ভারী মেরামতে মেশিনপ্রতি ব্যয় ১,৩২,০০০ টাকা
              
                  
 অনলাইন নিউজ ডেক্স                  
              
             
          
           
           
			
           
             
           
           
           
           
               
                                       
                                      
             
          
            
                
                            
              
            
         
          
            
			   
			   
				  
				  
				    আগামী নির্বাচনে কতটি আসনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে, এ বিষয়ে বুধবারের সভায় সিদ্ধান্ত নেয়নি নির্বাচন কমিশন।
অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ পাওয়ার ওপর নির্ভর করবে কতটি আসনে এ মেশিন ব্যবহার করা হবে। টাকার সম্মতি পাওয়ার পর ইভিএম মেরামতের সিদ্ধান্ত দেবে ইসি। এরপর মেশিন মেরামতে কমপক্ষে ছয় মাস সময় লাগবে বলে ইসিকে জানিয়েছে বিএমটিএফ। বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, একেকটি ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ভারী মেরামত করতে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা। ৮০ হাজার মেশিনে এ ধরনের মেরামতের প্রয়োজন হবে। অপরদিকে হালকা মেরামত লাগবে এমন ইভিএম-এর সংখ্যা ৩০ হাজার। এর প্রতিটির মেরামতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৮ হাজার ৫০০ টাকা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে সরকারের ভ্যাট, ট্যাক্স ও অন্যান্য চার্জ।
বুধবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে নির্বাচন ভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। রুদ্ধদ্বার এ সভায় চারজন নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন। বৈঠকের পাঁচটি এজেন্ডার মধ্যে প্রথমটি ছিল ইভিএম সংক্রান্ত।
বৈঠকের পর ইভিএম-এর বিষয়ে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, ইভিএম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ) ১ লাখ ১০ হাজার ইভিএম মেরামত করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যবহার করতে তাদের চেষ্টার কথা জানিয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে টাকা পাওয়া সাপেক্ষে কতটি আসনে ইভিএম ব্যবহার হবে, সেই সংখ্যা চূড়ান্ত করবে ইসি। তিনি বলেন, টাকা দেওয়ার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় টাকা দিতে সম্মত হলে পরবর্তী ধাপে জানাতে পারব আমরা কোন আসনে এবং কতটি নির্বাচনি এলাকায় ইভিএম ব্যবহার করতে পারব। এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, কমিশন সব সময় বলে আসছে ৭০ থেকে ৮০টি আসনে ইভিএম ব্যবহারের চেষ্টা করবে। আমরা সেই জায়গা থেকে সরে আসিনি। কত আসনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে, এ সংখ্যা নির্ভর করবে ব্যবহারযোগ্য ইভিএম মেশিনের ওপর। মেশিন যতগুলো আছে, সেগুলোকে সক্ষম, কতগুলোকে ব্যবহারযোগ্য করতে পারব-এর ওপর নির্ভর করবে।
জানা যায়, দেড় লাখ ইভিএম-এর মধ্যে ৪০ হাজারের অবস্থা এতই খারাপ যে সেগুলো মেরামত করা অর্থবহ হবে না। বাকি ১ লাখ ১০ হাজার মেশিন ভারী ও হালকা মেরামত করে কাজ চালানো যাবে। বুধবার নির্বাচন কমিশনের ১৬তম সভায় ইসির হাতে থাকা দেড় লাখ ইভিএম-এর এমন করুণ চিত্র তুলে ধরা হয়। সভায় জানানো হয়, ওইসব ইভিএম মেরামতে ১ হাজার ২৫৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা চাওয়া হলেও সম্মতি দেয়নি অর্থ মন্ত্রণালয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি না পাওয়ায় কতটি আসনে ইভিএম ব্যবহার হবে, সেই সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছে কমিশন সভা। শিগগিরই এ বিষয়ে আবারও সভা হবে।
ওই সভায় আরও জানানো হয়, নির্বাচন কমিশনের কাছে দেড় লাখ ইভিএম-এর মধ্যে বর্তমানে ২৫-৩০ হাজার মেশিন সচল রয়েছে। সেগুলো দিয়ে ১৫-২০টি আসনে ভোটগ্রহণ সম্ভব হবে। তবে এসব ইভিএম-এরও ব্যাটারিসহ কিছু যন্ত্রাংশের প্রয়োজন হবে।
এদিকে ইসি সভা সূত্র জানায়, সংগ্রহের পাঁচ বছরের মধ্যেই ব্যাপকভাবে ইভিএম নষ্ট হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে বিএমটিএফ ও ইসির পরীক্ষায় দেখা যায়, নির্বাচনে ব্যবহারের পর ইভিএম ভাঙা ও ক্ষতিগ্রস্ত। ইভিএম-এর ভেতের পানি ও কাদামাটি জমে আছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সিকিউরড কানেকটিং কেবল ও পাওয়ার কেবল নেই। এ অবস্থায় ৮০ হাজার ইভিএম ভারী এবং ৩০ হাজার ইভিএম হালকা মেরামতের প্রস্তাব দিয়েছে বিএমটিএফ। বাকি ৪০ হাজার ইভিএম মেরামত ব্যয় সাশ্রয় হবে না বলে জানিয়েছে সরকারি এ সংস্থাটি। অর্থাৎ এ ৪০ হাজার মেশিন পুরোপুরি অকেজো হয়ে গেছে।
সূত্র আরও জানায়, যে ৮০ হাজার ইভিএম-এর ভারী মেরামতের প্রয়োজন হবে, সেগুলোর প্রতিটির কন্ট্রোল ইউনিট এবং ইন্টারনাল ও এক্সটারনাল ডিসপ্লে মেরামতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৪ হাজার ২০০ টাকা। প্রতিটি ইভিএম-এর সঙ্গে দুটি করে ব্যালট ইউনিট মেরামতে লাগবে আরও ৩৭ হাজার ৬০০ টাকা। সবমিলিয়ে লাগবে ১ হাজার ৫৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা। অপরদিকে ৩০ হাজার ইভিএম-এর হালকা মেরামতে সেগুলোর কন্ট্রোল ইউনিটের জন্য ৪৩ হাজার ৯০০ এবং ব্যালট ইউনিটের জন্য ১২ হাজার ৩০০ টাকা হারে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। এই ৩০ হাজার ইভিএম মেরামতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২০৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এছাড়া এর সঙ্গে যুক্ত হবে সরকারের ভ্যাট, ট্যাক্স ও অন্যান্য চার্জ। সংশ্লিষ্টরা জানান, ইভিএম মেরামতে যেসব যন্ত্রাংশের প্রয়োজন হবে তার বড় অংশই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে। এতে প্রচুর পরিমাণ ডলারেরও প্রয়োজন হবে।				   
				   				 
			   
          
                   