কয়লার দর নিয়ে আলোচনা করে গেল আদানি প্রতিনিধি দল


কয়লার দর নিয়ে আলোচনা করে গেল আদানি প্রতিনিধি দল
ভারতের আদানি পাওয়ারের দু\'জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাংলাদেশে এসে তাঁদের বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লার দর নির্ধারণ পদ্ধতি নিয়ে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) সঙ্গে আলোচনা করে গেছেন। আদানির প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, তাদের কয়লার দাম বাংলাদেশের অন্য বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কয়লার চেয়ে খুব বেশি হবে না। বিদ্যুতের দামও প্রায় সমান হবে।বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রতিনিধি দলটি ঢাকায় আসে। প্রতিনিধি দলে ছিলেন আদানি পাওয়ার ঝাড়খণ্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অনিল সারদানা এবং একজন প্রকিউরমেন্ট কর্মকর্তা। পিডিবি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর তাঁরা বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। গতকাল রাতেই ভারতে ফেরত গেছেন তাঁরা।ভারতের ঝাড়খণ্ডের গড্ডায় স্থাপিত আদানি গ্রুপের ১৬০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কিনছে বাংলাদেশ। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি এই কেন্দ্রটির বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়ার কথা রয়েছে। তবে কয়লার দর নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সূত্র বলছে, চুক্তির দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে কয়লার দাম বেশি ধরেছে ভারতের আদানি গ্রুপ। কয়লার দাম বেশি হলে বিদ্যুৎ কিনতে বেশি খরচ হবে পিডিবির। এ নিয়ে দেশে চলছে জোর আলোচনা-সমালোচনা।কয়লার দর পর্যালোচনায় আলোচনার জন্য আদানি গ্রুপকে একাধিক চিঠিও দিয়েছে পিডিবি। দেশে বিদ্যমান বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কয়লা ক্রয় পদ্ধতি পর্যালোচনার জন্য বিদ্যুৎ সচিবের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটিও গঠন করা হয়েছে। এ সময়ই আদানি গ্রুপের প্রতিনিধি দলটি ঢাকায় এসেছে।সূত্র জানায়, বিদ্যুৎ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আদানি কর্মকর্তাদের মধ্যে ভারত থেকে আসা দু\'জন এবং ঢাকা অফিসের এক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। পিডিবির পক্ষে পরিচালনা পর্ষদের দু\'জন সদস্যসহ কয়েক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। দু\'পক্ষের মধ্যে গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত বৈঠক হয়। এ সময় দু\'পক্ষই নিজ নিজ বক্তব্য উপস্থাপন করে। এ বিষয়ে আরও বৈঠকে হবে বলে দু\'পক্ষই একমত হয়। আদানির প্রতিনিধি দল পিডিবির প্রস্তাব তাদের শীর্ষ ব্যবস্থাপনাকে জানাবে বলে বৈঠকে জানিয়েছে। সূত্র বলছে, পিডিবি আশা করছে, কয়লার দর নির্ধারণে একটি ফলপ্রসূ পদ্ধতিতে পৌঁছানো যাবে। জানা গেছে, পায়রাসহ অন্য বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সঙ্গে পিডিবির চুক্তিতে ডিসকাউন্ট ফ্যাক্টর বিবেচনা করে দাম নির্ধারণের কথা বলা আছে। আদানির সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তিতে এটা নেই।বিদ্যুৎ বিভাগের একটি প্রতিনিধি দল সাম্প্রতি আদানির কেন্দ্রটি দেখতে যায়। এ সময় কয়লার দাম নিয়ে আলোচনা হয়। এর পর পিডিবি কয়লার দর পর্যালোচনা করার বিষয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। গত ২৫ জানুয়ারি আদানি পাওয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ঝাড়খণ্ড) অনিল সারদানাকে এ চিঠি পাঠান পিডিবির সচিব মোহাম্মদ সেলিম রেজা।চিঠির বক্তব্য মতে, পিপিএতে কয়লার দর নির্ধারণের জন্য যে ফর্মুলা রয়েছে, তা অনুসরণ করলে বাংলাদেশের অন্যান্য কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আদানির কয়লার দাম বেশি হবে।২০১৭ সালে আদানির সঙ্গে পিডিবির স্বাক্ষরিত ১৬৩ পৃষ্ঠার চুক্তি পর্যালোচনা করে একাধিক বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, চুক্তিপত্রের কয়েকটি শর্তাবলি বাংলাদেশের স্বার্থের পরিপিন্থ। এগুলো আদানিকে বেশি অর্থ আদায়ের সুযোগ দেবে।