লৌহজংয়ে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে কৃষিজমি ও জলাশয় ভরাট।


লৌহজংয়ে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে কৃষিজমি ও জলাশয় ভরাট।
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের গাঁওদিয়া, লৌহজং-তেউটিয়া, বৌলতলী,বেজগাঁওয়ের বিভিন্ন স্থানে ভরাট হচ্ছে কৃষিজমি ও জলাশয়। এসব কৃষিজমি ও জলাশয় ভরাটের জন্য তৈরি করে রাখা হয়েছে বেশকিছু জমি ও পুকুর। ভরাটে ব্যবহৃত হচ্ছে পদ্মা শাখা নদীর পাড়ের অবৈধ ড্রেজার লাইন। ৫/৭ জন মিলে তাদের গ্রুপ। তাদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারায় রয়েছে সমাঝোতা। অপরদিকে উপজেলা প্রশাসন সকল ইউনিয়নে অবৈধ ড্রেজার উচ্ছেদের অভিযান পরিচালনা করলেও অজ্ঞাত কারণে এই ক্ষেত্রে তারা নিরব।গত দুইদিন বৌলতলী, গাঁওদিয়া ও বেজগাঁওয়ের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, একাধিক স্থানে রাস্তার উপর দিয়ে কোথাও রাস্তা খুঁড়ে অবৈধভাবে ড্রেজার পাইপ টানা হয়েছে। জোর করে বাড়ির প্রবেশপথ দিয়ে লাইন টানায় চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। নদী পাড়ের মানুষ ড্রেজারের বিকট শব্দে অতিষ্ঠ। তাদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রশাসন অভিযান চালিয়ে অবৈধ ড্রেজার উচ্ছেদ করলেও গত দুইমাসে একবারও এখানে কোন অভিযান পরিচালিত হয়নি। তাদের সাথে প্রশাসনের সুসম্পর্ক আছে মনে হয়।আজ বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,পদ্মার শাখা নদী পশ্চিম গাঁওদিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকায় অবৈধ ড্রেজার পাইপ ঘৌলতলী বাজার হয়ে বৌলতলী ইউনিয়নের মাইজগাঁও বাজার পর্যন্ত ড্রেজার লাইন। লৌহজং সহকারি কমিশনার (ভূমি) অফিস সংলগ্ন নদীর পাড় থেকে লৌহজং- তেউটিয়া হয়ে বেজগাঁও-আটিগাঁও পর্যন্ত কৃষিজমি ও জলাশয় ভরাট হয়ে গেছে। বাকিগুলোতে ড্রেজার পাইপে কাজ চলছে। এছাড়া বিভিন্ন মৌজায় ড্রেজার পকেট করা আছে। পকেট করা বেশিরভাগই কৃষিজমি। জলাশয়গুলো কেন ভরাট করছে তা বলতে পারছে না ড্রেজার কাজে নিযুক্ত শ্রমিকরা। এসব এলাকায় চলাচলে অনেক সমস্যা হচ্ছে।নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন জানান, এখানে অবৈধ ড্রেজার ভরাট কাজের সাথে অনেক ছোট-বড় নেতা জড়িত।ভাগবাটোয়ারা নিয়ে তাদের মধ্যে রয়েছে সমঝোতা। গাঁওদিয়ার পশ্চিম পাশে ড্রেজার মালিক ঘৌলতলী এলাকার মো. শহিদ তিনি ড্রেজার শহিদুল নামে পরিচিত। তার সাথে কয়েকজন মেম্বার জড়িত আছে। পশ্চিম গাঁওদিয়ার ১নং ওয়ার্ডের পদ্মার শাখা নদীতে ড্রেজার পাইপ স্থাপনকারী মো. শহিদুলের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে হলে তিনি কোন প্রকার বক্তব্য দিতে ইচ্ছুক নন। পরে তাকে বারবার মোবাইল ফোনে কল দিলেও কোন জবাব পাওয়া যায়নি।বৌলতলী ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য মো. বিল্লাল বেপারী বলেন, লৌহজংয়ে অনেক ড্রেজার এরকমভাবে কাজ করে। আমরা কয়েকজন মিলে এলাকার কিছু ভরাট কাজ করছি। আগে থেকে পকেট ছিলো। সেগুলো ভরে দিচ্ছি।গাঁওদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম আজিজুল বলেন, আমাদের এলাকায় এইটি ড্রেজার পাইপ আছে আমি দেখেছি। তবে আমি নিজে লৌহজং গ্রামে কোনপ্রকার ব্যবসার সাথে জড়িত নই। তবে মানুষের ভোগান্তি আশা করি প্রশাসন দেখবে।লৌহজং উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. ইলিয়াস সিকদার বলেন, আমরা লৌহজংয়ের বিভিন্ন ইউনিয়নের একাধিক স্থানে বারবার অভিযান পরিচালনা করেছি। তারপরও অবৈধ ড্রেজার বন্ধ করা যাচ্ছে না। গাঁওদিয়া ইউনিয়নে অচিরেই অভিযান চালিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।লৌহজং উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল আউয়াল বলেন, পদ্মা নদীতে অভিযান চলছে। গত সপ্তাহে অনেক ড্রেজার খনন যন্ত্র আটক এবং জরিমানা করা হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অবৈধ ড্রেজার পাইপ অপসারণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অতি দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে। যেসকল ড্রেজার পাইপ আছে এগুলো অপসারণে পদক্ষেপ নেয়া হবে।