সাবেক এমপি ও কেন্দ্রীয় নেতাদের দৌরাত্ম্য থামাতে বললেন জনপ্রতিনিধিরা


সাবেক এমপি ও কেন্দ্রীয় নেতাদের দৌরাত্ম্য থামাতে বললেন জনপ্রতিনিধিরা
কমিটিতে ‘মাই ম্যান’ ও ‘অনুসারী’ ছাড়া কারও ভাগ্যে পদ-পদবি জোটে না। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে বিভিন্ন আসনের সাবেক এমপি ও কেন্দ্রীয় নেতাদের দৌরাত্ম্য থামানোর জন্য বিএনপির হাইকমান্ডের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলটির বরিশাল বিভাগের তৃণমূলের বর্তমান ও সাবেক জনপ্রতিনিধিরা।তাঁরা বলেছেন, এখন আন্দোলনমুখী কমিটি গঠন করা দরকার। তাঁদের কাজের লোক দরকার, পদপ্রত্যাশী প্রয়োজন নেই। কিন্তু বতর্মানে প্রত্যেক ইউনিটে নিজেদের অনুসারীকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে ত্যাগী ও যোগ্যদের বাদ দেওয়া হচ্ছে। কোনো নেতাকর্মী যাতে ওপরে না উঠতে পারেন, সে জন্য পদে পদে বাধা দেওয়া হচ্ছে। ব্লেইম গেমের রাজনীতি চলছে। এটা থেকে মুক্ত হতে না পারলে আগামীতে সরকার পতনের ‘এক দফার আন্দোলন’ ব্যাহত হবে বলে তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন।বুধবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে রুদ্ধদ্বার মতবিনিময় সভায় ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান ও সাবেক জনপ্রতিনিধিরা এ মতামত দেন। বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। ভার্চুয়ালি লন্ডন থেকে যুক্ত হয়ে সবার মতামত শোনেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভায় ১৭৮ জন জনপ্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে ৩৮ জন বক্তব্য দেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যেও পাঁচজন কথা বলেন। তবে পরিচিতি পর্বে অনেকে পরিচয়ের পাশাপাশি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।সভার শুরুতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দেশ বাঁচাতে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে, খালেদা জিয়াসহ রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মুক্ত করতে বিএনপির ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নে চলমান আন্দোলনে তৃণমূলের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আন্দোলনকে সফল করতে বিভক্তি ভুলে এক কাতারে আসতে হবে।বৈঠক সূত্র জানায়, বেশিরভাগ ইউপি চেয়ারম্যানের বক্তব্যে ছিল রাগ, ক্ষোভ, হতাশা আর অভিমানের সুর। তারা বলেন, বরিশাল বিভাগের বেশিরভাগ এলাকা বিএনপির উর্বর ঘাঁটি। কিন্তু সংগঠন শক্তিশালী না করায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পুরো দল। এক সময় কমিটি গঠনে এলাকার গণমান্য ব্যক্তিকে প্রাধান্য দেওয়া হতো। এখন সমাজের কাছে অগ্রহণযোগ্য কিন্তু সাবেক এমপি কিংবা কেন্দ্রীয় নেতার কাছের লোক, ঘরের লোক, বিতর্কিতদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে এবং দল আদর্শচ্যুত হচ্ছে। এভাবে পকেট কমিটি গঠন হলে দল পরিচালনা কিংবা আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নেওয়া কষ্টসাধ্য হবে।অনেক প্রবীণ ইউপি চেয়ারম্যান জানান, তাঁরা জিয়াউর রহমানের হাত ধরে বিএনপির রাজনীতিতে এসেছেন। কিন্তু এখন তাদের কোথাও ডাকা হয় না, সম্মান দেওয়া হয় না।