ঢাকা-১ আসন বদলে যাচ্ছে নির্বাচনি মাঠের চিত্র


ঢাকা-১ (দোহার-নবাবগঞ্জ) আসনে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ঘোষণা করায় বদলে যাচ্ছে ভোটের চিত্র। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে সালমা ইসলামকে নিয়ে আলোচনা এখন তুঙ্গে। তাদের আশা, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলে সালমা ইসলামই জয়ী হবেন। বৃহস্পতিবার জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম। মনোনয়ন জমা দিয়ে জয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘এলাকায় রাস্তঘাট, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা নির্মাণসহ ব্যাপক উন্নয়নকাজ করেছি। সুষ্ঠু-অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আমিই জয়ী হব।’ নির্বাচনে জয়ী হলে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন তিনি। অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা ও গরিব-দুঃখী মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি নিজের তহবিল থেকে সহযোগিতার অঙ্গীকার করেন। সরেজমিন দেখা যায়, দোহার-নবাবগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলে নির্বাচনি আমেজ বইছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের হোটেল, সেলুন, হাটবাজারগুলোয় নৌকা, লাঙ্গল ও হাতুড়ি প্রতীকের নেতাকর্মীদের মধ্যে নির্বাচনি আলোচনার পাশাপাশি নানা হিসাবনিকাশ চলছে। একমাত্র বিএনপি ও এর সমমনা দলগুলো ব্যতীত অন্য দলগুলোর নেতাকর্মী এবং সাধারণ ভোটারদের আশা, ৭ জানুয়ারির নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। শিকারীপাড়া ইউনিয়নের গরিবপুর এলাকার বাসিন্দা আবু তালেব (৪৫) বলেন, ‘আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ একাধিক রাজনৈতিক দলের প্রার্থী অংশ নিলেই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে।’ উপজেলার বান্দুরা ইউনিয়নের মাঝিরকান্দা এলাকার গৃহবধূ আছমা আক্তার (৩৩) বলেন, ‘ভোট দেওয়া আমার অধিকার। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারার আনন্দই আলাদা। আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টির সঙ্গে যদি বিএনপি নির্বাচনে আসত, তাহলে এই আসনে ত্রিমুখী লড়াই হতো। জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে এমপি নির্বাচিত করতে পারত।’ সোমবার বিকালে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা-১ আসনে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামকে পার্টির প্রার্থী হিসাবে নাম ঘোষণা করেন মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। এ সংবাদ পেয়েই উল্লাসে ফেটে পড়েন জাতীয় পার্টির স্থানীয় (দোহার-নবাবগঞ্জ) নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন স্থানে মিষ্টি বিতরণের পাশাপাশি আনন্দ মিছিল হয়। নবাবগঞ্জের নয়নশ্রী ইউনিয়ন জাতীয় পার্টি ও উপজেলা ছাত্রসমাজের নেতাকর্মীরা মিষ্টি বিতরণ ও আনন্দ মিছিল করেন। এ সময় নেতারা বলেন, ‘আগামী সংসদ নির্বাচনে এ এলাকার ভোটাররা জাতীয় পার্টির প্রার্থী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামকেই বেছে নেবেন। কারণ, তিনি এ অঞ্চলে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। নির্বাচনি এলাকায় অসংখ্য স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, গ্রামীণ অবকাঠামো নির্মাণ করেছেন। তাকে নির্বাচিত করতে পার্টির নেতাকর্মীরা আপ্রাণ চেষ্টা করবে।’ এ আসনে অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামকে প্রার্থী করায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরসহ পার্টির সব নেতাকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান তারা। এছাড়া নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ আসানে আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির নেতাকর্মীদের মধ্যেও ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ করা যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় ঢাকা জেলা রিটার্নিং অফিসার ও ঢাকা জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমানের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি। এ সময় তার সমর্থক-প্রস্তাবকসহ দোহার-নবাবগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী সঙ্গে ছিলেন।