ইসরাইলকে রক্ষায় কতটা ঝুঁকি নিতে পারেন বাইডেন?


ইসরাইলকে রক্ষায় কতটা ঝুঁকি নিতে পারেন বাইডেন?
হামাস ইসরাইল সংঘাত শুরুর পর থেকেই ইসরাইলকে সমর্থন দিয়ে আসছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। পাশে থাকার প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে ইসরাইলকে সামরিক সহায়তাও দিচ্ছে দেশটি। শুধু তাই নয়, ইসরাইল সফরও করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের এই অংশে যখন অতীতের নানান ঘটনার ক্ষত এখনো দগদগ করছে, সেখানে ইসরাইলকে রক্ষা করতে নিজেকে কতটুকু জড়াতে চাইবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র?ইসরাইলের ওপর হামাসের হামলার খবর জানার পর দেওয়া প্রথম প্রতিক্রিয়াতেই প্রেসিডেন্ট বাইডেন তার অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়ে বলেছেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের সঙ্গে আছে।’আরও পড়ুন: গাজায় ‘যুদ্ধ বন্ধে’ যুক্তরাষ্ট্রকে যেসব প্রস্তাব দিল সৌদি আরববাইডেন বলেছিলেন, কেউ যদি এই পরিস্থিতি থেকে ফায়দা লোটার কথা ভেবে থাকে, আমি তাদের একটি কথাই বলব— ভুলেও এমনটি করবেন না। মূলত ইরান ও তার মিত্রদের লক্ষ্য করেই এই সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছিলেন তিনি।মার্কিন সৈন্যরা সম্প্রতি ইরাক ও সিরিয়ায় বেশ কয়েকবার হামলার মুখে পড়েছেন বলে জানিয়েছে পেন্টাগন।তারা আরও জানিয়েছে যে, কিছু দিন আগে লোহিত সাগরে অবস্থিত মার্কিন যুদ্ধজাহাজ একটি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে, যেটি ইয়েমেন থেকে ছোড়া হয়েছিল। ক্ষেপণাস্ত্রটির ‘সম্ভাব্য’ লক্ষ্য ছিল ইসরাইল।পূর্ব-ভূমধ্যসাগরে ইতোমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি বড় সামরিক বহর রয়েছে এবং খুব শিগগির তাদের সঙ্গে আরও একটি বহর যুক্ত হতে যাচ্ছে।এসব সামরিক বহরের প্রতিটিতে ৭০টিরও বেশি যুদ্ধবিমান রয়েছে, যেগুলো টানা গোলাবর্ষণ করতে সক্ষম।এমনকি কয়েক হাজার মার্কিন সেনাকেও প্রস্তুত রেখেছেন বাইডেন, যেন প্রয়োজন হলেই ওই অঞ্চলে দ্রুত সৈন্য পাঠানো যায়।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ মুহূর্তে ইসরাইলের বড়চেয়ে বড় সামরিক সহায়তা প্রদানকারী দেশ, যারা বছরে প্রায় ৩.৮ বিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা সহায়তা প্রদান করে থাকে।ইসরাইলের যেসব যুদ্ধবিমান গাজায় বোমা বর্ষণ করছে, সেগুলোও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি এবং যে কোনো লক্ষ্যবস্তুতে প্রায় নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম।ইসরাইলের আয়রন ডোম প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় যেসব ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়, তার অনেকগুলোই আসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে।এমনকি অস্ত্র চাওয়ার আগেই অনেক ক্ষেত্রে ইসরাইলে অস্ত্র পাঠিয়ে দিতে দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রকে।এ ছাড়া যুদ্ধ পরিস্থিতি বিবেচনায় মধ্যপ্রাচ্যের মিত্রদেশগুলোকে সামরিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে গত শুক্রবার ১৪ বিলিয়ন ডলারের একটি তহবিলের অনুমোদন দিতে কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্টে বাইডেন।যুক্তরাষ্ট্রের ১০৫ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তার অংশ হিসাবেই মধ্যপ্রাচ্যের মিত্র দেশটিকে এই তহবিল দেওয়া হচ্ছে।এ ঘটনার পর দিনই পেন্টাগনের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয় যে, মধ্যপ্রাচ্যে তারা তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী দুটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা পাঠাতে যাচ্ছে।কিন্তু একজন মার্কিন প্রেসিডেন্ট কি সত্যিই এখন আরও একটি যুদ্ধে জড়াতে চাইবেন, বিশেষ করে দেশটির নির্বাচনের বছরে?মধ্যপ্রাচ্যে সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযানগুলো বেশ ব্যয়বহুল বলে প্রমাণিত হয়েছে, সেটি হোক অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক কিংবা মার্কিনিদের প্রাণের হিসেবে।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সাবেক ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত মাইকেল ওরেন মনে করেন যে, এই অঞ্চলে মার্কিন রণতরী পাঠিয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইতোমধ্যে প্রথম পদক্ষেপ গ্রহণ করে ফেলেছেন।ওরেন বলেন, আপনি ততক্ষণ পর্যন্ত এ ধরনের অস্ত্র বের করবেন না, যতক্ষণ না আপনি এটি ব্যবহার করতে চান।অন্যদিকে ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাডিজের ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটির পরিচালক সেথ জি জোনস মনে করেন, গাজায় সরাসরি যুদ্ধে জড়ানোর ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র খুব একটা আগ্রহ দেখাবে না।সূত্র: বিবিসি।