এক ব্যক্তি ডিসেম্বরে নির্বাচন চান না : মির্জা আব্বাস


এক ব্যক্তি ডিসেম্বরে নির্বাচন চান না : মির্জা আব্বাস
ডিসেম্বরের মধ্যে সংসদ নির্বাচন দেশের ‘এক ব্যক্তিই চান না’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। শুক্রবার (৩০ মে) সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে তার কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণের পরে জাপানে প্রধান উপদেষ্টার এক বক্তব্যের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।মির্জা আব্বাস বলেন, খুব দুঃখের সঙ্গে বলছি, দেখলাম ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাহেব (প্রধান উপদেষ্টা) জাপানে বসে বিএনপির বদনাম করছেন। একটু লজ্জাও লাগল না দেশের সম্পর্কে বিদেশে বসে বদনাম করতে। তিনি বললেন, একটি দল নির্বাচন চায়। আর আমরা বলতে চাই, একটি লোক নির্বাচন চায় না, তিনি হলেন ড. ইউনূস।প্রসঙ্গত, গতকাল বৃহস্পতিবার জাপানের টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে ৩০তম নিক্কেই ফোরামে ‘ ফিউচার অব এশিয়া’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমরা জনগণকে বলেছি, নির্বাচন এ বছরের শেষে ডিসেম্বরে অথবা সর্বোচ্চ জুনে অনুষ্ঠিত হবে। তবে কিছু রাজনীতিবিদ জুন পর্যন্ত অপেক্ষা কেন, ডিসেম্বরে নির্বাচন কেন নয় সেই প্রশ্ন তুলেছেন। দেশের সব রাজনৈতিক দল নয়, শুধু একটি দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চাইছে’।নির্বাচন ডিসেম্বরেই, জুনে নয় উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস জোরালো কণ্ঠে বলেন, বিএনপি বরাবরই নির্বাচন চেয়েছে ডিসেম্বরের মধ্যে এবং এই ডিসেম্বরের কথা কিন্তু ইউনূস সাহেব স্বয়ং বলেছেন। আমরা বলি নাই। পরবর্তিতে তিনি শিফট করে চলে গেলেন জুন মাসে। জুন মাসে যদি নির্বাচনের কথা বলেন, এই নির্বাচন কখনো বাংলাদেশে হবে না। সুতরাং নির্বাচন যদি করতে হয় ডিসেম্বরের মধ্যেই করতে হবে।এক ব্যক্তি ডিসেম্বরে নির্বাচন চান না : মির্জা আব্বাস জিয়াউর রহমানের সমাধিতে জেডআরএফের শ্রদ্ধাঞ্জলি বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, আর নির্বাচন যদি করতে না চান সেটা ইউনূস সাহেবের দায়-দায়িত্ব, আমাদের দায়-দায়িত্ব নয়। আমরা জাতি-জনগণ এই নির্বাচন আদায় করব, না হলে এ দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা ঠিক থাকবে না।সংস্কার করতে কিছু বিদেশি আমদানি উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করতে হবে জাতিকে বিভিন্ন কারণেই। আপনারা লক্ষ করেছেন, সংস্কার সংস্কার করতে করতে বর্তমান সরকার বহু লোককে আমদানি করেছেন সংস্কার করার জন্য। আমি আজ অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে বলতে চাই, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বহু সংস্কার করেছেন বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে। কিন্তু বিদেশ থেকে কোনো পরামর্শক আনেন নাই।তিনি বলেন, আজকে এই সরকার কিছু বিদেশি লোক আমদানি করেছেন দেশের সংস্কারের জন্য। এখন সংস্কার করতে করতে এমন জায়গায় চলে গেছে যে, তারা নির্বাচন দিতে চায় না।রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান আধুনিক বাংলাদেশের জনক হিসেবে অভিহিত করে মির্জা আব্বাস বলেন, আমরা এই শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং দলের পক্ষ থেকে দেশবাসীর কাছে উনার (জিয়াউর রহমান) জন্য দোয়া কামনা করছি। আল্লাহ তাআলা যেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে বেহেস্তে নসিব করেন। এর আগে মির্জা আব্বাস দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, সালাহউদ্দিন আহমদ, এজেডএম জাহিদ হোসেনসহ সিনিয়র নেতাদের নিয়ে সকাল সাড়ে ১০টায় শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের সমাধি প্রাঙ্গণে আসেন। কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পরে কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন তারা এবং এরপর প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাতে অংশ নেন।এ সময় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাবেক মন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ঢাকা বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, বেনজীর আহমেদ টিটো, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক, সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, যুব বিষয়ক সহসম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজসহ অনেক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।উল্লেখ্য, ১৯৮১ সালের ৩০ মে রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় চট্টগ্রামে এক দল সৈন্যের গুলিতে নিহত হন জিয়া। বিএনপি এই দিনটি তার ‘শাহাদাত দিবস’ হিসেবে পালন করে।