নিকারবকার ভিলেজেই শুধু হ্যারিসকে হারিয়েছেন ট্রাম্প


প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ম্যানহাটনের প্রায় সব নির্বাচনি এলাকাতেই ডনাল্ড ট্রাম্পের বিপক্ষে জয় পেয়েছেন কামালা হ্যারিস। তবে ট্রাম্পের একমাত্র জয় এসেছে চায়নাটাউনের কাছের ঐতিহাসিক লোয়ার ইস্ট সাইডের শেষপ্রান্তের ‘নিকারবকার ভিলেজ’ থেকে। সাশ্রয়ী আবাসনের কারণে ১৯৩০ সালের দিকে নির্মিত কমপ্লেক্সটি চালু হওয়ার পর থেকেই অভিবাসীদের আশ্রয়স্থল হয়ে এসেছে। নিউ ইয়র্কে ডেমোক্র্যাটদের শক্ত ঘাঁটি ম্যানহাটনের নিকারবকার ভিলেজে ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু করার পর এই প্রথম জয় পেলেন ট্রাম্প। সাশ্রয়ী আবাসনের কারণে অভিবাসীদের আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত কমপ্লেক্সটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার সোভিয়েত গুপ্তচর জুলিয়াস রোজেনবার্গ ও এথেল রোজেনবার্গের বাড়ি ছিলো। পারমাণবিক অস্ত্রের তথ্যসহ গোপন নথি শত্রুদের হাতে তুলে দেয়ার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় এই যুগলের। তবে ২০১৫ সালে এক নথিতে দেখা যায় এথেলের বিরুদ্ধে অভিযোগের পর্যাপ্ত প্রমাণ ছিলো না সরকারের কাছে। কমপ্লেক্সে প্রথমে ইহুদি ও ইটালিয়ান অভিবাসীরা আশ্রয় নিতে এলেও ধীরেই চায়নিয অভিবাসীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। সবশেষ আদমশুমারি অনুসারে, ব্লকটির বাসিন্দাদের প্রায় ৮০ শতাংশ এশিয়ান। বাকি ২০ শতাংশের অধিকাংশই শ্বেতাঙ্গ। অভিবাসী অধ্যুষিত এই নির্বাচনি এলাকায় খুব ছোট ব্যবধানেই জয় পেয়েছেন ট্রাম্প। ভোট গণনার পর সিটি ইলেকশন বোর্ডের দেয়া প্রাথমিক ফলাফল অনুসারে, এখানে মাত্র ১৬ ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন হ্যারিস। ব্লকের বাসিন্দাদের মধ্যে ট্রাম্প ২৫১ ভোট পেয়েছেন এবং হ্যারিসের পক্ষে ২৩৫টি ভোট পড়েছে। নিকারবকার ভিলেজের ট্রাম্পপন্থী ব্লকের পারিবারগুলোর গড় বার্ষিক আয় প্রায় ২৫ হাজার ডলার, যা ম্যানহাটনের অন্যান্য পারিবারগুলোর আয়ের তুলনায় প্রায় চারগুণ কম। ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছেন জানিয়ে ৬২ বছর বয়সী রেস্টোরান্ট কর্মী ইউ লিন বলেন, সাধারণ মানুষের উন্নয়নের ব্যাপারে ট্রাম্পের ওপর তাদের আস্থা আছে। এবারের নির্বাচনি প্রচারণায় ট্রাম্পের অন্যতম অঙ্গীকার ছিলো, অভিবাসীদের অপরাধ কমানো ও অবৈধ অভিবাসীদের গণ বিতাড়ন। কমিউনিটিতে অপরাধ প্রবণতা বাড়ায়, নিরাপত্তা ও পরিবর্তনের প্রয়োজনে ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছেন বলে জানান ব্লকের বাসিন্দা ৪৯ বছর বয়সী সাল মিরো। ব্লকের হ্যারিস সমর্থক ৫০ বছর বয়সি অ্যালেন লি ট্রাম্পকে পাগল উল্লেখ করে বলেন, ‘এরকম কেউ প্রেসিডেন্ট হতে পারে, তা আমি বিশ্বাস করতে পারছি না।’ এদিকে নিউ ইয়র্ক সিটিতে ট্রাম্প পেয়েছেন মোট ভোটের ৩০ শতাংশ। ভোটে হারলেও গত বারের চেয়ে এই নির্বাচনে শহরের পাঁচটি বরোতেই সমর্থন বেড়েছে ট্রাম্পের। এর মধ্যে ২৭ শতাংশ ভোট পেয়ে সবচেয়ে ভালো অবস্থায় আছেন ব্রঙ্কসে। সেখানে ২০১৬ সালের নির্বাচন থেকে প্রায় তিনগুণ সমর্থন বেড়েছে তার।