৪ সেকেন্ডে তালা কেটে চার মিনিটে চুরি!


৪ সেকেন্ডে তালা কেটে চার মিনিটে চুরি!
রাজধানীতে গ্রিল কেটে চুরিতে জড়িত দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে মিরপুর থানা পুলিশ। তারা হলো- জাকির হোসেন ওরফে জ্যাক ও নূর জামাল ওরফে জামাল। জ্যাক-জামাল নামেই পরিচিত তারা। চার সেকেন্ডের মধ্যে তারা গ্রিল বা তালা কেটে ফেলে এবং চার মিনিটের মধ্যেই শেষ করে চুরি!চুরি করা ও চোরাই মালপত্র বিক্রির সুবিধার্থে একটি পিকআপ ভ্যান কেনে জ্যাক। সেটি নিয়ে ঘুরে ঘুরেই তারা চুরি করে! সাত বছরে রাজধানীজুড়ে দেড় শতাধিক চুরি করেছে জ্যাক-জামাল জুটি। শুক্রবার দুপুরে মোহাম্মদপুরের জাফরাবাদ এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে চুরির সরঞ্জাম এবং একটি পিকআপ ভ্যান উদ্ধার করা হয়।মিরপুর থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন জানান, আসাদুজ্জামান নূর নামে এক ব্যক্তির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিউ মিউজিক এশিয়ায় চুরির ঘটনার তদন্তে উঠে আসে জ্যাক-জামালের নাম। গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর মিরপুরের বড়বাগের পলিভিটা বেকারি এলাকার ওই ঘটনায় বিভিন্ন ব্র‍্যান্ডের ২৩টি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, ২০টি মেমোরি কার্ড, ৫০০টি রিচার্জ কার্ড, নগদ অর্থসহ আনুমানিক এক লাখ ৫২ হাজার ৭৭৫ টাকার মালপত্র চুরি করে তারা। সেই চুরির তদন্তে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তাদের শনাক্ত করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাদের দেওয়া তথ্যে সোহেল নামে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জ্যাক-জামালের কাছ থেকে চুরি করা মালপত্র কেনে সোহেল।ওসি জানান, চুরির টাকায় কেনা পিকআপে চড়েই চুরি করে জ্যাক-জামাল। আগে কয়েক রাতে একটি চুরি করলেও গাড়ি কেনার পর এক রাতে চারটি পর্যন্ত চুরি করে তারা! পরে এই পিকআপে করেই চুরির মালপত্র বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে। চুরির টাকায় তারা আলাদা বাসাও ভাড়া করেছে! সব মালপত্র একসঙ্গে বিক্রি করলে ধরা পড়ার আশঙ্কা থাকে, তাই ওই বাসাকে গুদাম হিসেবে ব্যবহার করে তারা।ওসি আরও জানান, জ্যাক-জামাল চুরি করতে বের হয় রাত ২টায়। চুরি করে বাসায় ফেরে সকাল ৬টায়। এই চার ঘণ্টার মধ্যেই তারা সব কাজ শেষ করে। দু\'জনের মধ্যে জ্যাক গ্রিল ও তালা কাটে। গ্রিল বা তালা কাটতে তার সময় লাগে সর্বোচ্চ চার সেকেন্ড। কাটার পর দোকানে ঢুকে মালপত্র চুরি করে জামাল। তার চুরি করতে সময় লাগে মাত্র চার মিনিট!ছোট দোকান টার্গেট জ্যাক-জামালের: জ্যাক-জামালের মূল টার্গেট ছোট ছোট দোকান। সাধারণত রাস্তার পাশে থাকা পান-সিগারেট, মোবাইল ফোন রিচার্জ বা মুদি দোকানই টার্গেট করে তারা। কারণ এসব দোকানদার সাধারণত নিম্ন আয়ের হয়। তাই চুরি করলেও তারা মামলা করেন না। এ কারণেই দেড় শতাধিক চুরি করলেও তাদের বিরুদ্ধে মামলা খুবই কম। জ্যাকের বিরুদ্ধে চারটি এবং জামালের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা রয়েছে।