অনৈতিক বরাদ্ধ, বৈষম্য ও ক্ষোভ অভিনয়শিল্পী সংঘের প্লট বাতিলের দাবি


আওয়ামী সরকারের শাসনামলে শেখ হাসিনার তোষামোদি করে অনেকেই প্লট বাগিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে শোবিজ অঙ্গনের অনেকের নাম রয়েছে এতে। এর মধ্যে রয়েছে নাটকের শিল্পীদের সংগঠন ‘অভিনয়শিল্পী সংঘ’র নামও। এ সংগঠনের সভাপতি আহসান হাবীব নাসিম ও সাধারণ সম্পাদক রওনক হাসান আওয়ামী সরকারের পক্ষে প্রত্যক্ষ কর্মকান্ড চালিয়ে সরকারের স্নেহধন্য হয়েছিলেন। সে সময় বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুসের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার পক্ষ নিয়ে অভিনয়শিল্পী সংঘের যে’কজন সদস্য বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছিলেন তাদের মধ্যে আহসান হাবিব নাসিমও রয়েছে। অন্যরা হলেন রামেন্দু মজুমদার, মামুনুর রশীদ, নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, লাকি ইনাম, সূবর্ণা মুস্তাফা, পিযুষ বন্দ্যোপাধ্যায়, চঞ্চল চৌধুরী, তারানা হালিম, ফাল্গ–নি হামিদ ও আফসানা মিমি। শেখ হাসিনার কাছে এই অভিনয়শিল্পী সংঘের দাবি ছিল সংগঠনের নামে প্লট বরাদ্ধ দেওয়া। এ কারণে হাসিনার স্বৈরশাসনকে তারা স্বীকৃতি দিয়েছে। আওয়ামী সরকারের পক্ষে বিভিন্ন কর্মকান্ডে অংশ নেয়া থেকে শুরু করে নীতিবহির্ভুত কাজেও তাদের অংশগ্রহন ছিল। সেই কাজের পুরস্কারস্বরূপ চলতি বছরেই রাজধানীর আফতাব নগরে ৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ জমি বরাদ্দ পায় সংগঠনটি। জমি বরাদ্দের তথ্য নিশ্চিত করেছেন অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবীব নাসিম। ৩ মে জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে, হোল্ডিং নং- ৩২, রোড-২, ব্লক-সি, জহুরুল ইসলাম সিটি, আফতাব নগর; এ ঠিকানার জমিটি বুঝে নেন নাসিম ও রওনক। ৫ মে বরাদ্ধ পাওয়া জমিতে অ্যাক্টরস হোম নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন নাসিম ও রওনক। এদিকে জুলাই থেকে যখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ও জনতা যখন দেশব্যাপী আন্দোলন শুরু করে তখনও অভিনয়শিল্পী সংঘের নেতৃবৃন্দ ছিলেন এই আন্দোলনের বিপক্ষে। ছাত্রদের আন্দোলের বিপক্ষে থেকে তারা শেখ হাসিনাকে রক্ষার জন্য নিজেদের অফিসিয়াল প্যাডেও বিবৃতি দেয়। যেখানে সভাপতি নাসিম ও সাধারণ সম্পাদক রওনকের স্বাক্ষর রয়েছে। এই বিবৃতি প্রদানের পর ছাত্রদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে অভিনেত্রী জাকিয়া বারি মম সংগঠন থেকে অব্যহতি নিলেও অন্য সদস্যরা ছিলেন নিশ্চুপ। এরপর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলে এ সংগঠণের অনেকের ভোল বদলে যায়। হয়ে যান বর্তমান সরকারে ঘনিষ্ঠ। বর্তমানে দেশে চলছে স্বৈরাচার সরকারের দোসরদের উচ্ছেদ কার্যক্রম। সুন্দর একটি বৈষম্যবিরোধী সমাজ গঠনে সংস্কার কার্যক্রম চলমান। এরমধ্যেই সাবেক সরকার শেখ হাসিনার চাটুকারদের চিহ্নিত করে তাদের বিচার দাবি করছেন সচেতন সমাজ। পাশাপাশি শেখ হাসিনার আমলে বাগিয়ে নেয়া সকল প্লট বরাদ্ধের দাবিও উঠেছে। আংগুল উঠেছে অভিনয় শিল্পী সংঘের পাওয়া সেই জমির দিকে। ছাত্র আন্দোলনে সরকারের পক্ষ হয়ে ছাত্র হত্যার পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ আরও বেশ কিছু নেতৃবৃদ্ধের নাম রয়েছে। এদিকে বিনোদনশিল্পের প্রতিষ্ঠিত অনেক সংঘঠন রয়েছে, তাদের কাউকেই কোনো জমি বা অন্য কিছু সরকরা থেকে বরাদ্ধ দেওয়া হয়নি। শুধু শেখ হাসিনা ও আওয়ামীলীগ তোষনের কারনেই অভিনয়শিল্পী সংগঠনকে রাষ্ট্রের সম্পদ বরাদ্ধ দেওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে তৎকালীন সরকারের নৈতিকতা ও বৈষম্য নিয়ে। তাই শিগগির এই প্লট বাতিল করে নতুবা সব সংগঠনকে প্লট বরাদ্দ দিয়ে বিনোদন অঙ্গনে বৈষম্য দূর করে সমতা ফিরিয়ে আনার দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা।