শালিখায় গঙ্গাদেবীর পূজা ও গঙ্গা স্নানের মেলা অনুষ্ঠিত


শালিখায় গঙ্গাদেবীর পূজা ও গঙ্গা স্নানের মেলা অনুষ্ঠিত
মাগুরার শালিখা উপজেলার আড়পাড়া ইউনিয়নের চুকিনগর বারেঙ্গা খাল গঙ্গাঘাটে গঙ্গাদেবী পূজা ও গঙ্গা স্নান উপলক্ষে দিনব্যাপী গ্রামীণ মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, ঐতিহ্যবাহী এ ধর্মীয় উৎসব বহু বছর পূর্ব থেকেই এখানো শ্রী শ্রী গঙ্গাদেবীর পূজা গঙ্গা স্নান করে জাতির ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে মায়ের অশেষ কৃপা লাভ করে আসছেন,তাই চিরজাগ্রত এই ধর্মীয় গঙ্গা স্নানে প্রতি বছর জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লা দশমী তিথিতে অত্যন্ত ধর্মীয় ভাব গম্ভীর পরিবেশে সুবিশাল বটমূলে শ্রী শ্রী গঙ্গা দেবীর পূজা ও বারাঙ্গা খাল ফটকি নদীর সঙ্গম স্থলে বার্ষিক গঙ্গা স্নান উপলক্ষে এ মহামিলন ঘটে থাকে। বসে বিভিন্ন পশরায় সুসজ্জিত বিপণীবিতান। গঙ্গাদেবী পূজা ও গঙ্গাস্নানে দিনব্যাপী এ আনন্দমেলা প্রতি বছরের মত এবারও আয়োজন করেছেন চুকিনগর বারাঙ্গা খাল গঙ্গা মন্দির কমিটি। রবিবার ভোর থেকে ভক্তরা পুণ্যের আশায় হাতে বেলপাতা,ফুল,ধান,দূর্বাসহ বিভিন্ন উপকরণ গঙ্গার বুকে অর্পণ করে স্নান করেন।গঙ্গাস্নানে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ও ইউনিয়ন ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলা উপজেলা থেকে অনেক পুণ্যার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। উপজেলার শিংড়া গ্রামের গোবিন্দ বিশ্বাস ও তার সহধর্মিনী এসেছেন ঐতিহ্যবাহী এ গঙ্গা স্নানে,কেন এসেছেন জানতে চাইলে বলেন আমরা প্রতিবছর এখানে গঙ্গা স্নান করতে আসি। এখানে স্নান করতে বিভিন্ন স্থান থেকে ভক্তরা আসেন। মূলত বিশ্বশান্তি ও পাপাচার থেকে মুক্ত হতেই গঙ্গা স্নান করা হয়।এখানে গঙ্গা স্নান উপলক্ষে মেলা বসে আমরা প্রতিবছর এই গঙ্গা স্নানে আসি। চুকিনগর গঙ্গা ঘাট মন্দির কমিটির সভাপতি সুকুমার মন্ডল বলেন এই গঙ্গা স্নান বাংলা সন ১৯৬২ পূর্ব থেকে চলে আসছে। প্রতি বছর এখানে গঙ্গা স্নান ও মানসিক পূজা অনুষ্ঠিত হয়। আর এ গঙ্গা স্নানকে কেন্দ্র করে মেলা অনুষ্ঠিত হয়। ভোর থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে মেলা। দূর-দূরান্ত থেকে আগত দোকানীরা মেলায় কয়েক দিন পূর্ব থেকেই তাদের বিভিন্ন রকম পসরা সাজিয়ে বসে। মাটির তৈরি কুমারের হরেক রকমের হাড়ি,পাতিল,পুতুল,হাতি,ঘোড়া, গরুসহ বিভিন্ন রকমের দ্রব্য মেলায় আগত ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। মেলায় নাগরদোলা থেকে শুরু করে কামারের তৈরি দা,বটি,কুড়াল,কোদাল,ছুরিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়ের জন্য সাজিয়ে বসে দোকানিরা। প্রচন্ড দাবদহ উপেক্ষা করে পুণ্যার্থীরা মিলিত হয় এ পূণ্যভূমিতে। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের দেখা যায়, নাগর দোলায় চড়ে আনন্দ উপভোগ করতে। এসময় শিশুদের বাঁশির আওয়াজে মেলা প্রাঙ্গণ মুখরিত হয়ে ওঠে। কমিটির পরিচালনা পরিষদের স্বেচ্ছাসেবক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অক্লান্ত পরিশ্রমে মেলাটি সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হয়। ঐতিহ্য অনুসারে এই আয়োজনের প্রশংসা করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন \"শ্রী ইন্দ্রনীল এ্যান্ড এ্যাসোসিয়েটস এর নির্বাহী সংগঠক শিক্ষক ও গবেষক শ্রীইন্দ্রনীল বিশ্বাস গঙ্গাদেবীর পূজা বেদী,স্নান ঘাট প্রশস্তকরণ ও নারীর স্নানান্তে বেশভূষা বা বশন পরিবর্তনের একটি ঘর বা হলরুম নির্মাণের আবেদন জানান।