উইকিপিডিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ইলন মাস্কের ‘গ্রকিপিডিয়া’ চালু
অনলাইন নিউজ ডেক্স
বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি, মহাকাশ গবেষণা কোম্পানি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, মস্তিষ্কে চিপ বসানোর কোম্পানি ও এআই স্টার্টআপের পর এবার উইকিপিডিয়ার আদলে অনলাইন বিশ্বকোষ চালু করলেন মার্কিন ধনকুকের ইলন মাস্ক, যার নাম গ্রকিপিডিয়া।
মাস্ক দাবি করেছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের ওপর নির্ভর করে কাজ করবে গ্রকিপিডিয়া, যেটি তার ডানপন্থি দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে মানানসই ধারায় তথ্য উপস্থাপন করবে।
তবে গ্রকিপিডিয়ার অনেক নিবন্ধের তথ্য উইকিপিডিয়ার তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই তৈরি বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান।
এআইনির্ভর এ অনলাইন বিশ্বকোষকে ‘সভ্যতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ বলে বর্ণনা করেছেন মাস্ক। এক মাস ধরেই উইকিপিডিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে গ্রকিপিডিয়া আনার পরিকল্পনা করছিলেন তিনি।
উইকিপিডিয়ার মতো গ্রকিপিডিয়ার কোনো স্বেচ্ছাসেবী বা মানব লেখক নেই। তবে গ্রকিপিডিয়া বলেছে, এর ‘সব তথ্য যাচাই’ হয় মাস্কের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা স্টার্টআপ এক্সএআই-এর ‘গ্রক’ নামের এআই চ্যাটবটের মাধ্যমে।
মাস্ক বলেছেন, গ্রকিপিডিয়ার তৈরির ধারণা তার নিজের নয়। ধারণাটি এসেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের এআই ও ক্রিপ্টোকারেন্সি কর্মকর্তা ডেভিড স্যাকসের কাছ থেকে।
গার্ডিয়ান লিখেছে, প্রায়ই উইকিপিডিয়ার সমালোচনা করতে দেখা যায় মাস্ককে, বিশেষ করে উইকিপিডিয়া যখন নিউ ইয়র্ক টাইমস বা এনপিআর-এর খবরের তথ্য দেয় তখন। ‘প্রচলিত বা মেইনস্ট্রিম মিডিয়া’কে নিয়মিত আক্রমণ ও মানুষকে নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এর ওপর নির্ভর করতে উৎসাহিত করেন মাস্ক। তিনি এমনভাবে প্ল্যাটফর্মটিকে পরিচালনা করেছেন, যাতে ডানপন্থী বা চরম ডানপন্থী মতামত ও তার নিজের মতামত বেশি করে সকলের সামনে আসে।
গ্রকিপিডিয়ার বিভিন্ন নিবন্ধে দেখা গিয়েছে, সেগুলো সাধারণত রক্ষণশীল বা ডানপন্থী মতামতের দিকেই ঝুঁকছে। যেমন– ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনা নিয়ে করা এক নিবন্ধে গ্রকিপিডিয়া বলেছে ‘ভোটে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ’ ছিল, যা আসলে ছিল সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ২০২০ সালের নির্বাচনে জয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ট্রাম্প ও তার সহযোগীদের প্রচার করা এক মিথ্যা দাবি। সেই নিবন্ধে ট্রাম্পের এ দাঙ্গাকে উসকে দেওয়ার ভূমিকাকেও হালকাভাবে দেখিয়েছে গ্রকিপিডিয়া।
গ্রকিপিডিয়ার নিবন্ধে বলা হয়েছে, ৬ জানুয়ারির ‘ঘটনাকে ঘিরে এখনও বিতর্ক চলছে। কেউ কেউ মনে করেন এটি ছিল নির্বাচনে অনিয়মের প্রতিবাদ জানাতে এক ধরনের বৈধ আন্দোলন, আবার অন্যরা বলছেন, এটি ছিল গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিরুদ্ধে পূর্বপরিকল্পিত হামলা। প্রচলিত বা মূলধারার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম নাকি হামলায় হতাহতের সংখ্যা ও ঘটনার উদ্দেশ্যমূলকভাবে অতিরঞ্জিত করে দেখিয়েছে। কিন্তু একই সঙ্গে তারা নির্বাচন তদারকিতে ব্যর্থতা ও দাঙ্গা প্রতিরোধে দুর্বলতার বিভিন্ন দিককে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়নি’।
এদিকে, এরইমধ্যে গ্রকিপিডিয়ার বিরুদ্ধে ভুল বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারের অভিযোগ করেছেন কিছু সাংবাদিক। গ্রকিপিডিয়ার এক নিবন্ধে দাবি করেছে, পর্নোগ্রাফি নাকি এইডস মহামারিকে আরও খারাপ করে তুলেছিল, যা বাস্তবে ভিত্তিহীন বা ভুল তথ্য বলে সাংবাদিকদের অভিযোগ।
