কারাগারে থাকলেও ভাতিজির বিয়ে যেন আটকে না থাকে: আইনজীবীকে ইনু


কারাগারে থাকলেও ভাতিজির বিয়ে যেন আটকে না থাকে: আইনজীবীকে ইনু
আদালতে এসে সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু আইনজীবীকে বলেন, তিনি কারাগারে থাকলেও তার ভাতিজির বিয়ে যেন আটকে না থাকে।সোমবার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গুলিতে আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী হত্যায় মিরপুর মডেল থানার মামলায় হাসানুল হক ইনু ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননকে ফের ৩ দিনের রিমান্ড নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে আদালত।এদিন সকাল ১০টার দিকে ঢাকার মহানগর হাকিম জিএম ফারহান ইশতিয়াকের আদালতে তুলা হয় ক্ষমতাশালী এই দুই শরিক দলের নেতাদের। কাঠগড়ায় আসার পরই ইনু আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন।তখন আইনজীবী মোহাম্মদ সেলিমকে ইনু বলেন, ‘আমি কারাগারে আছি। আমার ভাতিজির বিয়ে যেন আটকে না থাকে। আগামীকাল বিয়ের অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। তাদেরকে বলে দিও, আমি কারাগারে থাকলেও বিয়ের অনুষ্ঠান যেন করে ফেলে। শুভ কাজে দেরি করার দরকার নেই।’এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইনু ও মেননের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। এরপর শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে সরকারি কৌসুলি (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, সরকারি কৌসুলি (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ছাত্র আন্দোলনে গণভবনে একটি মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জামাত শিবিরকে নিষিদ্ধসহ গুলি করার নির্দেশ প্রদান করা হয়। সেখানে তারা ছিলেন এবং সম্মতি দেন তাদের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। তাহলে আরও তথ্য বের হবে।তার আইনজীবী মোহাম্মদ সেলিম বলেন, ইনু ছয় বার এমপি ছিলেন। উনি বয়স্ক লোক, উনার চিকিৎসা করা প্রয়োজন। উনি ৫০টির বেশি মামলার আসামি। জাসদ থেকে দলীয় সিদ্ধান্ত হয় গভমেন্টে যে ৩০ শতাংশ বা ৫৬ শতাংশ কোটা আছে সেটা যৌক্তিক নয়। তাকে একমাত্র রাজনৈতিক কারণে আটক করা হয়েছে। উনি একজন ক্যারিশমাটিক লোক। দশজন ফুটবলারের মধ্যে একজন। পাকিস্তান আমলে দুই নম্বর গোল রক্ষক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।এর উত্তরে পিপি ফারুকী বলেন, ২০ হাজারের মতো লোক বিভিন্নভাবে গুলি করে হত্যা ও আহত করা হয়েছে। লাখ লাখ মিথ্যা মামলা মানুষকে দেয়া হয়েছে। তিনটা নির্বাচন প্রহসন করে করেছে। ডামি নির্বাচন করেছে। তারা মন্ত্রিসভায় শপথ গ্রহণ করে একটি পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের পাপের স্টেশন হিসেবে বাংলাদেশকে তুলে ধরেছে। বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে হাসিনাকে প্রতিদিন খুশি করে রাখা, তোষামোদ করেছে। আপনারা দেখেছেন আজকে জুলাই বিপ্লবের আন্দোলনের সময় ছাত্রদের উপরে কিভাবে গুলি করে হাজার হাজার মানুষকে পঙ্গু করা হয়েছে। গুলি করে যখন শিশু বাচ্চাদের পাখির মতো গুলি করে মারা হয়। একটা ভ্যান গাড়িতে বাচ্চাদের লাশ স্তূপ করে পেট্রোল লাগিয়া আগুন লাগিয়ে দেয়। একজন পুলিশ কর্মকর্তা তার বাচ্চাকে ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে খুঁজে পায়না। এভাবে বাংলাদেশকে একটা লাশের শহর বা দেশ বানিয়ে ফেলা হয়েছিল। তখন শেখ হাসিনাকে এমন হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাওয়ার জন্য তাকে অভয় দেয়া হয়। এরা দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে নেমেছে। জনগণের কাছে এদের আর খাওয়ানো যাবে না। এদের চরিত্র ও মনোভাব সবাই বুঝে গেছে।একইদিনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পালিয়ে যায়, বাংলাদেশের চিফ জাস্টিস পালিয়ে যায়, বায়তুল মোকাররমের ইমাম পালিয়ে যায়, এখন ঢাকা বারের পিপিও পালিয়ে যায়, ৩০০ এমপি পালিয়ে যায়। এমন বাংলাদেশ তারা তৈরি করেছিল। স্বৈরাচার এরশাদ তো পালিয়ে যায় নাই কিন্তু এরা দেশ থেকে পালিয়ে চলে গেছে। এদের বিচার এদেশের মাটিতে হবে এরা এই ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত।পরে আদালত ৩ দিন রিমান্ড নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন।