মোখার তাণ্ডবে কক্সবাজারে ১০ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত


ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবে টেকনাফ ও সেন্ট মার্টিনে ১০ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সেন্ট মার্টিনেই ১২ শ ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া অসংখ্য গাছপালা উপড়ে পড়েছে। প্রচণ্ড গতির বাতাস নিয়ে রোববার বিকাল ৩টার দিকে কক্সবাজার ও মিয়ানমার উপকূলে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় মোখা। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় মোখা কক্সবাজার সদর, রামু, চকরিয়া, পেকুয়া, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, উখিয়া ও টেকনাফে তান্ডব চালিয়েছে। এতে দুর্যোগ কবলিত হয়েছে ৩টি পৌরসভাসহ ৫৭টি ইউনিয়ন। এসব ইউনিয়নের আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে ১০ হাজার ৪৬৯টি বাড়িঘর। সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে ২ হাজার ৫২২ টি ঝুপড়ি ঘর। জেলা প্রশাসক বলছে- রোববার বিকাল পর্যন্ত জেলার ৭ শতাধিক আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ২ লাখ ৩৭ হাজার ২৪১ জন মানুষ আশ্রয় নেন। তাদেরকে খাবারও দেওয়া হয়েছে। দুর্যোগ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় রোববার সন্ধ্যার পর থেকে আশ্রয় কেন্দ্র থেকে স্ব স্ব বাড়িতে ফিরে যান তারা। এদিকে ‘মোখা’ রোববার দুপুরের পর থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপে আছড়ে পড়তে শুরু করলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় দ্বীপটি। সেখানে কয়েকশ ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, মোখার তাণ্ডবে সেন্টমার্টিনে প্রায় ৯০ ভাগ বাড়ি ঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দ্বীপের ছোট বড় হাজারো গাছ ভেঙে গেছে। এতে গাছ পড়ে আহত হন ৬ জন মানুষ। কেউ নিহত হয়নি। সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, রোববার সকাল থেকে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকায় দ্বীপে অনেক গাছপালা ও ১২০০ বসতবাড়ির ক্ষতি হয়েছে। বসতবাড়ির মানুষগুলো আশ্রয়কেন্দ্রে ছিল। সন্ধ্যার পর থেকে আশ্রয় কেন্দ্রে থেকে মানুষ গুলো বাড়ি ফিরে। কিন্তু বাড়ি ফিরলে অনেকেই বাড়ি নেই। মোখার তাণ্ডবে ধংস হয়ে গেছে অনেকের বাড়ি। সেন্টমার্টিন ছাড়াও ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়েছে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ, সাবরাং, টেকনাফ পৌরসভা, সদর ইউনিয়ন, বাহারছড়া ইউনিয়ন, উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের ইনানী, পাটুয়ারটেক, সোনাপাড়া এলাকা। যেখানেও ব্যাপক সংখ্যক ঘর ও গাছ ভেঙে গেছে। টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আলম জানান, টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ, সাবরাং, টেকনাফ পৌরসভা, সদর ইউনিয়ন, বাহারছড়া ইউনিয়নের গাছের ওপর তাণ্ডব চালিয়েছে মোখা। এসব এলাকার ৩০ শতাংশ গাছ ভেঙে গেছে। এ ছাড়া বহু ঘর ভেঙে গেছে। তিনি বলেন, ‘সেন্টমার্টিন বাদ দিলে টেকনাফ উপজেলায় আরও কম হলেও এক হাজার ঘর ভেঙে গেছে।’ একই সঙ্গে জোয়ারের পানিতে নতুন করে বেড়িবাঁধের কিছু এলাকাও ভেঙে গেছে বলে জানা গেছে। তা নির্ধারণেও পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ শুরু করেছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।