পাকিস্তানে জোটের আগেই গৃহদাহ


নির্বাচন শেষ হওয়ার ১২ দিনেও সরকার গঠন হচ্ছে না পাকিস্তানে। একের পর এক বৈঠক আর শুধুই আলোচনা। দফায় দফায় দরকষাকষি করেও কোনো লাভ হচ্ছে না। সরকার গঠনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে একমত হতে পারছে না কোনো দলই। ভাগ-বাটোয়ারার হিসাব মিলাতে গিয়ে রীতিমতো ‘গৃহদাহ’ শুরু হয়েছে জোট শরিকদের অন্দরমহলে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠ না হওয়ায় পাকিস্তান মুসলীম লীগ (পিএমএল-এন) এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) জোটের ছাউনিতে চলছে সরকার গঠন ‘দেন-দরবার’। কিন্তু হিসাব মিলছে না কিছুতেই! পাওয়ার সঙ্গে চাওয়ার দূরত্বটা দিন দিন বাড়ছেই। মঙ্গলবারও অপূর্ণতার এই ‘খেদ’ নিয়ে বেশ কিছু মন্তব্য করেন পিপিপি’র চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। খবর জিও টিভি, ডনের। পিএলএম-এনের নাম না উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বিলাওয়াল বলেন, ‘কথার অগ্রগতি তখনই সম্ভব যখন অন্য কেউ নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করতে রাজি হবে। আমরা আমাদের অবস্থানে অনড় এবং এটি পরিবর্তিত হবে না।’ তিনি আরও জানান, আলোচনা নিয়ে এমন অচলাবস্থা দেশের গণতন্ত্র এবং অর্থনীতি কোনোটার জন্যই সুখকর হবে না। এর আগে পিপিপির তথ্য সচিব ফয়সাল করিম কুন্দি ভবিষ্যতে ফেডারেল মন্ত্রিসভার অংশ হওয়ার বিরুদ্ধে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি আরও বলেন, ‘১৬ মাসের জোটের সময় পিএমএল-এন-এর সঙ্গে (আমাদের) অভিজ্ঞতা সুখকর ছিল না।’ এরপর তিনি জোর দিয়ে বলেন, কোনো দলের প্রার্থীদের তিন/দুই বছরের জন্য প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকার কোনো ফর্মুলা নেই। জোট সরকারের এই দোলাচলে মঙ্গলবার রাতের বৈঠকে একটি সুরাহা হতেও পারে বলে মনে করছে দুই দলই। দেনা-পাওনা নিয়ে দু-দলের মনকষাকষির মধ্যেই জানা গেল, ২৭-২৮ ফেব্রুয়ারি চ‚ড়ান্তভাবে জোট সরকার গঠন করা হতে পারে পাকিস্তানে। সোমবার এ মন্তব্য করেছেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা কামার জামান কাইরা। একই মতামত দিয়েছেন সাবেক উপদেষ্টা শাহজেব খানজাদা। বলেন, জাতীয় পরিষদের অধিবেশনের অনেক দিন বাকি আছে। এটি ২৯ তারিখে হতে হবে। তাই ২৮ বা ২৭ তারিখে সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত হতে পারে। এরই মধ্যে মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট-পাকিস্তানের (এমকিউএম-পি) একটি প্রতিনিধি দলও একটি পিএমএল-এন দলের সঙ্গে একটি বৈঠক করেছে। সেই বৈঠকে উভয়পক্ষ কেন্দ্রে সরকার গঠনের জন্য যোগাযোগ অব্যাহত রাখতে সম্মত হয়েছে। অন্যদিকে জানা যায়, পিএমএল-এন এবং পিপিপি নেতৃত্ব বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টির (বিএপি) সঙ্গে আলোচনা করে বেলুচিস্তান প্রদেশে সরকার গঠনের বিষয়টি চূড়ান্ত করেছে। বেলুচিস্তান অ্যাসেম্বলিতে এই তিনটি দলেরই নির্ণায়ক সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। এমনকি প্রদেশটির মুখ্যমন্ত্রী পিপিপি থেকে হবেন তাও চূড়ান্ত হয়েছে। ইতোমধ্যেই পিপিপি নেতৃত্ব ইসলামাবাদে পার্টির অন্তর্গত সব বেলুচিস্তান অ্যাসেম্বলি সদস্যদের ডেকেছে।