শালিখায় আগ্রহ বাড়ছে তোষা পাট চাষে


শালিখায় আগ্রহ বাড়ছে তোষা পাট চাষে
ভালো দাম, গুনগত মান ভালো, আগাগোড়া সমানসহ নানাবিধ সুবিধা থাকায় মাগুরার শালিখায় বিজেআরআই তোষা পাট-৮ (রবি-১) চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষীদের। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবছর ৬০ হেক্টর জমিতে তোষা পাট চাষাবাদ করা হয়েছে যা গত বছরের চেয়ে তিন গুণ বেশি। উপজেলায় মোট ৩ হাজার ৭ শত ৮০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে যেখানে লক্ষমাত্রা ছিল ৪ হাজার ১ শত ১৭ হেক্টর। পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়া ও ভালো দাম না পাওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ শত ৩৭ হেক্টর কম জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি বিভাগ। তবে সাধারণ পাটের চাষাবাদ কমলেও গুনগুন মান ভালো ও আশানুরূপ ফলন পাওয়ায় বিজেআরআই তোষা পাট-৮ (রবি-১) এর চাষাবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ জাতের পাট দেখতে লাল বর্ণের, আঁশ মোটা ও ফলন ভালো হয় বলে জানিয়েছে চাষীরা। চলতি মৌসুমে শালিখা উপজেলায় ৬০ হেক্টর জমিতে তোষা পাট চাষ করা হয়েছে। এ পাটের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে আগাম বীজ বপন করা যায়, আগাগোড়া সমান হয়, সাধারণ পাট থেকে অপেক্ষাকৃত লম্বা হয় এবং সহজে রং নষ্ট হয় না। এছাড়াও আগাম চাষ করা যায়, রোগব্যাধি কম হয় এবং একটু দেরিতে কর্তন করলেও এ জাতের পাট শুকিয়ে মারা যায় না। ১১৫ থেকে ১২০ দিনের মধ্যে জমি থেকে পাট কাটতে পারলে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বেশি ফলন পাওয়া যায়। ফলে আশানুরূপ ফলন ও দাম পাওয়া যায়। এ পাটের জীবনকাল মাত্র ১১৫ থেকে ১২০ দিন। এ কারণে এ পাট চাষে ইতিমধ্যে উপজেলার তালখড়ি, ধনেশ্বরগাতী ও তালখড়িসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ বেড়েছে। মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত তোষা পাটের বীজ বপন করা হয়। এটি অপেক্ষাকৃত উঁচু, জলাবদ্ধতাহীন দো-আঁশ এবং বেলে দো-আঁশ মাটিতে চাষের জন্য উপযোগী। স্বাভাবিক গড় উচ্চতা প্রচলিত জাত অপেক্ষা ৩০ থেকে ৩৫ সেন্টিমিটার বেশি। উন্নতর আঁশের এ পাট অধিকতর উজ্জ্বল এবং শক্ত। নানাবিধ কারণে অন্য জাতের তুলনায় এ জাতটি কৃষকদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। পর্যাপ্ত বীজ পেলে আগামীতে আরো অনেক বেশি আবাদ হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। শালিখা উপজেলার তালখড়ি ইউনিয়নের সেওজগাতী গ্রামের পাটচাষি গৌবিন্দ বিশ্বাস বলেন, এবছর দুই বিঘা জমিতে তোষা পাট-৮ চাষ করেছি ,ফলন ভালো হয়েছে দাম ভালো হলে আগামীবার আরো এক বিঘা বেশি জমিতে চাষ করব। গঙ্গারামপুর ইউনিয়নের মধুখালী গ্রামের সত্তার মিয়া বলেন, তোষা পাট সাধারণ পাটের থেকে অনেক ভালো। তবে এর বীজ বেশি পাওয়া যায় না। বীজ বেশি পেলে সামনের বার ২ একর জমিতে তোষা পাট চাষ করব। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আলমগীর হোসেন বলেন, শালিখা উপজেলায় বাংলাদেশের উদ্ভাবিত জাত বিজেআরআই চোষা পাট-৮ (রবি-১) এর চাষ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত বছর ২৫ হেক্টর জমিতে চাষ হলেও এবছর তা বৃদ্ধি পেয়ে ৬০ হেক্টর অর্জিত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, পাট জাগ দেওয়ার সমস্যা থাকায় লক্ষমাত্রা অর্জন একটু কম হলেও তা দূরীকরণে আমরা রিবন রেটিং (কাঁচা আশ ছাড়িয়ে জাগ দেওয়া) পদ্ধতিতে জাগ দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।