এবার হাইফা বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইয়েমেন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

দুটি বিমানঘাঁটির পর এবার ইসরাইলের সামরিক ঘাঁটিতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইয়েমেন। মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাপূর্ণ ভূ-রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ করল ইয়েমেনের হুতি-সমর্থিত সশস্ত্র বাহিনীর সাম্প্রতিক এসব পদক্ষেপ।শুক্রবার ইয়েমেনি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা ইসরাইলের হাইফা বন্দরের কাছে অবস্থিত ‘রামাত দাভিদ’ বিমানঘাঁটিতে একটি হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।হামলার ভিডিও ইতোমধ্যেই ইয়েমেনের আল মাসিরাহ টিভি চ্যানেলে প্রচারিত হয়েছে। খবর মেহের নিউজের।ইয়েমেনের সামরিক মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এই অভিযানে ‘প্যালেস্টাইন-২’ নামের একটি হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। আর এটি সুনির্দিষ্টভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে’।সেই সঙ্গে, ‘শত্রুর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়েছে’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।বিশ্লেষকদের মতে, তার এ দাবি যদি সত্য হয়, তাহলে এটি ইসরাইলের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ হিসেবে প্রতিপন্ন হতে পারে।মেহের নিউজ জানিয়েছে, উত্তর ইসরাইলে হাইফার পূর্বে অবস্থিত রামাত দাভিদ বিমানঘাঁটি ইসরাইলি বিমান বাহিনীর অন্যতম প্রাচীন ও কৌশলগত ঘাঁটি। এখানে এফ-১৬ যুদ্ধবিমানসহ অন্যান্য বিমান রাখা হয়েছে। যেগুলো বিভিন্ন অভিযানের জন্য ব্যবহৃত হয়, বিশেষ করে উত্তর ফ্রন্টে লেবানন ও সিরিয়ার বিরুদ্ধে।এই ঘাঁটিতে সরাসরি হামলা হলে তা ইসরাইলি প্রতিরক্ষা স্থাপনার গভীরে পৌঁছানোর সক্ষমতার বার্তা দেয়।এদিকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি আরও বলেন, ‘আমরা গাজার মুজাহিদদের সালাম জানাই, যারা ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বীরত্বের সঙ্গে লড়ছে। যতক্ষণ না ইসরাইলি আগ্রাসন থেমে যায় ও অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত ইয়েমেন সর্বদা তাদের পাশে থাকবে’।তার এই বক্তব্য স্পষ্ট করে যে, ইয়েমেন নিজেকে ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ যুদ্ধের সক্রিয় সহযোগী হিসেবে তুলে ধরছে এবং মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতে একটি নতুন ‘প্রক্সি ফ্রন্ট’ গড়ে তুলতে চায়।এদিকে ইসরাইল এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এই হামলার সত্যতা স্বীকার বা অস্বীকার করেনি। তবে আঞ্চলিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, যদি ইয়েমেন সত্যিই হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরাইলের অভ্যন্তরে আঘাত হানে, তাহলে তা এক নতুন সামরিক বাস্তবতার সূচনা করবে।ইসরাইলের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যেমন ‘আয়রন ডোম’, ‘ডেভিড’স স্লিং’ বা ‘অ্যারো’ প্রযুক্তি সাধারণত সাবসনিক বা সুপারসনিক গতির ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে সক্ষম। কিন্তু হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা এখনো অনেক দেশের জন্যই কঠিন।যাইহোক, ইয়েমেনের এই হামলা এমন এক সময় ঘটলো যখন গাজা সংকট দ্বিতীয় বছরে গড়িয়েছে এবং ইসরাইল-ইরান বিরোধ একাধিক ফ্রন্টে সক্রিয় হয়ে উঠেছে।ইয়েমেনের এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যে ‘মাল্টি-ফ্রন্ট কনফ্লিক্ট’-এর সম্ভাবনাকে বাস্তবতায় রূপ দিতে পারে। যেখানে লেবানন, সিরিয়া, ইরাক ও ইয়েমেন থেকে একযোগে ইসরাইলকে চ্যালেঞ্জ জানানো হচ্ছে।
