় উড়িয়ে জয় নিশ্চিত করেন ওমরজাই। বাংলাদেশের বিপক্ষে এ নিয়ে ২-১ ব্যবধানে টানা দুটি সিরিজ জিতল আফগানিস্তান। গত বছর বাংলাদেশে এসে তারা সিরিজ জিতেছিল একই ব্যবধানে। আর সব মিলিয়ে আফগানদের এটি টানা তৃতীয় সিরিজ জয়। রান তাড়ায় আফগানদের জয়ের পথে রাখেন গুরবাজ। তাকে আউট করার একের পর এক সুযোগ হাতছাড়া করে বাংলাদেশ। চার-বার জীবন পেয়ে খেলেন ৫ চার ও ৭ ছক্কায় ১২০ বলে ১০১ রানের ইনিংস। ওমরজাইয়ের সাথে চতুর্থ উইকেটে গড়েন ম্যাচের গতিপথ বদলে দেওয়া ১০০ রানের জুটি। এই সেঞ্চুরি দিয়ে বেশ কয়েকটি রেকর্ড গড়েছেন গুরবাজ। ওয়ানডেতে এটি তার অষ্টম সেঞ্চুরি। এই কীর্তি গড়তে ৪৬ ইনিংস খেলতে হয়েছে ২২ বছর বয়সী উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানের। গুরবাজের চেয়ে কম ইনিংসে ৮টি ওয়ানডে সেঞ্চুরি করতে পেরেছেন শুধু হাশিম আমলা (৪৩) ও বাবর আজম (৪৪)। এছাড়া ২৩ বছর হওয়ার আগে ৮ সেঞ্চুরি করা তৃতীয় ব্যাটসম্যান গুরবাজ। আগের দুজন সাচিন টেন্ডুলকার ও কুইন্টন ডি কক। গুরবাজ ফেরার পর মোহাম্মাদ নাবিকে নিয়ে বাকি কাজ সারেন ওমারজাই। অবিচ্ছিন্ন ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে তারা করেন ৪৮ বলে ৫৮ রান। ওমারজাই ৭৭ বলে ৭০ ও নাবি ২৭ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন। বাংলাদেশের পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন নাহিদ রানা ও মুস্তাফিজুর রহমান। অভিষেকে গতির ঝড় তুলে নজর কাড়েন নাহিদ। উইকেট না পেলেও ১০ ওভারে মাত্র ২৪ রান খরচ করেন নাসুম আহমেদ। এর আগে টসে জিতে বাংলাদেশ করতে পারে ৮ উইকেটে ২৪৪ রান। সেখানে একা মাহমুদউল্লাহর অবদান ৯৮। ৯৮ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৯৮ রানের ইনিংসটি সাজান তিনি। মাহমুদউল্লাহ যখন ব্যাটে আসেন দল তখন অল্প সময়ে চার উইকেট হারিয়ে প্রবল চাপে। সেখান থেকে অভিজ্ঞতা আর দারুণ ব্যাটিং শৈলীতে দলকে কেবল টেনেই তুললেন না, মিরাজকে সাথে নিয়ে গড়লেন এই মাঠে বাংলাদেশের ১৮৮ বলে ১৪৫ রানের রেকর্ড জুটি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের শততম ম্যাচে প্রথমবার দলকে নেতৃত্ব দিতে নেমে মিরাজ খেলেন ১১৯ বলে ৪ চারে ৬৬ রানের ইনিংস। মিরাজ ও মাহমুদউল্লাহ ছাড়া আর কেউ ত্রিশ ছুঁতে পারেননি। তানজিদ-সৌম্যের ওপেনিং জুটি থেকে ৫৩ রান আসার পর ৭২ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর সেই মাহমুদউল্লাহ-মিরাজ জুটির গল্প। আফগানিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন আজমাতউল্লাহ ওমারজাই। সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৪৪/৮ (তানজিদ ১৯, সৌম্য ২৪, জাকির ৪, মিরাজ ৬৬, হৃদয় ৭, মাহমুদউল্লাহ ৯৮, জাকের ১, নাসুম ৫, শরিফুল ২*; ফারুকি ৭-০-৪১-০, গাজানফার ৭-০-৪৯-০, ওমারজাই ৭-০-৩৭-৪, নাবি ১০-২-৩৭-১ খারোটে ৯-০-৩৫-০, রাশিদ ১০-০-৪০-১)। আফগানিস্তান: ৪৮.২ ওভারে ২৪৬/৫ (গুরবাজ ১০১, সেদিকউল্লাহ ১৪, রেহমাত ৮, শাহিদি ৬, ওমারজাই ৭০*, নাইব ১, নাবি ৩৪*; শরিফুল ৮.২-০-৬১-০, নাহিদ ১০-১-৪০-২, নাসুম ১০-২-২৪-০, মুস্তাফিজ ৯-০-৫০-২, মিরাজ ১০-০-৫৬-১, সৌম্য ১-০-১২-০)। ফল: আফগানিস্তান ৫ উইকেটে জয়ী। সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে আফগানিস্তান ২-১ ব্যবধানে জয়ী। ম্যাচ সেরা: রহমানউল্লাহ গুরবাজ। সিরিজ সেরা: মোহাম্মদ নবি।