ইরান হামলার আগাম অনুমতির তদবিরে যুক্তরাষ্ট্রে নেতানিয়াহু
অনলাইন নিউজ ডেক্স

ইরান আবার পারমাণবিক কর্মসূচি শুরুর চেষ্টা করছে। এমন আশঙ্কা থেকেই নতুন কূটনৈতিক তৎপরতায় নেমেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।মূল লক্ষ্য, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আগাম অনুমতি পাওয়া। যেন সন্দেহজনক কোনো পারমাণবিক তৎপরতা দেখা দিলেই ইরানে দ্রুত হামলা চালাতে পারে ইসরাইল। এই উদ্দেশ্যেই রোববার ওয়াশিংটনে পৌঁছেছেন নেতানিয়াহু।স্থানীয় সময় সোমবার ৬টা ৩০ মিনিটে হোয়াইট হাউজে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন তিনি। জেরুজালেম পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইসরাইলের এক শীর্ষ কর্মকর্তা।ইসরাইলের ওই কর্মকর্তা বলছেন, ‘নেতানিয়ার লক্ষ্য হলো লেবাননের মতো একটি অনুমোদন পাওয়া। যার অর্থ হলো, যদি পারমাণবিক স্থাপণায় সন্দেজনক কার্যকলাপ ধরা পড়ে, অথবা মার্কিন ও ইসরাইলি যুদ্ধবিমানে আঘাতপ্রাপ্ত এলাকা থেকে ইউরেনিয়াম অপসারণের প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই মার্কিন অনুমোদন থাকবে।’তিনি আরও বলেছেন, ইরান যেন কোনোভাবে আবার পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা না করতে পারে এজন্য এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আন্তর্জাতিক পারমাণবিক সংস্থার (আইএইএ) সঙ্গে সহযোগিতা না করায় ইরানের ওপর আগের মতোই কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার বিষয়টিতে জোর দেবেন নেতানিয়াহু।সম্প্রতি নিরাপত্তাজনিত কারণে আইএইএ-র পরিদর্শকরা ইরান ছেড়ে চলে গেছেন। এরই মধ্যে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান আইএইএ-র সঙ্গে সব ধরনের সহযোগিতা স্থগিত করেছেন।এদিকে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ইরানের ফোর্দো পারমাণবিক কেন্দ্র মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দাবি করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি।তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘ফোর্দোতে কী ঘটেছে তা পুরোপুরি জানা না গেলেও এটুকু নিশ্চিত, সেখানে বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে।’এদিকে ট্রাম্পের সঙ্গে এই সাক্ষাৎ শিগগিরই গাজায় যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে সহায়তা করবে বলে মনে করেন নেতানিয়াহু। যে সব শর্তে ইসরাইল রাজি হয়েছে সেগুলো ঠিক থাকলে তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছাতে আলোচকদের সব ধরনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছে তিনি।ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের আগেই যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরাইল-হামাস পরোক্ষ আলোচনার প্রথম ধাপ শেষ হয়েছে।সংশ্লিষ্ট ফিলিস্তিনি এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, রোববার কাতারের রাজধানী দোহায় দুটি পৃথক ভবনে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। দুপক্ষের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করেছে মধ্যস্থতাকারী কাতার ও মিসর। তবে, আলাপে যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো কার্যকর অগ্রগতি হয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি।ফিলিস্তিনি ওই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, আগামী সোমবার আবার আলোচনায় বসবে উভয় পক্ষ। এই সময়ের মধ্যে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে যে বিষয়গুলো বাধা দিচ্ছে সেগুলো নিয়ে একটি সমাধানে পৌঁছাতে দুপক্ষের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করবেন মধ্যস্থতাকারীরা।হামাস জানিয়েছে, তারা এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে ইতিবাচক হিসাবেই দেখছে। তবে, দুপক্ষের মধ্যে যে এখনো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মতপার্থক্য রয়েছে তা বেশ স্পষ্টই।যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার আগে নেতানিয়াহু আবারও জানিয়েছেন, তিনটি মূল লক্ষ্যে অটল থাকবে ইসরাইল-‘সব জিম্মিকে জীবিত কিংবা নিহত ফিরিয়ে আনা, হামাসের সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস করা এবং গাজা যেন আর কখনো ইসরাইলের জন্য হুমকি না হয় তা নিশ্চিত করা।’এদিকে ইসরাইলি সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং স্থায়ী শান্তি চায় হামাস।
