আইসল্যান্ডে প্রথমবারের মতো মশা শনাক্ত, বাড়ছে আশঙ্কা
অনলাইন নিউজ ডেক্স
আইসল্যান্ডে প্রথমবারের মতো মশার উপস্থিতি শনাক্ত হওয়ায় বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে আইসল্যান্ড ছিল বিশ্বের অল্প কয়েকটি মশামুক্ত অঞ্চলের একটি। কিন্তু চলতি অক্টোবরেই সেই বাস্তবতা বদলে গেছে। ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান জানায়, এটি বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রভাবের একটি বাস্তব উদাহরণ।
বিশেষজ্ঞরা আগেই সতর্ক করেছিলেন, তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে আইসল্যান্ড মশার মতো কীটপতঙ্গের জন্য উপযোগী হয়ে উঠতে পারে। দেশটিতে রয়েছে অসংখ্য জলাভূমি ও পুকুর, যা মশার প্রজননের জন্য উপযুক্ত। তবে এতদিন ছিল দীর্ঘ শীতকাল ও ঠান্ডা আবহাওয়ার বাধা।
এখন তাপমাত্রা দ্রুত বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে তাপমাত্রা যে হারে বাড়ছে, আইসল্যান্ডে তা চার গুণ দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে হিমবাহ গলছে, আবহাওয়া নরম হচ্ছে এবং দক্ষিণের উষ্ণ পানির মাছও দেশটির উপকূলে দেখা যাচ্ছে।
আইসল্যান্ডের ন্যাচারাল সায়েন্স ইনস্টিটিউটের কীটতত্ত্ববিদ ম্যাথিয়াস আলফ্রেসন জানান, কিডাফেল ও কিয়স এলাকায় কুলিসেটা অ্যানুলাটা প্রজাতির ৩টি মশা পাওয়া গেছে। এর মধ্যে দুটি স্ত্রী ও একটি পুরুষ মশা। মথ ধরার জন্য ব্যবহৃত ওয়াইন ফাঁদ থেকেই এগুলো সংগ্রহ করা হয়।
এই প্রজাতির মশা ঠান্ডা সহ্য করতে সক্ষম। শীতকালে তারা ঘরের বেসমেন্ট বা খামারে আশ্রয় নিয়ে সহজেই টিকে থাকতে পারে। স্থানীয় বাসিন্দা বিজর্ন হ্যাল্টাসন প্রথম এই মশা দেখতে পান এবং দ্রুত তা সংগ্রহ করে বিজ্ঞানীদের কাছে পাঠান।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি শুধু একটি প্রজাতির উপস্থিতিই নয়, বরং বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের স্পষ্ট প্রমাণ। পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে নতুন নতুন মশার প্রজাতি দেখা দিচ্ছে, যেগুলো ডেঙ্গু, জিকা ও চিকুনগুনিয়ার মতো রোগ ছড়াতে পারে।
আইসল্যান্ডে মশা শনাক্ত হওয়াকে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক সংকেত হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, যদি উষ্ণতা বৃদ্ধির এই ধারা অব্যাহত থাকে, তবে আরও বহু কীটপতঙ্গ ওই অঞ্চলে বিস্তার লাভ করবে। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি ও পরিবেশগত ভারসাম্য ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হতে পারে।
